ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 23rd, November 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখাকে ইসি বড় চ্যালেঞ্জ মনে করলেও পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছেন না স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির মধ্যেই ছিল। আমাদের গত দেড় বছরের প্রচেষ্টায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।’
আজ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে মো.
আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা রয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের। সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটও হবে। তিন মাস আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দীন বলেছিলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ঠিক রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
নির্বাচনের সময় যতই ঘনিয়ে আসবে, বিভিন্ন দলের মিছিল-মিটিংয়ের সংখ্যা ততই বেড়ে যাবে বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তবে তাতে পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা তিনি করছেন না।
গত দুই দিনে ঢাকায় কয়েক দফা ভূমিকম্প ঘটায় সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ জানান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ভূমিকম্প নিয়ে কোনো দেশে আগাম সতর্কতা আছে কি না, তা তাঁর জানা নেই। তবে অনেক দেশ কিছু অ্যাপ তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার ১০ সেকেন্ড আগে সতর্কতামূলক বার্তা জানানো হয়। দেশেও এ ধরনের আগাম সতর্কতামূলক মোবাইল অ্যাপ চালু করা যায় কি না, তার চিন্তাভাবনা চলছে।
দেশে বিশেষ করে নগর এলাকায় উন্মুক্ত বা খোলা জায়গার অভাব, জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণের দিকটি দেখিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এসব বিষয়ে নজর দেওয়ার পাশাপাশি সবাইকে ইমারত নির্মাণ বিধিমালা মেনে ভবন নির্মাণের আহ্বান জানান।
ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ডসহ বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন অগ্নিদুর্ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট যথেষ্ট সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে, তবে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সেটা ভিন্ন বিষয়। সবাইকে মিলে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গণি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুনআগামী নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বড় চ্যালেঞ্জ: সিইসি০৯ আগস্ট ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ হ ঙ গ র আলম চ ধ র পর স থ ত র ভ ম কম প অবনত র
এছাড়াও পড়ুন:
নাশকতাকারীদের ঢাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেছেন, “আইন অনুযায়ী নাশকতাকারীদের ঢাকা মহানগরীতে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে। যারা পরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে পুলিশ।”
বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ডিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, “আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে হবে। কোনো রাজনৈতিক দল, আদর্শ বা ব্যক্তির প্রতি দুর্বলতা বা পক্ষপাত দেখানো যাবে না।”
তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য পুলিশ আইন অনুযায়ী দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ বল প্রয়োগ করতেও দ্বিধাবোধ করবে না।”
থানা এলাকায় অপরাধ প্রতিরোধে টহল কার্যক্রম আরো জোরদারের নির্দেশ দেন তিনি।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) মো. সরওয়ার বলেন, “পুলিশ সদস্যদের সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া দৈনন্দিন কার্যক্রমে ডি-নথির ব্যবহার বাড়াতে হবে।”
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “মামলা রুজুর পর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা যায়।”
তিনি গুরুত্ব দিয়ে বলেন, “আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে সর্বোচ্চ পেশাগত নৈতিক মানদণ্ড প্রদর্শন করে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মামলার রায় ঘিরে কেউ যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিনষ্ট করতে না পারে সেদিকে খেয়াল থাকতে হবে।”
সভায় যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন অক্টোবর-২০২৫ মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন-ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলা সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন।
এ সময় ডিএমপি কমিশনার উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন।
মাসিক অপরাধ সভায় অক্টোবর মাসে ঢাকা মহানগরের আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা বিধানসহ উত্তম কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ডিএমপির বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন ডিএমপি কমিশনার।
অপরাধ পর্যালোচনা সভায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস, ফিন্যান্স এবং প্রকিউরমেন্ট) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জিললুর রহমান, যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার, উপ-পুলিশ কমিশনার, ডিএমপির সব থানার ওসি ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ