রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলনে শিক্ষকদের হেনস্তার শিকার হওয়ার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। তাদের অভিযোগ, শিক্ষকেরা একটি ছাত্রসংগঠনের গুপ্ত নেতা–কর্মীদের দ্বারা এই ন্যক্কারজনক হামলা ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন। এ হামলার ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।

আজ শনিবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলেছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন।

আরও পড়ুনসহ-উপাচার্যকে আটকে বিক্ষোভ, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের হাতাহাতি৪ ঘণ্টা আগে

আজ বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জুবেরী ভবনে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিপ্রক্রিয়ায় পোষ্য কোটা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাব্যবস্থায় ন্যায্যতা ও সমতা নিশ্চিতকরণের পথে একটি বড় বাধা হয়ে আছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই কোটা পুনর্বহালের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও চিন্তাভাবনার সম্পূর্ণ বিপরীত। এর মাধ্যমে নিতান্তই বঞ্চনা ও বৈষম্য তৈরি হবে। ভর্তিপ্রক্রিয়ায় মেধাই হওয়া উচিত একমাত্র মানদণ্ড। তবে যেকোনো প্রতিবাদের ভাষাই গঠনমূলক ও শান্তিপূর্ণ হওয়া বাঞ্ছনীয়।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা অবিলম্বে বাতিল এবং শিক্ষকদের ওপর হামলার দ্রুত বিচার দাবি করেছেন ছাত্রদলের দুই শীর্ষ নেতা। বিজ্ঞপ্তিতে তাঁরা বলেছেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকেরা একটি ছাত্রসংগঠনের গুপ্ত নেতা–কর্মীদের দ্বারা আজ যে ন্যক্কারজনক হামলা ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন, এটা রীতিমতো অভূতপূর্ব। আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের গায়ে এভাবে হাত তোলা ও হামলার বিষয়টি কোনোক্রমেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা মনে করি, আজকের এই হামলার ঘটনাটি রাকসু নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার একটি পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র ছ ত রদল র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে এক শিক্ষার্থী

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এক শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন। আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে তিনি মাথা ও শরীরে কাফনের কাপড় জড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন।

ওই শিক্ষার্থীর নাম আসাদুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অনশনের সময় তাঁর পেছনে রাখা ব্যানারে লেখা ছিল—‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা নামক বিষফোঁড়া পুনর্বহাল রাখার প্রতিবাদে আমরণ অনশন ধর্মঘট’।

আসাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পোষ্য কোটা নামক বিষফোঁড়া মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এটাকে নির্মূল করার জন্যই আমার এ কর্মসূচি। জুলাই আন্দোলনে যে কোটার বিরুদ্ধে এত রক্তপাত, এত মৃত্যু, স্বৈরশাসকের পতন হলো, সেই কোটা আবার ফিরেছে। আমি কোটার পক্ষে নই। যদি কোটা দেওয়া হয়, সেটা কৃষক-শ্রমিক-মজুরের সন্তানদের দেওয়া হোক। এই কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমার অনশন চলবে। আমি কোনো খাবার-পানি খাব না। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কেউ আসেনি। রাতে এখানেই অবস্থান করব।’

গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১০টি শর্তে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। উপাচার্যের দায়িত্বে থাকা সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনের সভাপতিত্বে সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত ভর্তি উপকমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে রাত আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। খবর পেয়ে শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রতিবাদ শুরু করেন। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ চলে। আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পরও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, পোষ্য কোটা একটি মীমাংসিত ইস্যু। এটি অন্যায্য ও অযৌক্তিক একটি কোটা। তাঁরা প্রয়োজনে রক্ত দেবেন, তবু ক্যাম্পাসে এ কোটা ফিরতে দেবেন না। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন ঘিরে যখন ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তখন এ সিদ্ধান্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না বলে তাঁরা জানান।

কোটা পুনর্বহালের বিষয়ে শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সালেহ্ হাসান নকীব সাংবাদিকদের বলেন, শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত ২১ সেপ্টেম্বরের রাকসু নির্বাচনে শাটডাউন কর্মসূচির প্রভাব পড়ার শঙ্কা ছিল। এ জন্য একাডেমিক কাউন্সিলের ভর্তি উপকমিটি এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা যা চান, সেটাই হবে। কারণ, তাঁরা শান্তিপূর্ণ একটি বিশ্ববিদ্যালয় চান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: মির্জা ফখরুল
  • হাসিনা ভারতে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে: নিপুণ রায়
  • পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে কাফনের কাপড় জড়িয়ে আমরণ অনশনে এক শিক্ষার্থী
  • জামায়াতে ইসলামী সরকারি দল হবে, বিএনপিকে বিরোধী দলে যেতে হবে
  • পোষ্য কোটা ফেরানোর প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
  • শেখ হাসিনা ভারতে বসে আবারও ষড়যন্ত্র করছে: দুদু
  • পোষ্য কোটা ফিরিয়ে আনাকে রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র বলছেন প্রার্থীরা
  • নওগাঁয় পুলিশের পোশাক ও অস্ত্রসহ চারজন গ্রেপ্তার