নবম–দশম শ্রেণির পাঠ্যসূচি থেকে ‘জৈব বিবর্তন’ তত্ত্ব বাদ দিতে আইনি নোটিশ
Published: 17th, August 2025 GMT
মাধ্যমিক পর্যায়ের পাঠ্যসূচি থেকে ‘জৈব বিবর্তন’ (ডারউইনের মতবাদ) তত্ত্ব বাদ দিতে অনুরোধ জানিয়ে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ঢাকার খিলক্ষেতের বাসিন্দা ও দুই শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. আরিফের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সারোয়ার হোসেন আজ রোববার রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই নোটিশ পাঠান।
শিক্ষা উপদেষ্টা, শিক্ষাসচিব এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান বরাবর এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী বছর থেকে নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান বইয়ে ‘জৈব বিবর্তন’ তত্ত্ব বাদ দিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে নোটিশে।
নোটিশে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রমে নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষায় ‘জৈব বিবর্তন’ শিক্ষাক্রমের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বইয়ের বিজ্ঞান অধ্যায়ে ‘পৃথিবীতে জীবনের উৎপত্তি ও বিকাশ’ এবং জীববিজ্ঞান অধ্যায়ে ‘জীবের বংশগতি ও জৈব অভিব্যক্তি’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। শিক্ষাক্রমে বিষয়টি অন্তর্ভুক্তি নিয়ে বহু বিতর্ক, তর্ক ও মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এ নিয়ে জাতীয় সংসদেও বিতর্ক হয়েছিল।
পরে আইনজীবী সারোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে কেমব্রিজ শিক্ষাক্রমে ‘ও’ লেভেল পর্যন্ত বিবর্তনবাদ তত্ত্ব পড়ানো হয় না। তুরস্ক, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরব ও ওমানসহ অনেক দেশের মাধ্যমিক পর্যায়েও পড়ানো হয় না। ২০২৬ সালের নবম ও দশম শ্রেণির বিজ্ঞান ও জীববিজ্ঞান বইয়ের পাঠ্যসূচি থেকে ‘জৈব বিবর্তনবাদ’ তত্ত্ব তথা ডারউইনের মতবাদ বাদ দিতে অনুরোধ জানিয়ে ওই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নবম ও দশম শ র ণ র তত ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
জামিনের পর মামলা নিয়ে মেহজাবীনের বিবৃতি
ব্যবসায় অংশীদার করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২৭ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ করা ও হত্যার হুমকি দেওয়ার’ অভিযোগের মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী ও তার ভাই আলিসান চৌধুরী।
রবিবার (১৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক আফরোজা তানিয়া শুনানি শেষে তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন মেহজাবীন চৌধুরীর আইনজীবী তুহিন হাওলাদার।
আরো পড়ুন:
আত্মসমর্পণ করে জামিন পেলেন মেহজাবীন চৌধুরী
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রসঙ্গে যা বললেন মেহজাবীন
সোমবার (১৭ নভেম্বর) সকালে মেহজাবীন চৌধুরী তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তাতে এ মামলার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছেন এই অভিনেত্রী।
মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “একজন অজানা ব্যক্তি ২০২৫ সালের মার্চ মাসে আমার ও আমার ১৯ বছর বয়সি ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। গত নয় মাসে আমি এই মামলার কোনো তথ্য পাইনি, কারণ অভিযোগকারী পুলিশকে আমার সঠিক ফোন নম্বর, সঠিক ঠিকানা বা কোনো যাচাইকৃত তথ্য দিতে পারেননি। তিনি দাবি করেন যে, ২০১৬ সাল থেকে তিনি আমার সাথে ‘ব্যবসা’ করছিলেন।”
মেহজাবীন চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযোগকারী। এ বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তবে যোগাযোগের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, ‘তিনি ২০১৬ সাল থেকে আমাকে ফেসবুকে মেসেজ দিতেন। কিন্তু তিনি যা দেখাতে পারেননি।’ একটি মেসেজ যেটা তিনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন মেসেজের, হোয়াটসঅ্যাপ বা আমার নম্বরে, কিংবা আমার পক্ষ থেকে একটি উত্তর, এমনকি একটি স্ক্রিনশটও না।”
অভিযোগকারীর পরিচয় অসম্পূর্ণ। এ তথ্য উল্লেখ করে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “তার পরিচয় অসম্পূর্ণ। তার সম্পূর্ণ পরিচয়পত্র এখনো জমা দেয়া হয়নি। তার এনআইডি পর্যন্ত অনুপস্থিত। অভিযোগকারী ও তার আইনজীবী ফোন বন্ধ করে রেখেছেন। গতকাল খবর প্রকাশ হওয়ার পর থেকে অভিযোগকারী তার ফোন বন্ধ করে রেখেছেন, এমনকি তার আইনজীবীর নম্বরও বন্ধ।”
আর্থিক লেনদেনের কোনো নেই। মেহাজাবীনের ভাষায়, “আর্থিক লেনদেনের কোনো প্রমাণ নেই। তিনি দাবি করেন যে, তিনি আমাকে ২৭ লক্ষ টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি দেখাতে পারেননি—কোনো ব্যাংক লেনদেন, কোনো চেক, বিকাশ লেনদেন, কোনো লিখিত চুক্তি, কোনো রশিদ, কোনো সাক্ষী, কিছুই না। একটি কাগজপত্রও নেই।”
অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “১১ ফেব্রুয়ারির ঘটনাটি সম্পূর্ণ প্রমাণহীন। তিনি দাবি করেন ১১ ফেব্রুয়ারি আমি তাকে চোখ বেঁধে হাতিরঝিলের একটি রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিলাম, আমার ছোট ভাইসহ আরো ৪–৫ জনকে নিয়ে। গত নয় মাসে তিনি দেখাতে পারেননি রেস্টুরেন্ট বা আশেপাশের রাস্তার এক সেকেন্ডেরও সিসিটিভি ফুটেজ, কোনো সাক্ষী, কোনো প্রমাণ, কিছুই না। হাতিরঝিল ঢাকার সবচেয়ে বেশি সিসিটিভি-নিয়ন্ত্রিত এলাকা, তবু তিনি একটি ছবি বা ভিডিও ফুটেজ দেখাতে পারেননি।”
মামলা হওয়ার পর ৯ মাস কেটে গেলেও কোনো নোটিশ পাননি মেহজাবীন চৌধুরী। এ তথ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত নয় মাসে আমি কোনো নোটিশ পাইনি। এই নয় মাসে আমি কোনো পুলিশ স্টেশনের ফোন কল, কোনো কোর্টের নোটিশ বা ডকুমেন্ট। একটি নোটিশ পেলেও আমি অনেক আগে থেকেই আইনি ব্যবস্থা নিতাম।”
আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার কারণে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়েছেন মেহজাবীন। তার ভাষায়, “আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এই মামলার কোনো ভিত্তি না থাকলেও, যখন জানতে পারলাম যে একটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট জারি হয়েছে, তখন আমি আইনি প্রক্রিয়া মেনে জামিন নিয়েছি। কারণ আমি আমাদের আইন ও নিয়ম মানি। প্রমাণ ছাড়া দায়ের করা মামলা কখনো সত্য হয়ে যায় না। সত্য খুব দ্রুতই আদালতে পরিষ্কার হয়ে যাবে। এখনকার দিনে কাউকে অপমান করা, মানহানি করা বা ভাইরাল হওয়ার জন্য অন্যকে ব্যবহার করা খুবই সহজ হয়ে গেছে। এই ব্যক্তির যে উদ্দেশ্যই থাকুক, আমার বা আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করে, সে যা-ই করতে চায়—আমি বিশ্বাস করি সবকিছু খুব দ্রুতই পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
অনুরোধ জানিয়ে মেহজাবীন চৌধুরী বলেন, “এর আগ পর্যন্ত আমি সবাইকে অনুরোধ করব—দয়া করে সহানুভূতিশীল হোন, দয়া করে মানবিক হোন এবং কাউকে না জেনে কোনো মিডিয়া ট্রায়াল শুরু করবেন না। গত ১৫ বছর ধরে আমি আমার কাজ, আমার পেশা এবং আমার দর্শকদের জন্য যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং নিষ্ঠা দিয়ে এসেছি, সেই পরিশ্রমের পরেও আজ আমাকে এসব ব্যাখ্যা করতে হচ্ছে—এটাই সবচেয়ে দুঃখজনক।”
ঢাকা/শান্ত