তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশি তরুণেরা যেখানে বিদেশে পাড়ি জমান ভালো চাকরির আশায়, সেখানে ময়মনসিংহের আফিফুর রহমান বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পাস করে দেশের বাইরে নয়, ফিরে গেছেন নিজ উপজেলায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ষোলহাসিয়া গ্রামে। প্রযুক্তির জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিয়ে গড়ে তুলছেন ভবিষ্যতের ডিজিটাল নাগরিকদের।

মানবসম্পদ গড়ার কারিগর

আফিফুর রহমান, বর্তমানে একজন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। ২০১৭ সালে প্রথম ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তাঁর বন্ধুর কোচিং সেন্টারের একটি কক্ষে শুরু করেন টিউশনি। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লে তিনি আলাদা একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পড়ানো শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রাম ও কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রামের আওতায় পড়ানো হয় উচ্চমাধ্যমিক স্তরের আইসিটি বিষয় এবং কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে শেখানো হয় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদি সার্টিফিকেট ইন কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স এবং সেই সঙ্গে ৩ মাস মেয়াদি গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স।

আফিফুরের চাকরিজীবন

ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক (সম্মান) হয়ে আফিফুরের লক্ষ্য ছিল উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে যাওয়া। পরিবারে একমাত্র ছেলে হওয়ায় বাবা-মায়ের আপত্তিতে সেই স্বপ্ন স্থগিত রাখেন। সিদ্ধান্ত নেন, দেশেই পেশাজীবন গড়বেন। পরবর্তী সময়ে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামে চাকরির সুযোগ পেয়েও সেখানে না গিয়ে নিজ জেলা ময়মনসিংহের ক্যাপিটাল কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।

চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন

পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় দুটি কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। একটিতে ৬ মাস ও অন্যটিতে ৩ মাসের মতো চাকরি করেন। সে জায়গায় কাজটি ছিল সম্পূর্ণ কম্পিউটার–নির্ভর। কয়েক মাস পরই তাঁর জন্য চাকরিটি করা কঠিন হয়ে পরে। দীর্ঘ সময় কম্পিউটার পর্দায় তাকিয়ে থাকার কারণে, আফিফুরের চোখে দেখা দেয়, ‘ড্রাই আই সিনড্রোম’। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে তাঁরা জানান, দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে কাজ করা আফিফুরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। অনতিবিলম্বে তাঁকে পেশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন আফিফুর। এরপর ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কয়েকটি চাকরি সন্ধান করেন। কিন্তু আশানুরূপ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার।

নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়া

নিজ উপজেলা ময়মনসিংহের গফরগাঁও ফিরে গিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। ধীরে ধীরে দেখলেন, তিনি ছাড়া বন্ধুরা সবাই ব্যস্ত, বারবার আড্ডা দিতে ডাকলে তাঁরাও কিছুটা বিরক্তই হন। খোঁজ নিয়ে জানলেন, বেশির ভাগ বন্ধুই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি, পদার্থ, গণিত ইত্যাদি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে বন্ধুদের উৎসাহে তিনি অবসর সময় কাটানোর জন্য মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন।

ক্লাস নিচ্ছেন  আফিফুর রহমান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য আইস ট

এছাড়াও পড়ুন:

এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৬: আপাতত নির্বাচনী পরীক্ষা নয়, চলবে ক্লাস

এইচএসসি পরীক্ষার জন্য নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত টেস্ট পরীক্ষা (নির্বাচনী পরীক্ষা) না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। আজ রোববার (৯ নভেম্বর) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে কোথায় পড়বেন: সিদ্ধান্ত নিতে মনে রাখুন ‘থ্রি–সি’৭ ঘণ্টা আগে

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস চলমান থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নির্বাচনি পরীক্ষা গ্রহণ না করার জন্য অনুরোধ করা হলো। নির্বাচনি পরীক্ষার তারিখ পরবর্তীতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতি উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৬–এর ফরম পূরণ শুরু ৩১ ডিসেম্বর০৪ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পে কমিশনের সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সরকার: অর্থ উপদেষ্টা
  • শিল্পসংস্কৃতি ক্ষেত্রেও একটা বিপ্লব হওয়ার কথা ছিল
  • এইচএসসি পরীক্ষা ২০২৬: আপাতত নির্বাচনী পরীক্ষা নয়, চলবে ক্লাস
  • যৌন হয়রানি: বেরোবি শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি