আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখার প্রায় আট বছর পরও প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রমাণ করে চলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসরে নেতৃত্ব দেওয়া এই ব্যাটার দেখিয়েছেন প্রতিভার ছাপ। তবুও ঘরে-বাইরের মাঠে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ধার কমেনি।
সাধারণ সমালোচনার গণ্ডি পেরিয়ে ট্রল, বিদ্রুপ আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যক্তিগত আক্রমণের শিকার হয়েছেন শান্ত বহুবার। ব্যাট হাতে রান পেলেই প্রশংসা, আর একটু ছন্দপতন হলেই শুরু সমালোচনার ঢল। অনেক সময় মাঠের প্রতিপক্ষের চেয়ে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশের ভেতরের এই চাপ।
তবে গল টেস্টে ব্যতিক্রম এক অধ্যায় লিখেছেন শান্ত। দেশের বাইরে প্রথম বাংলাদেশি ব্যাটার হিসেবে টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরি করে গড়েছেন ইতিহাস। কিন্তু এত বড় অর্জনের পরও প্রশংসা যতটা হয়নি, প্রশ্নবাণ এসেছে আরও বেশি। ধীরগতির ইনিংস, নেতৃত্বে দুর্বলতা এসব কারণেও অভিযোগ উঠছে।
এই প্রেক্ষাপটেই শান্তকে নিয়ে অতিরিক্ত সমালোচনা বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক ও জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার। রোববার মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, ‘আশা করি পরের দু-একটা ম্যাচে যদি রান না-ও পায়, তাহলে শান্তকে নিয়ে যেন আবার কথা না ওঠে। সব সংস্করণে শান্ত আমাদের অন্যতম সেরা ব্যাটার। ওর এই ইনিংস দেখে আমি অবাক হইনি, কারণ এটা ওর সক্ষমতার মধ্যেই পড়ে।’
ট্রল ও নেতিবাচক আলোচনার কারণে শান্তর উপর যে বাড়তি চাপ তৈরি হয়, সেটাও তুলে ধরেন বাশার, ‘আমরাই ওকে চাপে ফেলি। বারবার ট্রল হয়, নেতিবাচক কথা হয়। এগুলোর প্রভাব খেলায় পড়ে। আমরা বলি এড়িয়ে যেতে, কিন্তু বাস্তবে সেটা সহজ নয়। ওর ব্যাটিংয়ে কিছুটা ঘাটতি ছিল ঠিকই, কিন্তু দারুণভাবে ফিরেছে। টেস্টে পরপর দুটি সেঞ্চুরি দুর্দান্ত অর্জন। শান্তর আরও বড় কিছু করার সামর্থ্য আছে, যদি আমরা সবাই ওর পাশে থাকি।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ বাড়ার বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে: অর্থ উপদেষ্টা
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ অনেক বেড়ে যাওয়ায় ‘আমরা উদ্বিগ্ন’। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গতকাল রোববার অর্থ মন্ত্রণালয়ে বাজেট অনুমোদন পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের অর্থ কেন বেড়েছে এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘কেন গেল, কীভাবে গেলে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে আমাদের অনেক লোকজন দেশের বাইরে রয়েছেন। তারা বাংলাদেশ অর্থ না পাঠিয়ে ওখানে রাখতে পারে। তবে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। কারণ এটি খুব চিন্তার।’
তিনি আরও বলেন, ‘২০২৪ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের পর পুরো অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ ছিল। সম্ভবত নির্বাচনের পরই ক্ষমতাশীনরা ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল যে, সময় হয়তো ঘনিয়ে আসছে। সে সময় সম্ভবত অনেকে অর্থ পাচার করেছেন। বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াসলি আলাপ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য সংস্থা এ নিয়ে কাজ করছে।’
প্রসঙ্গত, সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের নামে জমা থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে। গত বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংক (এসএনবি) বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে ২০২৪ সাল শেষে তাদের দেশের ব্যাংকগুলোর লেনদেন স্থিতির পরিসংখ্যান প্রকাশ করে।
এতে দেখা যায়, ২০২৪ সাল শেষে সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে বাংলাদেশিদের নামে জমা রয়েছে রয়েছে ৫৯ কোটি ৮২ লাখ সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ফ্রাঁ ১৫০ টাকা ধরে ) যার পরিমাণ ৮ হাজার ৯৭২ কোটি টাকা। ২০২৩ সাল শেষে ছিল মাত্র ২ কোটি ৬৪ লাখ ফ্রাঁ। এখনকার বিনিময় হার ধরলে যার পরিমাণ ৩৯৬ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নামে থাকা অর্থের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় ২৩ গুণ।
সুইস ব্যাংকে থাকা অর্থের একটি অংশ পাচার হয়ে থাকে বলে ধারণা করা হয়। তবে পাচার সম্পর্কে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় না। এমনকি গ্রাহক আমানত হিসাবে কার কত অর্থ আছে তাও জানা যায় না। সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গোপনীয়তার স্বার্থে সমস্ত ডাটা সমন্বিতভাবে প্রকাশ করে। আলাদাভাবে কোনো গ্রাহক বা ব্যাংকের তথ্য এ প্রতিবেদনে নেই।