এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব, প্রশ্ন রেজাউল করিমের
Published: 6th, August 2025 GMT
এখনো ভোটের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি বলেন ‘আমাদের নির্বাচনে যাওয়া কঠিন হবে, বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রশাসন যথাযথ ফাংশন করছে না এবং বর্তমান সরকার প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। সেখানে এই অবস্থায় নির্বাচন করতে গেলে প্রার্থীদের নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে যায়, এই ঝুঁকিতে কেন নির্বাচনে যাব, সেই প্রশ্ন আপনাদের কাছে রাখলাম।’
আজ বুধবার রাজধানীর পল্টনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ এবং প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ নিয়ে দলটির অবস্থান-প্রতিক্রিয়া জানাতে এক সংবাদ সম্মেলন করে দলটি। সেখানে সৈয়দ রেজাউল করিম এ কথা বলেন।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচন না হলে, ইসলামী আন্দোলন নির্বাচন অংশগ্রহণ করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘পিআর আমাদের দাবি। এর মাধ্যমে কালোটাকার দৌরাত্ম্য কমবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হবে। কিন্তু বিএনপি এককভাবে ক্ষমতায় যেতে চায় বলে, পিআর নিয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত কথাবার্তা বলে।’
নির্বাচনের আগে জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা দলগুলোর সঙ্গে দৃশ্যমান কোনো ঐক্য হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, ‘যারা ইসলামপ্রেমী বা দেশপ্রেমী তাদের সাথে নির্বাচনী জোট বা সমঝোতা হওয়ার খুবই সম্ভাবনা রয়েছে।’
আরও পড়ুনফেব্রুয়ারিতে রোজার আগেই ভোট ২১ ঘণ্টা আগে‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ‘এই ঘোষণাপত্রের বিষয়বস্তু আমাদের আগে জানানো হয়নি। এত গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল ঘোষণার আগে আমাদের মতামত না নিয়ে উপস্থিত রেখে সমর্থন নেওয়া হয়েছে, যা ছিল আমাদের জন্য বিব্রতকর। তারপরও প্রত্যাশিত দিনে ঘোষণাপত্র পঠিত হয়েছে, এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানাই। তবে এ ঘোষণাপত্রে ১৯৭১, ১৯৭৫ এবং ১৯৯০ সালের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করা হলেও স্বাধীনতার প্রথম অধ্যায় ১৯৪৭, শাপলা চত্বরের ঘটনা, পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও আলেম-ওলামাদের ওপর নির্যাতনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এতে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বাদ পড়েছে। একই সঙ্গে ঘোষণাপত্রে ফ্যাসিবাদের দোসর রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক শক্তির কথাও উপেক্ষা করা হয়েছে, যা ভবিষ্যতে ফ্যাসিবাদের পুনর্বাসনের সুযোগ করে দিতে পারে।’
প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ প্রসঙ্গে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, ভাষণটি আবেগময় ও সুলিখিত হলেও বাস্তব সমস্যাগুলো এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সাফল্যের কথা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বাস্তবতা, জনগণের উদ্বেগ কিংবা নির্বাচনের উপযোগী পরিবেশ নিয়ে কোনো সুস্পষ্ট বার্তা নেই।
মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম আরও বলেন, ‘জুলাই সনদ এখনো আইনি ভিত্তি পায়নি। সংস্কারের রূপরেখা নির্ধারিত হয়নি। এই সংস্কারকে পরবর্তী সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়ে গোটা প্রক্রিয়াকে অনিশ্চিত করে রাখা হয়েছে। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, অধ্যাদেশ জারি বা গণভোটের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি তৈরি করতে হবে এবং ওই সনদের ভিত্তিতেই জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।’
আরও পড়ুনগণ–অভ্যুত্থানের রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হবে: প্রধান উপদেষ্টা২১ ঘণ্টা আগেপ্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে অনেক সাফল্যের কথা থাকলেও পাচারকৃত অর্থ উদ্ধারে দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই বলে মনে করেন মুফতি সৈয়দ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে কর্মসংস্থান তৈরি এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে আশাব্যঞ্জক কোনো কথা ছিল না। এসব বিষয়ে সরকারকে আরও মনোযোগী হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিম, মহাসচিব ইউনূস আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকনসহ প্রমুখ।
আরও পড়ুনজুলাই ঘোষণাপত্রে কী আছে, পড়ুন বিস্তারিত০৫ আগস্ট ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র ল কর ম সরক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
“স্যালুট টু জুলাই ওয়ারিয়র্স” শীর্ষক অনুষ্ঠানে লজিক অফ বাংলাদেশ
“ওয়ারিওরস অফ জুলাই “কর্তৃক আয়োজিত 'স্যালুট টু জুলাই ওয়ারিয়র্স' শীর্ষক অনুষ্ঠানে শৃঙ্খলা ও ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন লজিক অফ বাংলাদেশের বিশেষ প্রতিনিধি দল।
লজিক অফ বাংলাদেশের মহাপরিচালক শেখ মাশরুর পারভেজ রাফি এর নেতৃত্বে অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করে প্রতিনিধি দলটি। গত শনিবার (২ আগস্ট) বাংলাদেশ সচিবালয় সংলগ্ন ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টার প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস. মুরশিদ।
এছাড়াও অনুষ্ঠানটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির মুখ্য সংগঠক (উত্তর অঞ্চল) সারজিস আলম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুণীজনদের মধ্যে ছিলেন জুলাই আন্দোলনে সাহসিকতার সাথে নেতৃত্ব প্রদানকারী শিক্ষক জনাব আসিফ মাহাতাব, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা।
অনুষ্ঠানটিতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা: তাসনিম জারা, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং শিক্ষক আসিফ মাহাতাব লজিক অফ বাংলাদেশের প্রতিনিধিবৃন্দদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এবং সেইসাথে লজিক অফ বাংলাদেশের কার্যক্রম প্রসঙ্গে ভূয়সি প্রশংসা ব্যক্ত করেন।
এছাড়াও জনপ্রিয় ব্যান্ড আভাসের শিল্পী তানজীর তুহিন শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান করেন এবং আগামীর পথচলার জন্য শুভকামনা ব্যাক্ত করেন।