ভেঙে ভেঙে পড়ছে ছাদ, ঝুঁকি নিয়েই চলছে পাঠদান
Published: 1st, October 2025 GMT
ছাদের পোলেস্তারা কখনো ভেঙে ভেঙে পড়ছে ফ্লোরে, কখনো শিক্ষার্থীদের মাথার উপরে। যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। এ শঙ্কা নিয়েই ক্লাস করছেন শিক্ষার্থীরা।
এমন বেহাল দশা চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের খাদেরগাঁও ইউনিয়নের ৩৪ নম্বর ভানুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। একাধিকবার আবেদনের পরও কোনো ধরনের উদ্যোগ না নেওয়ায় চরম হতাশায় বছরের পর বছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠদান চালাচ্ছেন শিক্ষকরা।
আরো পড়ুন:
নদীভাঙনে ঝুঁকিতে পাটুরিয়া ঘাট, বসতবাড়ি
ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে রাজপুর প্রধান ডাকঘরের কার্যক্রম
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়ের ভবনটা পুরনো। বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। আবার কিছু কিছু জায়গা খসে পড়ছে। প্রায়ই পাঠদানের সময় পলেস্তারাসহ ছাদের ঢালাই খসে পড়ে। প্রতিদিনই আতঙ্কে থাকে শিক্ষার্থীরা। জানালা, দরজাও ভেঙে গেছে প্রায়। স্কুল মাঠে পানি যেন মাছ চাষের উপযোগী।
পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মারজান, ইসরাত, তানহাসহ অন্যরা জানায়, তাদের বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির অনেক শিক্ষার্থী আগেও ব্যথা পেয়েছে। ক্লাসের দরজা, জানালা, দেয়ালসহ বিভিন্ন অংশ ভাঙা এবং বেশকিছু জায়গায় ফাটল রয়েছে। স্কুলে একটা নতুন ভবন নির্মাণ হলে তারা নির্ভয়ে ক্লাস করতে পারতো। এখন ক্লাসে আসলেই ভয়ে ভয়ে থাকতে হয়, তাদের মাথায় যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে ছাদ।
বাংলা শিক্ষিকা হোসনেয়ারা বলেন, “আমরা যখন শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করি, তখন আমরাই থাকি আতঙ্কে। কোন সময় জানি ছাদ ভেঙে পড়ে। বিদ্যালয়টি জরাজীর্ণ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আসতে চায় না। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে দুঃশ্চিন্তায় থাকেন। আমরাও বিদ্যালয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে থাকি। সরকারের কাছে দাবি, আমাদের বিদ্যালয়ে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হোক।”
অভিভাবক আমেনা বেগম, মহসিন হোসেন বলেন, বাচ্চারা ভয়ে যেতে চায় না স্কুলে। স্কুলের ছাদ ভেঙে প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা। স্কুলের সবগুলো ক্লাসরুমই ঝুঁকিপূর্ণ। বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। বিদ্যালয়টি দ্রুত মেরামত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাচ্ছি।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা বেগম বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। পাঠদানের কোনো পরিবেশ নেই। দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে, ভেঙে পড়ছে দেয়াল। বৃষ্টি হলে পানি পড়ে শিক্ষার্থীদের উপর। স্কুলের মাঠ ভরাট না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই মাঠে পানি জমে যায়। স্কুলে ক্লাস চালানোর পরিবেশ নেই। ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলে অভিভাবকরা তাদের বাচ্চাদের পাঠাতে চায় না।”
তিনি বলেন, “দরজা-জানালাগুলোও ভেঙে গেছে। তারপরও ঠিকমতো পাঠদান চালিয়ে যেতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। বিদ্যালয়টি সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট অফিসে জানানো হয়েছে। দ্রুত ভবন মেরামত ও নতুন একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।”
এ বিষয়ে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিবুর রহমান বলেন, “ভানুরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের ভবনের জন্য আবেদন করা আছে। বরাদ্ধ পেলেই ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভবন ন র ম ণ ব দ য লয়ট র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের যেকোনো আদালতের মানদণ্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে: চিফ প্রসিকিউটর
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের যে সাজা দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলে একই শাস্তি পাবেন।
আজ সোমবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ এই আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো আদালতের স্ট্যান্ডার্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে এবং পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আজ যেসব আসামিকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই একই শাস্তি প্রাপ্ত হবেন।’
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সব আন্তর্জাতিক নর্মস, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে ক্রাইমস এগেন্স হিউম্যানিটির মতো কমপ্লেক্স (মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো জটিল) অপরাধের বিচার করতে সক্ষম এবং বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে সেটা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধী যতই ক্ষমতাশালী হোক, সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে যত বড় অপরাধীই হোক, তার অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে এবং তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে।’
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এই রায়ের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি হয়েছে। যদিও আরও অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার, যাদের ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পূরণ হবে না, তাদের সামনে অন্তত একটা ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’