বিশ্ব–ইতিহাসের প্রথম হাসপাতাল মুসলিম সভ্যতায়
Published: 4th, October 2025 GMT
সুস্বাস্থ্য মানবজীবনের অমূল্য সম্পদ। সুস্থ দেহ ও মনের অভাবে মানুষ ব্যক্তিগত, সামাজিক কিংবা ধর্মীয় দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনে ব্যর্থ হয়। তাই প্রাচীনকাল থেকে চিকিৎসা মানবজীবনের অপরিহার্য মৌলিক চাহিদা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়ে আসছে।
যুগে যুগে মানুষ রোগবালাই থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য নানাবিধ উপায়ে চেষ্টা করেছে। আর সুসংগঠিত হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা চিকিৎসাসেবার মান-উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে।
মুসলিম শাসনকালে বিশ্ব–ইতিহাসের প্রথম সুসংগঠিত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। ৭০৭ খ্রিষ্টাব্দে উমাইয়া খলিফা ওয়ালিদ ইবনু আবদুল মালিক হাসপাতালকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। তিনি সেখানে চিকিৎসক নিয়োগ দেন, তাঁদের বেতন নির্ধারণ করেন, কুষ্ঠরোগী ও অন্ধদের জন্য বিশেষ সেবা চালু করেন এবং রোগীদের ভরণপোষণের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেন। (কিসসাতু উলুমিত তিব্বিয়্যাহ ফিল হাযারাতিল ইসলামিয়্যাহ, রাগিব সারজানি, পৃষ্ঠা : ৭৭)
মুসলিম সভ্যতার স্বর্ণযুগে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ব্যাপকভাবে উন্নতি লাভ করে এবং মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে অগণিত হাসপাতাল গড়ে ওঠে। কিছু হাসপাতাল ছিল বিশেষায়িত আর কিছু ছিল সব ধরনের রোগের চিকিৎসার জন্য উন্মুক্ত।
মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। সে সময় কারাগারের বন্দিদেরও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করা হতো না। এসব হাসপাতালকে তখন বলা হতো বিমারিস্তান।বাগদাদ থেকে শুরু করে মাগরিব-আন্দালুস (মরক্কো, তিউনিসিয়া, স্পেন) পর্যন্ত, মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। সে সময় কারাগারের বন্দিদেরও চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করা হতো না। এসব হাসপাতালকে তখন বলা হতো বিমারিস্তান।
মুসলিম সভ্যতায় বিমারিস্তান মূলত দুই ধরনের হতো। প্রথমত, ভ্রাম্যমাণ বিমারিস্তান। এগুলো মূলত তাঁবু বা অস্থায়ী স্থাপনার মতো হতো। পরিস্থিতি, প্রয়োজন ও রোগের প্রাদুর্ভাব অনুসারে এগুলো রোগীদের চিকিৎসার জন্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থানান্তরিত হতো।
প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসামগ্রী, ওষুধপথ্য, খাদ্যদ্রব্য, পানীয়, পোশাক এবং প্রধান চিকিৎসক, সহকারী চিকিৎসক, ওষুধ প্রস্তুতকারী ইত্যাদিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ‘মেডিকেল টিম’ দিয়ে ভ্রাম্যমাণ বিমারিস্তানগুলোকে সজ্জিত করা হতো।
এসব ভ্রাম্যমাণ হাসপাতালের কাজ ছিল অনেকটা আধুনিক যুগের মেডিকেল ক্যাম্পের মতো, যারা দুর্গম সব এলাকার মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করত।
আরও পড়ুনমুসলিম বিশ্বে জ্ঞানচর্চার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার উপায়২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫১৫ শতকে স্পেনের গ্র্যানাডায় নির্মিত ‘নাসরিদ বিমারিস্তান’র একটি স্কেচ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক
ইসরায়েল ও হামাস বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার কায়রোতে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নিহত ৬৯ হাজার ছাড়াল ০৯ নভেম্বর ২০২৫এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে।
হামাসের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাসনে থাকা হামাস নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বন্ধ এবং এসব ঘটনা নথিবদ্ধ করতে একটি ‘স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া’ ঠিক করার আহ্বান জানান।
হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণের রাফাহ অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলোয় অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করতে মিসরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এসব যোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস যোদ্ধারা১৭ নভেম্বর ২০২৫চলতি মাসের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকা পড়া হামাস যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমাধান খুঁজছেন মধ্যস্থতাকারীরা।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের এক যোদ্ধা গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার পর গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের পাঁচ জ্যেষ্ঠ সদস্যকে হত্যা করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।
গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হামাসের এক স্থানীয় কমান্ডারও ছিলেন।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় দেড় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ইসরায়েলের১২ নভেম্বর ২০২৫