জলাবদ্ধ ভবদহে রাস্তার ওপর গরু-ছাগলের সঙ্গে থাকছে মানুষ
Published: 8th, August 2025 GMT
রাস্তার ওপর পলিথিনে ছাওয়া টং ঘর। ভিতরে গরু-ছাগলের পাশে ঘুমানোর ব্যবস্থা। এক চৌকিতে থাকছে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে। রাস্তার ওপরই মাটির চুলায় হয় রান্না।
সম্প্রতি যশোরের অভয়নগর উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের একটি রাস্তায় এ চিত্র দেখা গেছে। জলাবদ্ধতার ৩০ দিন পার হলেও পানি না কমায় জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়।
দুর্গত লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যশোরের অভয়নগর, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি। অনেক এলাকায় রাস্তা পানির নিচে চলে গেছে। তাদের চলাচলের মাধ্যম এখন শুধু নৌকা।
অভয়নগর উপজেলার ভবানিপুর গ্রামের ভবদহ নামক স্থানে শ্রী নদীর ওপর ২১ ভেন্ট, ৯ ভেন্ট ও ৬ ভেন্টের স্লুইসগেট পাকিস্তান আমলে সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল। সময়ের ব্যবধানে তা এখন বিশাল জনপদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পানিবন্দি মানুষগুলো ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে আন্দোলন করছেন। সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক রণজিত বাওয়ালী বলেছেন, “আমরা কি জলজ প্রাণী! দ্রুত জলাবদ্ধতার সমাধান না হলে কৃষক-শ্রমিকদের নিয়ে রাজপথে অবস্থান নেব। সাপ-ব্যাঙের সাথে আমাদের বসবাস। সরকার ও আমলারা মিলে আমাদের জলজ প্রাণী বানিয়ে রাখছে। আমরা জলজ প্রাণী হয়ে বাঁচতে চাই না।”
পানি উন্নয়ন বোর্ডের যশোর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি জানিয়েছেন, নদীতে জোয়ারের সময় ভবদহ স্লুইসগেটের ২১ ভেন্টের ওপর চারটি বড় ও ১৫টি ছোট বৈদ্যুতিক যন্ত্র দিয়ে পানি সেচে বের করে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, ভাটির সময় ছয়টি গেট খুলে দেওয়া হচ্ছে। গেটগুলো দিয়ে প্রচুর পানি বের হচ্ছে। পানি দ্রুত সরে যাবে।
তিনি জানান, ভবদহ এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য আগামী মাসে সেনাবাহিনী ছয়টি নদীর ৮১ দশমিক ৫ কিলোমিটার খনন শুরু করবে। আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দুই-এক মাসের মধ্যে আমডাঙ্গা খাল সংস্কারের কাজ শুরু হবে।
ঢাকা/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের যেকোনো আদালতের মানদণ্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে: চিফ প্রসিকিউটর
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের যে সাজা দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলে একই শাস্তি পাবেন।
আজ সোমবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ এই আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো আদালতের স্ট্যান্ডার্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে এবং পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আজ যেসব আসামিকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই একই শাস্তি প্রাপ্ত হবেন।’
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সব আন্তর্জাতিক নর্মস, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে ক্রাইমস এগেন্স হিউম্যানিটির মতো কমপ্লেক্স (মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো জটিল) অপরাধের বিচার করতে সক্ষম এবং বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে সেটা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধী যতই ক্ষমতাশালী হোক, সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে যত বড় অপরাধীই হোক, তার অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে এবং তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে।’
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এই রায়ের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি হয়েছে। যদিও আরও অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার, যাদের ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পূরণ হবে না, তাদের সামনে অন্তত একটা ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’