চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে কয়েক ঘণ্টার ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি আশ্রয়ণ প্রকল্পের শতাধিক ঘরবাড়ি কোমরপানিতে ডুবে গেছে। ফলে শিশু, বৃদ্ধসহ হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। গবাদিপশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

সীতাকুণ্ড আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টার আগেই মাত্র তিন ঘণ্টায় ১২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। গতকাল বুধবার ভোর ছয়টা থেকে ২৪ ঘণ্টায় মোট বৃষ্টি হয়েছে ২০৮ মিলিমিটার। ২৪ ঘণ্টায় ৮৮ মিলিমিটার বেশি বৃষ্টি হলেই অতি ভারী বর্ষণ হিসেবে ধরা হয়।

জানতে চাইলে সীতাকুণ্ড আবহাওয়া কার্যালয়ে আবহাওয়াবিদ মো.

হাসানুজ্জামান আজ সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, এখন বিরতি দিয়ে বৃষ্টি হচ্ছে। বিকেলের দিকে বৃষ্টি বাড়তে পারে। লাগাতার অতি ভারী বর্ষণ হলে পাহাড়ধসের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এখন লাগাতার অতি ভারী বর্ষণ হচ্ছে না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার ভাটিয়ারী ইউনিয়নের পাহাড়ঘেরা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি। গতকাল রাত থেকেই ওই এলাকায় পানি ঢুকতে শুরু করে। এতে অনেক বাসিন্দা ঘরেই আটকা পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লুর রহমান বলেন, ‘রাত আড়াইটার দিকে বৃষ্টির শব্দে ঘুম ভাঙে। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পানি আমাদের ঘরে ঢুকে পড়ে। সকাল হতেই দেখি, ঘরের ভেতরে কোমরপানি। এর পর থেকে বের হতে পারছি না। রান্না করারও উপায় নেই। আশপাশে দোকানপাটও নেই।’

আশ্রয়ণ প্রকল্প ছাড়াও উপজেলার কুমিরা, সৈয়দপুর, বারৈয়ারঢালা, মুরাদপুর এবং পৌর এলাকার বেশ কিছু জায়গা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি থাকায় যান চলাচলও বন্ধ রয়েছে অনেক সড়কে। প্রবল স্রোতের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারাও ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এ কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

ছুটি ঘোষণা করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি কুমিরা ইউনিয়নের মছজিদ্দা মডার্ন কিন্ডারগার্টেন অ্যান্ড হাইস্কুল। বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সদস্য সন্তোষ চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যালয়ের সামনের সড়কে হাঁটুপানি। আবার স্রোতও প্রবল। শিশুদের বিদ্যালয়ে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে।

সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফখরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সরকারি বাসভবনের নিচতলা পানিতে ডুবে গেছে। উপজেলা পরিষদ চত্বরেও হাঁটুপানি। ভাটিয়ারীর আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ যেসব জায়গায় পানি উঠেছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে আনা অথবা শুকনা খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা নিতে লোক পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জকসু নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার দাবি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের সময় এগিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে জাতীয় ছাত্রশক্তি ও ছাত্র অধিকার পরিষদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ে গঠিত ‘ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান’ মঞ্চের নেতারা।

বুধবার নির্বাচন কমিশনার জকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তাঁরা।

এই তফসিলের নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে এ তফসিল বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২২ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

দাবির পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান মঞ্চের নেতারা বলেন, পরীক্ষা শেষ হলে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে থাকে না। অন্যদিকে একটি ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঈদেও বাড়ি যায় না, তাঁদের ছুটি থাকে না। ছাত্রশিবিরকে সুবিধা দিতেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পিছিয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা।

এ সময় ঐক্যবদ্ধ জবিয়ান মঞ্চ আরও দুটি দাবি জানায়। দাবিগুলো হলো সব ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় কোনো রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপ না থাকার নিশ্চয়তা দিতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ