মিসরে দ্বিতীয় দিনের আলোচনায় ইসরায়েলকে কী শর্ত দিল হামাস
Published: 8th, October 2025 GMT
মিসরে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনের মতো পরোক্ষ আলোচনা হয়েছে। হামাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী ইসরায়েল গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করবে এবং সেনা প্রত্যাহার করে নেবে—এমন নিশ্চয়তা চান তাঁরা।
মিসরের পর্যটন শহর শারম-আল-শেখে গতকাল মঙ্গলবার ওই আলোচনা হয়। এদিন ছিল গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার দ্বিতীয় বছর পূর্তি। হোয়াইট হাউসে এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, গাজা নিয়ে চুক্তি হওয়ার ‘বাস্তব সম্ভাবনা’ আছে।
মিসরে আজ বুধবারও আলোচনা হবে। ওই আলোচনায় যোগ দিতে কাতার ও যুক্তরাষ্ট্রের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারাও মিসরে যাচ্ছেন।
গতকাল হামাসসহ ফিলিস্তিনের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সমন্বিত জোটের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। এতে সব উপায়ে প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। জোরালোভাবে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনি জনগণের অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার অধিকার কারও নেই।’
কথাটি মূলত ট্রাম্পের পরিকল্পনায় হামাসের অস্ত্র সমর্পণের যে দাবির কথা বলা হয়েছে, সেটিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ফাওজি বারহুম বলেছেন, তাঁদের আলোচকেরা যুদ্ধের অবসান চাইছেন। তাঁরা চাইছেন, গাজা থেকে দখলদার সেনারা পুরোপুরি সরে যাক।
কিন্তু ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ইসরায়েলি সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি অস্পষ্ট। ধাপে ধাপে সেনাদের কবে প্রত্যাহার করা হবে, তার কোনো নির্দিষ্ট সময়সূচি দেওয়া হয়নি। সেনাদের ধাপে ধাপে তখনই প্রত্যাহার করা হবে, যখন হামাস তাদের কাছে জিম্মি থাকা ৪৮ ইসরায়েলিকে মুক্তি দেবে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই জিম্মিদের মধ্যে ২০ জন এখনো বেঁচে আছেন।
আরও পড়ুনএকদিকে আলোচনা, অন্যদিকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল ১২ ঘণ্টা আগেহামাসের ওই কর্মকর্তা বলেছেন, গতকালের আলোচনায় ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির দিন-তারিখ নির্ধারণ এবং ইসরায়েলি বাহিনীকে প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শেষ ইসরায়েলি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি ইসরায়েলি সেনাদের চূড়ান্ত প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য হামাসের পক্ষ থেকে জোর দেওয়া হয়েছে।
মিসরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, হামাসের শীর্ষ আলোচক খলিল আল-হায়া বলেছেন, সংগঠনটি দখলদার বাহিনীকে এক সেকেন্ডের জন্যও বিশ্বাস করে না।
আল-হায়া আরও বলেন, যুদ্ধ শেষ হবে এবং তা যে নতুন করে আর শুরু হবে না, তার নিশ্চয়তা চায় হামাস।
মিসরে আলোচনা চলার মধ্যেও গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনি সরকারি সংবাদ সংস্থা ওয়াফার তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার গাজায় ইসরায়েলের হামলায় কমপক্ষে ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বোমা হামলা বন্ধের আহ্বান জানানোর পরও ইসরায়েল থামেনি। শুধু সেদিন থেকে গতকাল পর্যন্ত ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় কমপক্ষে ১০৪ জন নিহত হয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য় ইসর য় ল কর মকর ত বল ছ ন গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
আফগানিস্তানে পাকিস্তানের হামলায় নিহত ১০
আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্ব খোস্ত প্রদেশে একটি বাড়িতে পাকিস্তানি বাহিনীর বোমা হামলায় কমপক্ষে নয় শিশু এবং একজন নারী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার আফগান কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, গুরবুজ জেলায় মধ্যরাতে এই হামলাটি ঘটে।
সাম্প্রতিক এই হামলা নতুন করে শত্রুতা শুরু করার ঝুঁকি তৈরি করেছে এবং দুই দেশের মধ্যে ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি একটি সুতোয় ঝুলছে, আলোচনার অচলাবস্থার জন্য প্রতিটি পক্ষ একে অপরকে দোষারোপ করছে।
মুজাহিদ এক্স-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, “পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কাজী মীরের ছেলে ওয়ালিয়াত খানের বাড়িতে বোমা হামলা চালিয়েছে। ফলস্বরূপ, নয়জন শিশু (পাঁচ ছেলে এবং চার মেয়ে) ও একজন নারী শহীদ হয়েছেন এবং তার বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে।”
তিনি জানান, উত্তর-পূর্ব কুনার এবং পূর্ব পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা হয়েছে। এতে কমপক্ষে চারজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
মুজাহিদ বলেছেন, আফগানিস্তান “সঠিক সময়ে যথাযথ প্রতিক্রিয়া জানাবে। ইসলামিক আমিরাত এই লঙ্ঘন ও অপরাধের তীব্র নিন্দা জানায় এবং পুনর্ব্যক্ত করে যে তার আকাশসীমা, ভূখণ্ড ও জনগণকে রক্ষা করা তার বৈধ অধিকার।”
ঢাকা/শাহেদ