Prothomalo:
2025-09-20@08:06:56 GMT

কারাম উৎসবে প্রাণের উচ্ছ্বাস

Published: 20th, September 2025 GMT

গোধূলির আলো তখন প্রায় ফুরিয়ে এসেছে। আবছা আলোয় দেখা যাচ্ছে পুঁতে রাখা কারামগাছের ডাল। এর চারপাশে ভিড় জমিয়েছেন নারী-পুরুষ ও শিশুরা। কিশোরীরা দূর্বাঘাস ও ফুল দিয়ে কারাম ডালগুলো সাজাচ্ছে। নারীদের কেউ কেউ উপোস ভেঙে সেজেগুজে এসেছেন। সবার চোখেই উচ্ছ্বাস। বাঁশি, মাদল ও ঢোলের তালে শুরু হলো নাচ–গান। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নাচে-গানে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ল চারপাশে।

ওঁরাও সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব উপলক্ষে আনন্দের এমন আবহ তৈরি হয়েছিল শেরপুর কোঠাডাঙ্গা গ্রামে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার প্রত্যন্ত এই গ্রামের বাসিন্দারা জানালেন, ৪০ বছর পর দুই বছর ধরে সেখানে আবার উৎসবটি হচ্ছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেন মূলত গ্রামটির নারীরা। বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিনব্যাপী উৎসবকে ঘিরে গ্রামজুড়ে ছিল সাজসাজ রব।

বুধবার সন্ধ্যায় আখড়ায় কারামগাছের ডাল পুঁতে পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এরপর রাতভর চলে নাচ-গান। পরদিন বিকেলে আখড়ায় (বড় খোলা উঠান) পুঁতে রাখা কারাম ডাল তোলা হয়। এরপর মাদল-বাঁশি ও ঢোলের তালে তালে তালে নেচে-গেয়ে গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঘুরিয়ে পুকুরে বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী উৎসব। তবে এরপরও ছিল উৎসবের রেশ। সেদিনও গভীর রাত পর্যন্ত নারী-পুরুষ ও শিশুরা গান ও নাচে অংশ নেয়।

ষষ্ঠ শ্রেণির তিন কিশোরী স্নান শেষে ভেজা কাপড়ে ধানগাছ, দূর্বাঘাস, ফুল ও সুতা দিয়ে কারাম ডাল সাজায় বুধবার সন্ধ্যায়। আগের রাত থেকে তারা নির্জলা উপোস ছিল। অন্যদিকে তিন কিশোর দূরের গ্রাম থেকে খিলকদমের ডাল কেটে নিয়ে আসে। তারাও উপোস করেছিল। নতুন ধুতি পরে তারা ডাল নিয়ে এলে কিশোরীরা ফুল ছিটিয়ে বরণ করে। এরপর নারীদের সঙ্গে নেচেগেয়ে আখড়ায় তিনটি ডাল পাশাপাশি পুঁতে দেওয়া হয়।

গ্রামের মোড়ল ভোলা খালকো (৭৮) আখড়ায় বসে নারী-পুরুষ ও শিশুদের করম দেবতা ও পূজার সূচনার কাহিনি শোনান। এরপরই শুরু হয় নাচ-গান, যা চলে সারা রাত। ষাটোর্ধ্ব বিসরি এক্কা বললেন, আখড়ায় নাচতে গিয়েছিলেন। কিন্তু জামাইকে দেখে লজ্জায় শেষ পর্যন্ত অন্যদের সঙ্গে নাচে অংশ নেননি। সবাইকে আনন্দ করতে আর নাচতে–গাইতে দেখে খুব ভালো লেগেছে জানিয়ে বলেন, ‘সামনের বচ্চরে আর শরম করব না।’

গ্রামের প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একসময় কারাম ছিল ওঁরাওদের অন্যতম একটি উৎসব। কিন্তু খরচ ও আগ্রহের অভাবে প্রায় চার দশক আগে এটি বন্ধ হয়ে যায়। মিনতি বাকলা নামে গ্রামটির চল্লিশোর্ধ্ব এক গৃহবধূ দুই বছর আগে আবারও এ উৎসব আয়োজনের উদ্যোগ নেন। মিনতি বাকলা বললেন, কারাম ছিল তাঁদের সবচেয়ে আনন্দের উৎসব। উৎসবটি হারিয়ে যেতে বসেছিল। ঐতিহ্য ধরে রাখতে উদ্যোগ নেন তিনি।

নেচে-গেয়ে কারাম ডাল বিসর্জন দিতে যাচ্ছেন গ্রামের মেয়েরা.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আখড় য়

এছাড়াও পড়ুন:

কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব

বায়ার্ন মিউনিখ ৩–১ চেলসি

২০১২ সালে আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ইতিহাস গড়েছিল চেলসি। ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে টাইব্রেকারে হারিয়ে প্রথমবারের মতো পরেছিল ইউরোপসেরার মুকুট।

 তবে এরপর থেকে বায়ার্নের সঙ্গে মুখোমুখি সব ম্যাচেই হেরেছে চেলসি। লন্ডনের ক্লাবটি পারল না আজও। হ্যারি কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে ৩–১ ব্যবধানে হারিয়েছে বায়ার্ন।

আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ম্যাচের ২০ মিনিটে বায়ার্ন প্রথম গোলটা পেয়েছে উপহারসূচক। চেলসির সেন্টার–ব্যাক ট্রেভোহ চালোবাহ নিজেদের জালে বল জড়ালে এগিয়ে যায় বাভারিয়ানরা।

কিছুক্ষণ পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কেইন। এবার ভুল করে বসেন চেলসির মইসেস কাইসেদো। নিজেদের বক্সে কেইনকে কাইসেদো অযথা ট্যাকল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি।

নতুন মৌসুমে গোলের পর গোল করেই চলেছেন হ্যারি কেইন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিজ্ঞানকে জয়ের সংকল্পে বরিশালে চলছে বিজ্ঞান উৎসব
  • নানা আয়োজনে দিনভর উৎসবের আমেজ
  • নাচ গান আনন্দে ৪০ বছর পর গোমস্তাপুরে ফিরল ওঁরাওদের কারাম উৎসব
  • একটি বিশেষ সিনেমা, আপনার মাকে সঙ্গে নিয়ে আসুন...
  • তিন বছর পর ‘ফেরেশতে’
  • চৌধুরীবাড়ী ব্যবসায়ী এসোসিয়েশন নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ঠাকুরগাঁওয়ে ঐতিহ্যবাহী কারাম উৎসব অনুষ্ঠিত
  • উৎসব ঘুরে প্রেক্ষাগৃহে ‘বাড়ির নাম শাহানা’
  • কেইনের জোড়া গোলে চেলসিকে হারাল বায়ার্ন, চ্যাম্পিয়ন পিএসজির গোল উৎসব