ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামের নদ–নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ভারতের দিক থেকে কালজানি নদী হয়ে ভেসে আসছে হাজারো গাছের গুঁড়ি। ধারণা করা হচ্ছে, উজানের বনাঞ্চল থেকে পানির তীব্র স্রোতে গাছের এসব গুঁড়ি ভেসে এসেছে। এর মধ্যে কাটা গাছ ছাড়াও শিকড়সহ উপড়ে আসা বড় বড় গাছও রয়েছে।

রোববার বিকেল থেকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের ঢলডাঙা ও শালঝোড় এলাকায় নদীর তীরবর্তী মানুষ নানা উপায়ে এসব গাছ তীরে তুলছেন। অনেকেই মুঠোফোনে এ দৃশ্য ভিডিও ধারণ করছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কালজানি নদীতে খড়কুটাসহ বিপুল সংখ্যক গাছের গুঁড়ি ভেসে আসছে। অনেকে নৌকা নিয়ে সেসব গাছের গুঁড়ি তীরে তুলছেন।

শিলখুড়ী এলাকার বাসিন্দা আল আমিন জানান, বিকেলে গাছের গুঁড়ি ভেসে আসতে দেখে প্রথমে অনেকেই নৌকা নিয়ে সেসব সংগ্রহ করতে শুরু করে। পরে কয়েকজন এসব আবর্জনা ও খড়কুটোতে সাপ দেখেছে। পরে কেউ আর সাহস করে এসব গাছের গুঁড়ি ধরতে যায়নি।

আবু সাইদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, বেলা তিনটার দিকে গাছগুলো ভেসে আসা শুরু করে। যে যেভাবে পারছে গাছ তুলছে।

স্থানীয় বাসিন্দা নুর ইসলাম বলেন, নদীর পানিতে যত দূর চোখ যায়, শুধু গাছ আর গাছ। মাঝেমধ্যে মরা গরুও ভেসে আসছে। মনে হচ্ছে এক অদ্ভুত ঘটনা।

শিলখুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী বলেন, গাছগুলোর উৎস নিশ্চিত না হলেও ভারতের দিক থেকেই আসছে, এটা নিশ্চিত।

নদী গবেষক ও রিভারাইন পিপল–এর পরিচালক তুহিন ওয়াদুদ প্রথম আলোকে বলেন, ভুটানের জয়গা এলাকা হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হাসিমারা বনাঞ্চল দিয়ে কালজানি নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বৃষ্টির পানিতে ওই সব বনাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় সেখান থেকে গুঁড়িগুলো ভেসে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে হামাসের শীর্ষ প্রতিনিধিদলের বৈঠক

ইসরায়েল ও হামাস বারবার একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলছে। এমন পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও গাজার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে হামাসের শীর্ষ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার কায়রোতে মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে মধ্যস্থতার দায়িত্ব পালন করছে মিসর, কাতার ও যুক্তরাষ্ট্র। তারা গত মাসে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির মধ্যেই গাজায় নিহত ৬৯ হাজার ছাড়াল ০৯ নভেম্বর ২০২৫

এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, তারা মিসরের গোয়েন্দাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠকে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বারবার চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করায় এটি হুমকির মুখে পড়েছে।

হামাসের ওই প্রতিনিধিদলে ছিলেন নির্বাসনে থাকা হামাস নেতা খলিল আল-হায়া। তিনি মধ্যস্থতাকারীদের তত্ত্বাবধানে চুক্তির শর্ত লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো বন্ধ এবং এসব ঘটনা নথিবদ্ধ করতে একটি ‘স্পষ্ট ও নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া’ ঠিক করার আহ্বান জানান।

হামাস আরও জানায়, গাজার দক্ষিণের রাফাহ অঞ্চলের সুড়ঙ্গগুলোয় অবস্থানরত হামাস যোদ্ধাদের বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান খুঁজে বের করতে মিসরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এসব যোদ্ধার সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির এক মাস পরও গাজার সুড়ঙ্গগুলোয় কেন আটকে আছেন হামাস যোদ্ধারা১৭ নভেম্বর ২০২৫

চলতি মাসের শুরুতে রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছিল, গাজার ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিভিন্ন সুড়ঙ্গে আটকা পড়া হামাস যোদ্ধাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে সমাধান খুঁজছেন মধ্যস্থতাকারীরা।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, হামাসের এক যোদ্ধা গাজায় ইসরায়েল-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় প্রবেশ করে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর হামলার চেষ্টার পর গত শনিবার ইসরায়েলি বাহিনী হামাসের পাঁচ জ্যেষ্ঠ সদস্যকে হত্যা করেছে।

গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় কমপক্ষে ২০ জন নিহত হয়েছেন।

গতকাল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানায়, শনিবারের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে হামাসের এক স্থানীয় কমান্ডারও ছিলেন।

আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি শুরুর পর গাজায় দেড় হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস ইসরায়েলের১২ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ