সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর লুটের মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দেওয়ার ঘটনায় জেলা বিএনপি থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ (শোকজ) পাওয়া উপজেলা বিএনপির শীর্ষ দুই নেতা লিখিত জবাব দিয়েছেন। জবাবে তাঁরা বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

আজ রোববার সন্ধ্যায় জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ওই দুই নেতার লিখিত জবাব পাওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুই নেতা লিখিতভাবে নোটিশের জবাব দিয়েছেন। তাঁদের জবাব সাংগঠনিকভাবে পর্যালোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এর আগে গত বুধবার সকালে জেলা বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মন্নান ও সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরের কাছে পাঠানো হয়। তাঁরা ১৫ সেপ্টেম্বর উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্র থেকে পদ স্থগিত হওয়া সাহাব উদ্দিনের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নিঃশর্ত মুক্তি চান। বিবৃতিতে তাঁরা দাবি করেন, সাহাব উদ্দিনকে সাদাপাথর লুটের মামলায় মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় এবং মিথ্যা অভিযোগে তাঁর পদ স্থগিত করা হয়েছে।

কারণ দর্শানোর নোটিশে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর কাছে সশরীর উপস্থিত হয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।

নোটিশে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিএনপির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের সব দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকাবস্থায় তাঁর পক্ষে আপনারা গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদান করেছেন, যা সরাসরি বিএনপির নীতি, আদর্শ ও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের পরিপন্থী এবং দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের শামিল।’

এদিকে আবদুল মন্নান ও আলী আকবর পৃথকভাবে নোটিশের লিখিত জবাব দেন। তবে তাঁরা প্রায় একই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁরা লিখিত জবাবে জানিয়েছেন, বিবৃতি প্রকাশের দিন তাঁরা পারিবারিক কাজে ঢাকায় ফকিরাপুল এলাকায় আবাসিক হোটেল নিউ স্টার্নের ৫০৯ নম্বর কক্ষে অবস্থান করছিলেন। পদ স্থগিত হওয়া সভাপতি সাহাব উদ্দিনের পক্ষে গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিতে তাঁরা কোনো স্বাক্ষর করেননি। উভয়েই তাঁদের ওপর আনা অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন।

তবে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর গত মঙ্গলবার প্রথম আলোর কাছে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছিলেন। ওই দিন তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা মাঠে আছি। আমরা তাঁকে (সাহাব উদ্দিন) ভালোভাবে চিনি। তিনি কোনো লুটপাটে ছিলেন না। বরং লুটপাটের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে আমরা মিছিল, মানববন্ধন করেছি। এ তথ্য আমরা মৌখিকভাবে জেলা বিএনপিকেও জানিয়েছি।’ উল্লেখ্য, আলী আকবর বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের চাচাতো ভাই।

এর আগে ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৯)। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। গত ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপি চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ দলীয় নীতি ও আদর্শবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁর পদ স্থগিত করে।

সাহাব উদ্দিনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

সাদাপাথর লুটের মামলায় গ্রেপ্তার পদ স্থগিত হওয়া বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক ধ্রুব জ্যোতি পাল আজ রোববার দুপুরে এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রতন শেখ।

আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ সেপ্টেম্বর সাহাব উদ্দিনকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে পুলিশ। আজ শুনানি শেষে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স হ ব উদ দ ন র ব এনপ র স উপজ ল প রথম আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পোশাককর্মীর এক মোবাইল ফোন উদ্ধারে গিয়ে ১৪৮টি জব্দ

চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক পোশাককর্মীর চুরি যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে গিয়ে ১৪৮টি মোবাইল ফোন জব্দ করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (পশ্চিম জোন)। এ সময় দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরাও জব্দ করা হয়েছে। আটক করা হয়েছে মোবাইল চুরি ও বিক্রয় সিন্ডিকেটের তিন সদস্যকে। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের দামপাড়ায় মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন সিএমপি ডিবি বন্দর জোনের উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিক। চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালী থানার পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন ও চৈতন্য গলি এলাকা থেকে এই বিপুল সংখ্যক মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত ২৪ আগস্ট ভোরে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানাধীন জাহাঙ্গীর কলোনির টিনশেড বাসা থেকে পোশাক শ্রমিক আকবর হোসেনের ভিভো ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল ফোন কে বা কারা চুরি করে নিয়ে যায়। অসহায় এই শ্রমিক প্রায় ২০ দিন পর তার মোবাইল ফোন উদ্ধারে গোয়েন্দা পুলিশ পশ্চিম জোনের শরণাপন্ন হন। 

অভিযোগ পেয়ে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে ডিবি পশ্চিম জোনের এসআই মো. ইমাম হোসেনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে উপ-কমিশনার মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিকের দিকনির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক ধীমান মজুমদারের তত্ত্বাবধানে এসআই মো. ইমাম হোসেনের নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে নগরের কোতোয়ালী থানার পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় পোশাককর্মী আকবরের চুরি যাওয়া মোবাইল ফোনসহ ৪৮টি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় সোহেল মিয়া (৩৩) নামের মোবাইল চোর চক্রের এক সদস্যকে। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কোতোয়ালী থানাধীন স্টেশন রোড ও চৈতন্য গলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের দুই সদস্য আবদুল হাকিম (২৭) ও মো. ইয়াছিনকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি আইফোন ও দুটি ডিএসএলআর ক্যামেরা। 

আটক ব্যক্তিরা দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

জব্দ করা মোবাইল ফোনগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় প্রকৃত মালিকদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার আবু বক্কর সিদ্দিক।

ঢাকা/রেজাউল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পোশাককর্মীর এক মোবাইল ফোন উদ্ধারে গিয়ে ১৪৮টি জব্দ