মসজিদের টাকা আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক টিপন মিয়াকে (৫০) কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৬ আগস্ট) উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে, গত সোমবার টিপন মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।

বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ৬ নম্বর সিংধা ইউনিয়ন শাখার দায়িত্বশীল পদে আসীন থেকে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগের ভিত্তিতে আপনার বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, এই মর্মে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর নিকট উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হলো।’’

আরো পড়ুন:

বিজয় মিছিলে পলাতক আসামি, খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ

ঐক্যবদ্ধ থাকুন, মুখ দেখাদেখি যেন বন্ধ না হয়: তারেক

অভিযুক্ত টিপন মিয়া একই ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মাঝপাড়া এলাকার মৃত হাজী আব্দুল করিমের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পরে টিপন মিয়া প্রভাব খাটিয়ে মল্লিকপুর মাঝপাড়া জামে মসজিদের সভাপতি হন। পরে তিনি মসজিদের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করেন।

এ বিষয়ে মল্লিকপুর মাঝপাড়া মসজিদ কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘‘মসজিদের বড় একটি পুকুর রয়েছে। যেটা তিন লাখ টাকায় লিজ দেওয়া হতো। টিপন সভাপতি হয়ে পুকুরটি নিজে লিজ নেন। তবে, টাকা পয়সা কিছুই দেননি। এছাড়া, দান-অনুদানের টাকার কোনো হিসেব নেই।’’

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল বলেন, ‘‘টিপন মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অন্যের জমি দখল, মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, নদীর টাকা আত্মসাতসহ একাধিক অভিযোগ পেয়েছি। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) দেওয়া হয়েছে। শোকজের জবাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে টিপন মিয়ার মোবাইলে ব্যবহৃত নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা/ইবাদ/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ মসজ দ র ট ক ব এনপ র স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের খায়রুল বাশার আবার তিন দিন রিমান্ডে

প্রতারণার আরেকটি মামলায় ‘বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক’–এর চেয়ারম্যান খায়রুল বাশারের আবার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত আজ বুধবার এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে বুধবার বিকেলে খায়রুল বাশারকে আদালতে হাজির করে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে গুলশান থানা-পুলিশ। আবেদনে বলা হয়, উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশ পাঠানোর নামে বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান খায়রুল বাশার ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে আর কারা কারা জড়িত রয়েছেন, তা জানার জন্য বাশারকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

আসামিপক্ষ থেকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন নাকচ চাওয়া হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত খায়রুল বাশারকে তিন দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।

গত ১৫ জুলাই মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় খায়রুল বাশারকে ১০ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এর আগের দিন রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে বাশারকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ৪ মে গুলশান থানায় সিআইডি মামলাটি করে।

বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বাশারের বিরুদ্ধে।

সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, সংস্থাটির প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত খায়রুল বাশার তাঁর স্ত্রী খন্দকার সেলিমা রওশন ও ছেলে আরশ ইবনে বাশারকে সঙ্গে নিয়ে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। চক্রটি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ, স্কলারশিপ ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণের নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। ভুয়া ভিসা প্রসেসিং, মনগড়া প্রতিনিধিত্ব ও চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করা হতো। কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অনেকের নামে বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনই করা হয়নি। আবার অনেকে বিদেশে গিয়ে নানাভাবে প্রতারিত হয়েছেন।

সিআইডির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৪৪৮ জন ভুক্তভোগী প্রতারিত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন ভুক্তভোগী প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে বিভিন্ন থানায় মামলা করেছেন।

সিআইডি জানায়, গ্রেপ্তার খায়রুল বাশার ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা অর্থ বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে জমা রাখতেন এবং সেখান থেকে অর্থ উত্তোলন করে স্থাবর সম্পদ ক্রয়, ব্যবসা পরিচালনা ও অবৈধভাবে অর্থ স্থানান্তর করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ