শরিয়তপুরে ছাত্রলীগের তাজিমের ‘চমকপ্রদ ঘূর্ণি’
Published: 23rd, June 2025 GMT
শরীয়তপুরের নড়িয়ার ঘড়িসারে রাজনীতির মাঠে চমকপ্রদভাবে ফিরে এসেছেন তাজিম দেওয়ান। এক সময় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা এই ব্যক্তি বর্তমানে নবগঠিত শ্রমিক দলের ইউনিয়ন শাখার সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন।
তাজিমের বিরুদ্ধে অতীতে মাদক কারবারের অভিযোগ থাকায় তার এই নতুন পরিচয় উপজেলাজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের।
ছাত্রলীগের কমিটিতে থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তাজিম। তিনি বলেন, “ছাত্রলীগের যে কমিটির কথা বলা হচ্ছে, সেটি ভুয়া ও এডিট করা ছবি। আমি কখনো ছাত্রলীগের কমিটিতে ছিলাম না।” মাদক মামলার বিষয় তিনি বলেন, “আমাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন তাজিম ও তার পরিবার রাজনীতিতে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে এলাকায় প্রভাব বিস্তার, হুমকি-ধামকি ও মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন। ২০২০ সালে ডিবি পুলিশের হাতে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার হন তাজিম। এমন অতীত থাকা একজন ব্যক্তি কীভাবে বিএনপির মতো একটি রাজনৈতিক দলের সহযোগী সংগঠনের নবগঠিত ইউনিয়ন কমিটির শীর্ষ নেতৃত্বে চলে আসেন, তা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
ঘড়িসার ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনির সরকার বলেন, “তাজিমের পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল। তাজিম আমাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন।”
মাদকের বিষয় জানতে চাইলে তিনি জানান, তাজিম ও তার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা আছে। তবে সেটা কিসের মামলা সে সম্পর্কে তিনি জানেন না।
নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর বলেন, “তাজিমের চাচা ইউনিয়ন যুবলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি। তার বড় ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক। পুরো আওয়ামী লীগ পরিবারের লোক হয়ে কীভাবে তাজিম ভোল্ট পাল্টিয়ে শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক হলেন সেটা জানি না। ওরা দুই ভাই এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা ও অবৈধ ড্রেজার ব্যবসায়ী।”
নড়িয়া উপজেলার শ্রমিক দলের সভাপতি সাইফুল শিকারি বলেন, “তাজিম দেওয়ান নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তবে, তিনি মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত কি না, সেটা জানি না। যদি মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকেন তাহলে সেটা সংগঠনের পরিপন্থি।”
শরীয়তপুর জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কাইয়ুম মুন্সী চুন্নু বলেন, “তাজিম ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত না বলে জানিয়েছেন নড়িয়া উপজেলার সদস্য সচিব। মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত থাকলে ওই পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হবে।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল গ র র জন ত র জন ত র ক দল র স উপজ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয় কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মৌলভীবাজার জেলা সমন্বয় কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। নবগঠিত কমিটির কয়েকজনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে কার্যক্রম স্থগিতের কথা জেলা সমন্বয় কমিটিকে জানানো হয়েছে।
গত বুধবার এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের যৌথ স্বাক্ষরে ওই সমন্বয় কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। ৩১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী করা হয় খালেদ হাসানকে। কমিটিতে ৯ জন যুগ্ম সমন্বয়কারী ও ২১ জনকে সদস্য করা হয়। আগামী তিন মাসের জন্য বা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত এ কমিটির জেলা পর্যায়ে দলীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা ছিল।
এদিকে এনসিপির জেলা সমন্বয় কমিটি গঠনের পর কমিটির কয়েকজন সদস্যের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে। এনসিপির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকজন এ অভিযোগ তোলেন। এরপর এনসিপি সিলেট অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ মৌখিকভাবে কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত রাখতে জেলা সমন্বয় কমিটিকে নির্দেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নবগঠিত কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী খালেদ হাসান আজ শনিবার প্রথম আলোকে বলেন, এনসিপির সিলেট অঞ্চলের তত্ত্বাবধায়ক প্রীতম দাশ মৌখিকভাবে কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত রাখতে বলেছেন। স্থায়ীভাবে নয়, আপাতত কার্যক্রম বন্ধ আছে।
প্রীতম দাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। সমন্বয় কমিটির কিছু সদস্যের বিষয়ে কয়েকজন আওয়ামী লীগ-সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছেন। যদিও প্রাথমিকভাবে অভিযোগের কোনো সত্যতা মেলেনি। তাঁরা (কমিটির সদস্য) অনেকে আগে নাগরিক কমিটিতে ছিলেন, জুলাই আন্দোলনসহ সরকারবিরোধী আন্দোলন করেছেন। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে।