কাশবনে নারীর লাশ: ‘খুনি’ ঋণগ্রস্ত স্বামী, বলছে পুলিশ
Published: 21st, September 2025 GMT
রাজধানীর উত্তরা এলাকা থেকে দুই দিন আগে এক নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনার ‘রহস্য উদঘাটনের’ দাবি করে পুলিশ।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপকমিশনার মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, “ঋণগ্রস্ত হয়ে পারিবারিক কলহের জেরে ‘পরিকল্পনা করে’ ওই নারীকে হত্যা করেন তার স্বামী।”
আরো পড়ুন:
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম নারী আম্পায়ার জেসি
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে নারীকে ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে: ইউটিএল
গত বৃহস্পতিবার সকালে তুরাগ থানাধীন রাজউকের ১৭ নম্বর সেক্টরের খেলার মাঠে কাশবন থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অজ্ঞাতনামা লাশটি শনাক্ত করতে ডিএমপির থানাসহ আশেপাশের জেলার থানাগুলোতে ছবিসহ তথ্য পাঠানো হয়।
পরে ক্যন্টনমেন্ট থানা থেকে জানানো হয়, সেখানে এমন একটি জিডি রয়েছে। মনোয়ারা বেগম নামের এক নারী তার মেয়ে বিথী আক্তার বিলকিসের (৩৫) নিখোঁজ হওয়ার তথ্য দিয়ে গত সোমবার ওই জিডি করেন।
পরে মনোয়ারা বেগম তুরাগ থানায় গিয়ে বিলকিসের লাশ শনাক্ত করেন। মনোয়ারার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
এর ধারাবাহিকতায় শনিবার বিলকিসের স্বামী মো.
রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “গত রবিবার সন্ধ্যায় মানিকদি এলাকার ভাড়া বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বিলকিস। এমন সময় অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে ফোন করে তাকে ডেকে নেন তার স্বামী বাবুল।”
তিনি বলেন, “সে সময় বিলকিসের মা মনোয়ারা ছিলেন ওই বাসায়। বিলকিস বের হওয়ার সময় তার মাকে জানান, তার স্বামী ব্যাংকের চেকবই, এনআইডি আর ছবি নিয়ে তাকে ইসিবি চত্বর এলাকায় যেতে বলেছেন। সুদে টাকা ধার নিতে ওইসব নথি লাগবে।”
“কিন্তু বাসা থেকে বের হওয়ার পর বিলকিসের সঙ্গে আর যোগাযোগ করতে পারেননি তার মা। কোথাও মেয়ের খোঁজ না পেয়ে পরদিন তিনি থানায় জিডি করেন।”
গ্রেপ্তার হওয়া দুজন। ছবি: পুলিশ
পুলিশ কর্মকর্তা মহিদুল বলেন, “ভিকটিমের মায়ের কাছ থেকে তথ্যের ভিত্তিতে আমরা শনিবার বাবুলকে থানায় এনে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদ করি। প্রথমেই বাবুল মিথ্যা তথ্য দিতে থাকে পুলিশকে। সে দাবি করে, ঘটনার দিন সে মানিকদি ছিল, কিন্তু আমরা তার এবং বিলকিসের ফোন লোকেশন উত্তরা এলাকায় পাই।”
“এরপর ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে বাবুল তার তিন সহযোগী মিলে স্ত্রীকে হত্যা করেছে বলে স্বীকার করে এবং এই পরিকল্পনা দুই-তিনমাস আগে থেকেই সে করছিল বলে পুলিশকে জানায়।”
পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মিরপুরের কালাপানি এলাকা থেকে সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে মহিদুল ইসলাম বলেন, “সম্রাট বিলকিসের পা চেপে ধরেছিল, আর বাবুল তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। সে সময় আরো দুজন ঘটনাস্থলে ছিল।”
“তাদের নাম-পরিচয় পেয়েছি, কিন্তু তদন্তের স্বার্থে বাকি দুই জনের নাম প্রকাশ করছি না। আশা করছি বাকি দুই জনকে দ্রুতই গ্রেপ্তার করতে পারব।”
বাবুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে উপকমিশনার মহিদুল বলেন, “তাদের মধ্যে দীর্ঘ ছয় বছর ধরে ব্যাপক পারিবারিক কলহ চলছিল। এর কারণ সে ও তার স্ত্রী প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিল। প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা সুদ দিতে হত। ওয়ার্কশপে মেকানিক হিসেবে কাজ করে বাবুল ৩১-৩২ হাজার টাকা বেতন পান। প্রতি মাসে সুদের টাকা দিতে গিয়ে তাকে হিমশিম খেতে হত।”
“সুদের টাকার জন্য প্রায়ই পাওনাদাররা বাসায় যেত, এ নিয়ে বিলকিস তার স্বামীকে বকাবকি করত। যা থেকে দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। বাবুলের সন্দেহ ছিল, তার স্ত্রী টাকা নিয়ে তার ভাই-মাকে দিয়েছে। তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরমে পৌঁছালে ২-৩ মাস আগে বাবুল পরিকল্পনা করে স্ত্রীকে মেরে ফেলবে। সে থেকেই সঙ্গীদের নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনায় বাবুল।”
সম্রাট পুলিশকে বলেছেন, ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পাওয়ার প্রতিশ্রুতিতে তিনি এ হত্যকাণ্ডে জড়ান।
বাবুল মাদকাসক্ত বলেও তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তবে অতীতে তার কোনো অপরাধের রেকর্ড নেই পুলিশের খাতায়।
ঢাকা/এমআর/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব লক স র মন য় র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি প্রার্থীর জনসংযোগে খুন/কর্মীদের ভিড়ে মিশে ঘাড়ে পিস্তল ঠেকিয়ে করা হয় গুলি
চট্টগ্রামে নগরে সন্ধ্যায় জনসংযোগ চলছিল বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা–কর্মীরা।
এ ঘটনা ঘটে আজ বুধবার নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায়। সেখানে তখন নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম–৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ।
এ ঘটনায় এরশাদ উল্লাহসহ পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। তাঁদের মধ্যে মারা যান জনসংযোগের বহরে থাকা ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন। বাকিরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, এরশাদ উল্লাহ শঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তাঁর পেটে ছররা গুলি লাগে।
গুলিতে নিহত সরোয়ার হোসেন