দায়িত্ব পালনে অনীহা বা শৈথিল্য প্রদর্শনে বিভাগীয় ব্যবস্থা, এসিল্যান্ড পদের পদায়ন নীতিমালা জারি
Published: 6th, August 2025 GMT
সহকারী কমিশনার (ভূমি) বা এসিল্যান্ড পদের জন্য পদায়ন নীতিমালা জারি করেছে ভূমি মন্ত্রণালয়। ৪ আগস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় ‘ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) পদায়ন নীতিমালা, ২০২৫’ নামে এই পরিপত্র জারি করেছে।
নীতিমালায় বলা হয়েছে, সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কর্মকাল সাধারণত দুই বছর হবে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে প্রথম পদায়নে জেলা সদর ও রাজস্ব সার্কেলের বাইরে এই নীতিমালায় উল্লেখ করা ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির উপজেলায় পদায়ন করা যাবে।
*নিজ জেলা ও স্বামী বা স্ত্রীর জেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়ন করা যাবে না জানিয়ে নীতিমালায় বলা হয়েছে, স্বামী বা স্ত্রী সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে ন্যস্ত হলে ওই কর্মকর্তার স্ত্রী বা স্বামী প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত থাকলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে একই বিভাগে এবং সম্ভব হলে একই জেলায় পদায়ন করা যাবে।
আরও পড়ুনগণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরে ৬ বছর পর পুনর্নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, পদ ৩৩০৫ আগস্ট ২০২৫*জনসম্পৃক্ততা বিবেচনা করে সব মহানগরীর রাজস্ব সার্কেল বা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) শূন্য পদ পূরণ করতে হবে। অর্থনৈতিক অঞ্চল বা অর্থনৈতিকভাবে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ, এমন অঞ্চল বা সব উপজেলা সদর বা পৌর এলাকাভুক্ত উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদায়নে অগ্রাধিকার দিতে হবে। এ ছাড়া উপজেলা বা সার্কেলের ভূমিসংক্রান্ত কাজের পরিমাণ, ব্যাপকতা, বহুমাত্রিকতা, জনসম্পৃক্ততা, ভূমি অধিগ্রহণ ও ভূমি হুকুমদখল, সায়রাত মহালসহ রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন কাজ ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে পদায়ন/নিয়োগ/বদলির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে।
*ইউনিয়নের সংখ্যা, জনসংখ্যার অনুপাত, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার অবস্থান ইত্যাদির অনুপাতে উপজেলার পদ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করা হবে। অপেক্ষাকৃত দুর্গম, প্রাকৃতিক বা ভৌগোলিক কারণে অন্য উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন, দূরবর্তী উপজেলার জনগণের সেবা পাওয়ার বিষয় বিবেচনা করে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে একক দায়িত্ব দেওয়া অর্থাৎ নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা যাবে না বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুনপল্লী উন্নয়ন একাডেমিতে চাকরি, পদ ৫৩০২ আগস্ট ২০২৫*কর্মস্থলে বিভিন্ন রকম অনিয়ম বা অনৈতিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকা বা সরকারি দায়িত্ব পালনে অনীহা বা শৈথিল্য প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক হিসেবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
*সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদে এক বছর দায়িত্ব পালনের পর দক্ষতা, সততা, জনসেবার মানসিকতা ইত্যাদি যাচাই করে এই নীতিমালায় উল্লিখিত ‘ক’ শ্রেণির উপজেলা বা রাজস্ব সার্কেলে পদায়ন করা যাবে।
*নীতিমালায় বলা হয়েছে, কর্মস্থলে বিভিন্ন রকম অনিয়ম বা অনৈতিকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকা বা সরকারি দায়িত্ব পালনে অনীহা বা শৈথিল্য প্রদর্শন ইত্যাদি ক্ষেত্রে শাস্তিমূলক হিসেবে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
*সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে ন্যস্ত করা কর্মকর্তাদের সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করা হবে বলেও নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
*নীতিমালায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে পদায়নের ক্ষেত্রে দেশের জেলা ও উপজেলাগুলোকে অবকাঠামোগত অবস্থা, চিকিৎসা ও শিক্ষাসংক্রান্ত সুবিধা, যোগাযোগব্যবস্থা, রাজধানী/বিভাগ/জেলা শহর থেকে দূরত্ব ইত্যাদি বিবেচনায় তিনটি শ্রেণিতে (ক, খ ও গ) বিন্যস্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুনহার্ভার্ডসহ ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানের, বাবা–মা’র তিন সূত্রেই বাজিমাত৮ ঘণ্টা আগে*কোনো সহকারী কমিশনার (ভূমি) ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘ক’ ও ‘খ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন। ‘খ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘ক’ ও ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন। অন্যদিকে ‘ক’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় কর্মরত থাকলে পরবর্তী সময়ে তিনি ‘খ’ ও ‘গ’ শ্রেণির জেলা বা উপজেলায় পদায়ন পাবেন বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
*এসিল্যান্ডদের পদায়ন নীতিমালা দেখুন এখানে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবস থ ত থ কল সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে
বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।
ঢাকা/নাজমুল/রফিক