ফের পেছাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন৷ এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো পেছাল নির্বাচনের তারিখ। এবার জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িত ও মদদদাতা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের বিচারকার্য পূর্বনির্ধারিত রোডম্যাপ অনুযায়ী সম্পন্ন করতে না পারার কারণে নির্বাচনের তারিখ পেছানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত টানা ১০ ঘণ্টার জাকসু নির্বাচন সংক্রান্ত পরিবেশ পরিষদের এক সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড.
ঘোষিত নতুন রোডম্যাপ অনুযায়ী, আগামী ৪ আগস্টের মধ্যে জুলাই হামলায় জড়িত ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃতদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত হবে, একই দিনে জাকসুর তফসিল ঘোষিত হবে। ৩১ আগস্ট হামলায় মদদদাতা শিক্ষকদের চূড়ান্ত বিচার নিশ্চিত হবে এবং আগামী ১১ সেপ্টেম্বর জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানায় উপাচার্য।
এর আগে গত ৩১ মে’র মধ্যেই জাকসু নির্বাচন আয়োজনের কথা জানান উপাচার্য। তবে জাকসু গঠনতন্ত্র সংস্কার ও ছাত্র সংগঠনগুলোর বৈরিতার কারণে পিছিয়ে যায় নির্বাচন।
সর্বশেষ গত ৩০ এপ্রিল জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ৩১ জুলাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়৷ নির্বাচনের আগেই জুলাই অভ্যুত্থানে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের বিচারকার্য সম্পন্ন করার দাবি জানিয়ে আসছে ছাত্র সংগঠনগুলো, অন্যথায় নির্বাচন বর্জনেরও হুঁশিয়ারি দেয় একাধিক ছাত্রসংগঠন। দাবির প্রেক্ষিতে গত ২৯ জুনের মধ্যে উপাচার্য বিচারকাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি৷ এবার নতুন করে বিচারকার্য সম্পন্ন করে জাকসুর নির্বাচনী তারিখ নির্ধারণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন৷
নতুন করে নির্বাচনী তারিখ ঘোষণা করায় পূর্বে গঠিত জাকসুর নির্বাচন কমিশন অকার্যকর হয়ে গেছে। ফলে নতুন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করবে ওই কমিশন৷
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপ চ র য ব চ রক র য ব শ বব দ য উপ চ র য
এছাড়াও পড়ুন:
লালমনিরহাটে ‘মব সন্ত্রাস’ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাবা-ছেলেকে হেনস্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ
লালমনিরহাটে ‘মব’ সন্ত্রাসের মাধ্যমে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত বাবা ও ছেলেকে হেনস্তা ও পুলিশের কাছে সোপর্দ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ; আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং নারীপক্ষ। একই সঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করেছে সংগঠনগুলো। আজ মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে সংগঠনগুলো এ দাবি জানায়।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বলেছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে মব ভায়োলেন্স, সাম্প্রদায়িক উসকানির মতো ঘটনাগুলো ঘটছে এবং এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আইনের আওতায় আনার ব্যাপারে সে রকম জরুরি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে মহিলা পরিষদ। একই সঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সরকার, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে তারা।
‘মব’-এ জড়িতদের বিচার দাবি আসকের
ধর্মীয় অনুভূতি বা অবমাননার অভিযোগকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ ধরনের অভিযোগের তদন্তের স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং প্রমাণভিত্তিক বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। বিবৃতিতে আসক জানায়, অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার আগে কাউকে সামাজিকভাবে হেয় করা, নিপীড়নের মুখে ঠেলে দেওয়া বা সহিংসতার দিকে ঠেলে দেওয়া নিন্দনীয়।
‘মব’–এ জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবি করে বিবৃতিতে আসক বলেছে, এ বিচারহীনতার সংস্কৃতি সামাজিক সম্প্রীতি ও আইনের শাসনের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ক্ষুব্ধ ও হতাশ নারীপক্ষ
ধর্ম অবমাননাসহ নানা অজুহাতে দেশব্যাপী ক্রমাগতভাবে ‘মব’ সন্ত্রাস করে অত্যাচার-নির্যাতনের ঘটনায় নারীপক্ষ ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ, হতাশ ও উদ্বিগ্ন। এসব ঘটনা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ নেই উল্লেখ করে বিবৃতিতে নারীপক্ষ বলেছে, এ ধরনের প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং যাতে এ ধরনের আর একটি ঘটনাও না ঘটে, তার জন্য এখনই কঠোর ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।