নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার মনসুরপুর গ্রামে রুমান মিয়া নামের এক খামারির পাতা ফাঁদে বিপন্ন প্রজাতির একটি গন্ধগোকুল আটকা পড়ে। পরে বন বিভাগের কর্মীরা প্রাণীটিকে উদ্ধার করে অক্ষত অবস্থায় বনে অবমুক্ত করেন।

বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আজ মঙ্গলবার ভোরে স্থানীয় একটি বনে প্রাণীটি অবমুক্ত করা হয়। এর আগে গতকাল সোমবার ভোরে রুমান মিয়ার হাঁসের খামারের পাশে লোহার ফাঁদে গন্ধগোকুলটি ধরা পড়ে।

এলাকাবাসী ও খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে রুমান মিয়ার খামারে রাতে হাঁস খাওয়ার ঘটনা ঘটছিল। পরে তিনি বাজার থেকে একটি লোহার খাঁচা এনে ফাঁদ তৈরি করেন। গত রোববার রাতে ফাঁদে একটি হাঁস রেখে খামারের পাশে সেটি রাখা হয়। পরদিন ভোরে প্রতিবেশী এক ব্যক্তি ফাঁদে বড়সড় একটি প্রাণী আটকা দেখতে পান।

রুমান মিয়া বলেন, ‘হয়তো গভীর রাতে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে লোহার খাঁচায় আটকা পড়েছে প্রাণীটি। বড় বিড়াল আকৃতির প্রাণীটি দেখে প্রথমে ভয় পেয়ে যাই। এলাকাবাসী প্রাণীটি মেরে ফেলতে চাইছিল, কিন্তু আমি তাতে বাধা দিই।’ পরে বন বিভাগের লোকজন এসে প্রাণীটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।

স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী রুকনুজ্জামান বলেন, গন্ধগোকুলটি আকারে বেশ বড়। শরীরের দাগ দেখে স্থানীয় লোকজন একে বাগডাশ বলে। নিশাচর প্রাণী হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে, রাতে খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে এটি ফাঁদে আটকে যায়। অক্ষত অবস্থায় প্রাণীটি উদ্ধার করা হয়েছে।

নেত্রকোনার বন্য প্রাণী গবেষক অধ্যাপক মো.

নুরুল বাসেত বলেন, এ অঞ্চলে একসময় প্রচুর গন্ধগোকুল পাওয়া গেলেও বর্তমানে তা চোখে পড়ে না। গন্ধগোকুল শত্রু দেখলে একধরনের কাঁদানে গ্যাস স্প্রে করে, যা আত্মরক্ষার উপায় হিসেবে কাজ করে। এরা দেখতে পোষা বিড়ালের মতোই—খাটো পা, লম্বা লেজ ও বাদামি রঙের শরীর। লেজে সাতটি চওড়া কালো বলয় থাকে, গলার নিচে দুটি কালো টান এবং পিঠে মেরুদণ্ড বরাবর ছয়টি লম্বা বাদামি রেখা আছে। নিরীহ স্বভাবের এই প্রাণীকে গন্ধগোকুল, ছোট বাগডাশ, ছোট খাটাশ, গন্ধগুলা, হাইলটালা ইত্যাদি নামে ডাকা হয়। লেজসহ এর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯০ সেন্টিমিটার, উচ্চতা ২২ সেন্টিমিটার এবং ওজন ২-৩ কেজি। আয়ুষ্কাল প্রায় ১৫ বছর। এরা ঝোপঝাড়, বাগান ও ঘরের ছাদে বাসা বাঁধে। ধানখেতের ইঁদুর, গেছো ইঁদুর, কাঠবিড়ালি, পাখি, ডিম, ব্যাঙ, শামুক ও ফল খায়। তাল-খেজুরের রস এদের প্রিয় খাদ্য। বছরে অন্তত দুবার ছানা দেয়।

অধ্যাপক মো. নুরুল বাসেত জানান, গন্ধগোকুল একটি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। ২০০৮ সালে ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার (আইইউসিএন) প্রাণীটিকে ‘বিপন্ন’ তালিকাভুক্ত করে। বাংলাদেশে ২০১২ সালের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তফসিল-১ অনুযায়ীও এটি সংরক্ষিত প্রাণী। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই প্রজাতি পাওয়া যায়।

নেত্রকোনার বন বিভাগের সহকারী বনসংরক্ষক এ এফ জি মোস্তফা বলেন, ‘গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা লোক পাঠিয়ে প্রাণীটি উদ্ধার করি। গন্ধগোকুলটি সুস্থ থাকায় মঙ্গলবার ভোরে সেটিকে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র ন ত রক ন অবম ক ত ক ত কর

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান

ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে শাহ ফাতেউল্লাহ কনভেনশন হলে অনুষ্ঠানে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। 

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সিনিয়র সহ-সভাপতি  মো. মোরশেদ সারোয়ার সোহেল।   

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবু জাফর, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি'র পরিচালক আহমদুর রহমান তনু।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মো. মোরশেদ সারোয়ার সোহেল বলেন, সাংবাদিকতার পেশাগত মানোন্নয়ন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সামাজিক দায়িত্ব পালনে রিপোর্টার্স ক্লাবের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি আরও বলেন, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব দীর্ঘদিন ধরে সমাজের বিভিন্ন স্তরের সমস্যাগুলো তুলে ধরে ইতিবাচক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, আমি আশা করি ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করবে এবং সমাজ থেকে অসঙ্গতিগুলো দূর করতে সচেষ্ট হবে।  

মো. এ এইচ আশু ও আনোয়ার হোসেন সজিবের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম সেলিম, ইউনাইটেড ক্লাব লিমিটেডের সভাপতি আলহাজ্ব তোফাজ্জল হোসেন তাপু, এ বি এফ নীটওয়্যার লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আক্তারুল কবির সজল, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নুরুল ইসলাম নুরু, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুর রহিম, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোহাম্মদ মাসুম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আবু ইসহাক, মাসদাইর প্রগতি সংঘের সাধারণ সম্পাদক হাজী জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, আলীগঞ্জ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাজী নুরুল ইসলাম মেম্বার, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান উম্মে তাহেরা আখিঁ, ফতুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার কাজী মঈনুদ্দিন, ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম লিটন। 

অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি সেলিম মুন্সি, ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ, দাপা আদর্শ স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অপূর্ব কুমার সাহা, দৈনিক যুগান্তরের ফতুল্লা প্রতিনিধি আল-আমীন প্রধান, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারন সম্পাদক মো. সোহেল আহম্মদ, চেঞ্জ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সদস্য তালুকদার আবদুল্লাহ আল-ফারুক রিংকু, দৃঢ় বন্ধনের পঙ্কজ দাস, মাউন্ট ভিউ স্কুলের পরিচালক মোস্তাক আহমেদ, সমাজকর্মী খালেদ মোশারফ, সাংবাদিক কামাল হোসেন, জাহাঙ্গির হোসেন, ফাহমিদা এ্যমি, জুয়েল, মোখলেসুর রহমান তোতা, আব্দুল গাফফার লিটন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে ৫ জন সাংবাদিককে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।        

ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের সম্মাননা হিসেবে তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন ক্লাবের নেতৃবৃন্দ।

এসময় ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এ শামীম ও প্রতিষ্ঠাতা সাধারন সম্পাদক মৃত মো. শাহীন চৌধুরীর পরিবারের সদস্যের হাতে সম্মাননা স্বারক তুলে দেওয়া হয়। 

ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি মো. মনির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মো. মনির হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফজলুল হক পলাশ, সহ-সভাপতি মো. আশরাফুল হক আশু, যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলাম সুজন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেন সজীব, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আবু সাঈদ, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সরকার, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন মৃধা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. জুয়েল চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য রণজিৎ মোদক, সদস্য আজমীর ইসলাম, আমির হোসেন মোল্লা, সেলিম হোসেন। 

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ৩১ অক্টোবর ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি নিয়ে ফতুল্লা থানাধীন ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।''
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সম্মাননা প্রদান
  • বাগেরহাটে সাংবাদিক হায়াত উদ্দিনের দাফন