‘দশমাইল’ কলার হাটে দিনে কোটি টাকার বেচাকেনা
Published: 7th, October 2025 GMT
প্রতিদিন সকাল হলেই দিনাজপুরের দশমাইল মহাসড়কের পাশে বসে উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পাইকারি কলার হাট। ভোর থেকে জেলার কয়েকটি উপজেলা থেকে কলা চাষিরা কলা আনেন এই হাটে।
ভ্যানে, অটোরিকশায়, পিকআপ আর বাইসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন যোগে হাটে নিয়ে আসে কাঁচা কলার কাঁদি। ঢাকা রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে কাঁচা কলার পাইকাররা এসব কলা কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যায়। এই হাটকে ঘিরে হয়েছে কয়েকশ’ মানুষের কর্মসংস্থান।
জেলার কাহারোল উপজেলার দশমাইল কলার হাটটি উত্তরবঙ্গের অর্থনীতিতে বড় ভূমিকা পালন করছে। কৃষক, পাইকার, শ্রমিকসহ অনেকেই এই হাটকে ঘিরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার কলা বেচাকেনা হয়। হাটটি এখন জেলার কৃষি ও অর্থনীতির এক শক্তিশালী প্রাণকেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে ট্রাকভর্তি এসব কলা। এই হাটের বেশিরভাগ কলাই হচ্ছে সাগর কলা, কিছু রয়েছে সবরি বা মালভোগ জাতের কলা। হাটে সারি সারি কলার কাঁদি সাজিয়ে রাখেন চাষিরা।
শ্রমিক রেজাউল করিম বলেন, “আমরা অনেকেই আগে বেকার ছিলাম। এখন এই কলার হাটে কাজ করে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় করছি। এতে সংসারের খরচ চালানো সহজ হচ্ছে।”
উপজেলার নারায়েত পুর গ্রামের কলা চাষি তারিকুল ইসলাম বলেন, “আমি দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। আজ একশ কাঁদি কলা ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এভাবে দাম পেলে ভালোই লাভ হবে।”
কলা চাষি ফরিদুল ইসলাম বলেন, “প্রতি কাঁদি ৪৯০ থেকে ৫২০ টাকা দরে বিক্রি করছি। চার বিঘা জমির দুইটি বাগানে কলা বিক্রি করে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার বেশি আয় হবে আশা করছি।”
ঢাকা থেকে আসা পাইকার হাফিজ উদ্দীন তালুকদার বলেন, “আমি প্রতিদিন তিন ট্রাক কলা কিনে ঢাকায় নিয়ে যাই। চাহিদা বেশি থাকায় ব্যবসা ভালোই চলছে।”
ফেনী থেকে আসা পাইকার মনসুর আলী বলেন, “এক মাস আগে দাম বেশি ছিল। এখন সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবুও কৃষকেরা ভালো লাভ করছেন।”
কাহারোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এবার ৩২৫ হেক্টর জমিতে কলাচাষ হয়েছে। কলা একটি লাভজনক ফসল। আমরা চাষিদের কলার রোগবালাইসহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করছি ভাল ফলনসহ কৃষকরা কলার ন্যায্য মূল্য পাবেন।
ঢাকা/মোসলেম/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কল র হ ট এই হ ট উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিসিএস পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজশাহীতে আবার রেলপথ অবরোধ
৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজশাহী-ঢাকা রেলপথ দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সারা দেশের রেলযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
আজ রোববার বেলা সোয়া দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন স্টেশন বাজার রেলপথ অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁদের আন্দোলন চলছিল। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘সবাই পায় ছয় মাস, আমরা কেন দুই মাস?’, ‘সময় চাই সময় চাই, যৌক্তিক সময় চাই’, ‘আমার ভাই অনশনে, পিএসসি কী করে?’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এর আগে গতকাল শনিবার বিকেল থেকে একই জায়গায় রেলপথ অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সারা দেশের প্রায় ৬ ঘণ্টা রেলযোগাযোগ বন্ধ ছিল।
এ বিষয়ে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক ফরিদ আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধের কারণে রাজশাহী ও খুলনা রুটে একাধিক ট্রেনের চলাচল ব্যাহত হয়েছে। এতে কপোতাক্ষ ও পদ্মা এক্সপ্রেসসহ কয়েকটি ট্রেন রাজশাহী স্টেশনে আটকে আছে। দৌলতপুর স্টেশনেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
অ্যাগ্রোনোমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা আকতার বলেন, ‘আমাদের একটাই দাবি। সেটা হলো লিখিত পরীক্ষার সময় পিছিয়ে একটা যৌক্তিক সময় নির্ধারণ করা। আমরা দ্রুত পড়ার টেবিলে ফিরে যেতে চাই। যাত্রীদের ভোগান্তি সৃষ্টি করা আমাদের লক্ষ্য নয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে এলেও পিএসসি তাদের একরোখা মনোভাবই পোষণ করে রেখেছে। গতকাল আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও রাজশাহী রেলওয়ে কর্মকর্তার আশ্বাসে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলাম। কিন্তু আজও আমরা ইতিবাচক কোনো উত্তর পাইনি। দ্রুত নতুন সময় নির্ধারণ করে পিএসসি থেকে নোটিশ দিতে হবে। আর তা না করলে আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।’