আ.লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পাঁচ নেতা এলডিপিতে
Published: 22nd, June 2025 GMT
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের পদ ছেড়ে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিতে (এলডিপি) যোগ দিয়েছেন পাঁচজন। তাদের চারজনই সাবেক-বর্তমান জনপ্রতিনিধি। একজন দলটির কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য। তাদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে ৫ আগস্টের পর একটি মামলায় কারাবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি জামিনে ছাড়া পান তিনি। বিষয়টি নিয়ে দলটির ভেতর-বাইরে সমালোচনার ঝড় বইছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, শনিবার চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো.
ওই অনুষ্ঠানে দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, সাতকানিয়া উপজেলা সভাপতি মাহমুদুল হক চৌধুরী চেয়ারম্যান, কেঁওচিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মো. নুরুন্নবী, সাধারণ সম্পাদক মো. জসীম উদ্দীন, এলডিপি নেতা মো. সেলিম ও গণতান্ত্রিক ছাত্রদলের সাতকানিয়া উপজেলার আহ্বায়ক মো. পারভেজ উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন এলডিপির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল। দলের আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগেই এলডিপিতে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক উপকমিটির সদস্য শামসুল ইসলাম।
এ পাঁচজনের এলডিপিতে যোগদান নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন এলাকার নানা দলের কর্মী-সমর্থকরা। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একাধিক নেতাকর্মীর অভিযোগ, মনির আহমদ উত্তর সাতকানিয়া যুবলীগের নেতা থাকার সময় দলীয় কোন্দল কাজে লাগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ২০১৬ সালের ৪ জুন কেঁওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পদে জয়ী হন। তিনি নৌকার প্রার্থী একই সংগঠনের উত্তর সাতকানিয়ার সভাপতি ওচমান আলীকে পরাজিত করেন। পরে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পিএস মো. আরিফের হাত ধরে শীর্ষ নেতাদের কাছে পৌঁছে যান। বিপ্লব বড়ুয়ার ব্যক্তিগত ও দলীয় উপহারসামগ্রী বিতরণের কর্মসূচিও তিনি দেখভাল করতেন।
এ ছাড়া ইউপি সদস্য আবু তালেব সিকদার ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাতকানিয়া থানায় হওয়া মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। সম্প্রতি এতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও যান। পরে জামিনে বের হন। সাহেব মিয়া ও রোকেয়া বেগমও দলটির নানা কর্মসূচিতে সামনের সারিতে থাকতেন।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ এসব বিষয়ে ফেসবুকে লেখেন, ‘সাতকানিয়ার বড় বড় আওয়ামী লীগ নেতার শ্রেষ্ঠ আবিষ্কারগুলোর অন্য দলে যোগদানের হিড়িক চলছে।’
জামায়াতে ইসলামীর কেরানীহাট শাখার নেতা কাজী মো. ওসমান গণি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘এগুলো কারা ...? হায় রে এলডিপি! কেঁওচিয়ার আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন চলছে ...।’
এ বিষয়ে মনির আহমদের দাবি, ‘আমি আওয়ামী লীগের সমর্থক ছিলাম। কোনো পদবি ছিল না। এখন এলডিপির সমর্থক হিসেবে ফরম পূরণ করেছি।’
আবু তালেবের ভাষ্য, আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে কিছুই পাননি। তিনি মানুষের সঙ্গে কোনো অন্যায় আচরণ বা কাউকে অত্যাচার করেননি। এর পরও জেলজুলুমের শিকার হয়েছেন। এখন সদস্য ফরম পূরণ করে এলডিপিতে যোগ দিয়েছেন।
সাহেব মিয়া দাবি করেন, ‘আমাদের পরিষদের চেয়ারম্যান ওচমান আলী আওয়ামী লীগের ছিলেন। তাই ইউপি সদস্য হিসেবে বাধ্য হয়ে আওয়ামী লীগে সম্পৃক্ত হয়েছিলাম। কর্নেল অলি আহমদ বীরবিক্রম একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তাই তাঁর দলে যোগদান করেছি।’ রোকেয়া বেগম এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সভাপতি মো. এয়াকুব আলী বলেন, প্রাথমিক সদস্য পদ পূরণ করে তারা আমাদের দলে যোগ দিয়েছেন। যে কেউ এক দল থেকে অন্য দলে যাওয়ার অধিকার রাখেন। কারও বিরুদ্ধে যদি দুর্নাম বা মামলা না থাকে তারা আমাদের দলে যোগ দিতে পারবেন।
আবু তালেবের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি কেঁওচিয়া ইউনিয়নের নেতারা ভালো বলতে পারবেন। তারাই তো আমাদের কাছে নিয়ে এসেছেন। এমন অভিযোগ থাকলে তদন্তের পর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এলড প আওয় ম ল গ এলড প ত স গঠন র এলড প র আম দ র সদস য সহয গ আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
উড়োজাহাজে থাপ্পড়ের শিকার যাত্রীর খোঁজ মিলেছে, ঘটনার সময় ভয়ে কাঁপছিলেন তিনি
ভারতের বেসরকারি বিমান সংস্থা ইন্ডিগোর একটি ফ্লাইটে মাঝ আকাশে প্যানিক অ্যাটাকের (আতঙ্কিত) শিকার হওয়া সেই যাত্রী হুসেইন আহমদ মজুমদারের খোঁজ মিলেছে। তিনি ওই দিনের ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, তিনি যখন ভয় পাচ্ছিলেন, তখনই অন্য এক সহযাত্রী তাঁকে চড় মেরে বসেন।
ভারতের আসাম রাজ্যের কাছাড় জেলার বাসিন্দা ৩২ বছর বয়সী হুসেইন আহমেদ বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি মুম্বাই থেকে কলকাতা হয়ে শিলচর যেতে ইন্ডিগোর ফ্লাইটে চড়েছিলেন। মাঝ আকাশে তিনি ‘প্যানিক অ্যাটাকের’ শিকার হন। উড়োজাহাজ অবতরণের পর কেবিন ক্রুরা তাঁকে বিমান থেকে নামাতে সাহায্য করছিলেন। সেই সময় হাফিজুল রহমান নামের এক যাত্রী হঠাৎ তাঁকে চড় মারেন।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতা বিমানবন্দরে ফ্লাইট অবতরণের পর হাফিজুল রহমানকে আটক করা হয়। উড়োজাহাজের নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে অবশ্য তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
হুসেইন আহমদ বলেন, ‘আমি দিবাগত রাত ২টায় উড়োজাহাজে উঠেছিলাম। তখন খুব ভয় পাচ্ছিলাম, শরীর কাঁপছিল। তাই এক যাত্রীর পাশে গিয়ে বসি। তাঁর নাম জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, হাফিজুল রহমান। আমি বুঝতে পারি তিনি মুসলিম। তাই আমি তাঁকে সালাম দিই। তখনো আমি নার্ভাস ছিলাম। সেটা দেখেই তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাকে তিন-চারবার চড় মারেন।’
হুসেইন আরও বলেন, তিনি ওই যাত্রীর সঙ্গে কোনো অসদাচরণ করেননি।
আসামের এই বাসিন্দা আরও বলেন, ‘ঘটনা দেখে কেবিন ক্রুরা হস্তক্ষেপ করেন এবং জিজ্ঞেস করেন, কেন তিনি আমাকে চড় মারলেন। তাঁরা আমাকে পানি দেন এবং শান্ত করার চেষ্টা করেন।’
কলকাতা বিমানবন্দরে অবতরণের পর হুসেইন মজুমদার ও অভিযুক্ত হাফিজুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুনভারতে উড়োজাহাজে সহযাত্রীর থাপ্পড়ের পর খোঁজও মিলছে না যাত্রীর: পরিবারের দাবি০২ আগস্ট ২০২৫হুসেইন বলেন, পরে তাঁকে থানা থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় শিলচরের ফ্লাইটে তিনি আর উঠতে পারেননি।
হুসেইন আরও বলেন, ‘চড় খাওয়ার কারণে মাথায় ব্যথা হচ্ছে এবং সহজে উঠতে পারছি না।’
অপ্রত্যাশিত এ ঘটনার পর হুসেইনের পরিবার গত শুক্রবার তাঁর নিখোঁজ থাকার বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। এরপর গত শনিবার তাঁকে আসামের বরপেটা জেলার একটি রেলস্টেশনে পাওয়া যায়। শিলচর থেকে ওই স্টেশনের দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিলোমিটার।