বালু তোলা বন্ধ, প্রাণ ফিরছে ফেনী নদীর
Published: 18th, November 2025 GMT
নদীর বিশাল পাড়জুড়ে বিকট শব্দ তুলে দিনরাত চলত খননযন্ত্র। পাড়ের জমি ও তলদেশ কেটে তুলে আনা হতো বালু। বালু পরিবহনের জন্য বড় বড় বাল্কহেডের চলাচলে ব্যস্ত থাকত নদীপথ। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ভাঙন দেখা দিয়েছিল। অবৈধ বালু উত্তোলনে এবড়োখেবড়ো হয়ে পড়েছিল নদীর দুই পাড়। কোথাও কোথাও ভাঙনে বিলীন হয়েছে কৃষকের ফসলি জমি। অতিরিক্ত বালু উত্তোলনে নদীর ঘোলা পানিতে হুমকিতে পড়েছিল অনেক প্রজাতির মাছ। প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল জলজ পাখিদের আনাগোনা।
চট্টগ্রামের মিরসরাই অংশে ফেনী নদীর এমন চেহারা ছিল সাত মাস আগেও। তবে এখন সে দৃশ্য বদলে গেছে। বালু উত্তোলন না হওয়ায় বন্ধ হয়েছে বাল্কহেডের চলাচল। ফিরতে শুরু করেছে নানা প্রজাতির মাছ আর পাখি। নদীর দুই তীরে ভাঙনও বন্ধ হয়েছে। সবুজে ঘেরা দুই তীর আর মাঝ দিয়ে বয়ে চলা নদীর এই চেহারা বহুদিন পর দেখলেন স্থানীয় কৃষক, জেলে ও দুই পারের বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে আবারও আগের রূপ ফিরে পাচ্ছে ফেনী নদী। সরকারিভাবে এবার বালুমহাল ইজারা না দেওয়ায় এখন নদীতে বন্ধ আছে সব ধরনের বালু উত্তোলন। এতেই অনেকটা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠেছে সীমান্তবর্তী এই নদী।
মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা আর নদীকে অক্ষত রাখতে বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসন চলতি সনে এ নদীতে বালুমহাল ইজারা দেওয়া বন্ধ করেছে। এর পর থেকে নদীটি সব দিক দিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।সোমাইয়া আক্তার,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, মিরসরাই।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, বাংলা সনের চৈত্র-বৈশাখ মাসে বালুমহালের ইজারা দেওয়া হয়। এবার ইজারা না দেওয়ায় চৈত্র-বৈশাখ অর্থাৎ এপ্রিল মাসের পর থেকে চলতি নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে বালু তোলা বন্ধ আছে। একইভাবে ভাঙন রোধে এবার নদীর ফেনী অংশেও বালু তোলা বন্ধ রাখা হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে উৎপন্ন হওয়া ফেনী নদী বাংলাদেশের ফেনী, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ভাটিতে চট্টগ্রামের মিরসরাই ও ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলার পাশ ঘেঁষে বঙ্গোপসাগরের সন্দীপ চ্যানেলে পড়েছে। ১৫৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ১৫৯ মিটার প্রশস্ত ফেনী নদী হরেক রকম মাছের প্রজনন ক্ষেত্র। এ ছাড়া বর্ষায় পানি নিষ্কাশন ও সারা বছর কৃষিকাজে পানির জোগান দেয় এই নদী।
ফেনী নদী। সম্প্রতি চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা অংশ থেকে তোলা.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম রসর ই
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরপথে মানবপাচারকারী চক্রের ৪ নারী সদস্য আটক
কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং এলাকায় অভিযান চালিয়ে সাগরপথে মানবপাচারে জড়িত চক্রের চার নারী সদস্যকে আটক করেছে বিজিবি। তাদের কবল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে শিশুসহ আটজনকে। বিজিবি জানায়, উদ্ধার হওয়া সবাই রোহিঙ্গা। তারা কক্সবাজারের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাস করতেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) মধ্যরাতে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান।
আরো পড়ুন:
ঢাকাসহ ৪ জেলায় বিজিবি মোতায়েন
মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১২ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ
আটককৃতরা হলেন- টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের পানছড়ি পাড়ার মৃত আফাজ উদ্দিনের স্ত্রী সাহারা খাতুন (৬২), তার মেয়ে জুহুরা (৪৩) ও আসমা (১৯) এবং একই এলাকার আব্দুল মোতালেবের মেয়ে শাবনূর (২০)।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান জানান, সোমবার ভোরে পানছড়ি এলাকার জনৈক আব্দুল মোতালেবের বসতঘরে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের জন্য কয়েকজন মানুষকে জড়ো করা হয়েছে এমন খবর পায় বিজিবি। পরে একটি বিশেষ দল সেখানে অভিযান চালায়। বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন পাচারকারী পালিয়ে গেলেও ওই ঘর থেকে চার নারী পাচারকারীকে আটক করা হয়। আটজন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে দুইজন শিশু ও ছয়জন নারী।
আটক চার নারী পাচারকারীর বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে টেকনাফ থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান বিজিবির এই কর্মকর্তা।
ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ