জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আগামী মাসেই গণভোট চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে অর্থাৎ নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটের পক্ষে তাঁদের অবস্থান।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলাকালে সভা থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দলীয় অবস্থান প্রকাশ করেন জামায়াতের নায়েবে আমির।

জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামীর স্ট্যান্ডিং পরিষ্কার—ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হবে এবং নভেম্বরের ভেতরেই জুলাই চার্টারের ওপরে আমাদের গণভোট হবে। দেশ অত্যন্ত স্থিরতা, দৃঢ়তা, স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে ৫৪ বছরের ভেতরে সবচেয়ে বেশি জন–অংশগ্রহণমূলক আনন্দ-উৎসবের নির্বাচনে যাবে।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হলেও তা কবে হবে, তা নিয়ে মতভেদ কাটেনি। বিএনপি ফেব্রুয়ারিতে সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে গণভোটে রাজি হলেও তাতে আপত্তি রয়েছে জামায়াতের।

সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘এখন আমরা সবাই একমত হয়েছি যে গণভোটের মাধ্যমেই জুলাই চার্টার এক্সেপ্টেড হবে.

..অনেকে বলেছেন গণভোট এবং জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। আমরা বলেছি,  না, গণভোট একটি আলাদা বিষয়, জাতীয় নির্বাচন একটি আলাদা বিষয়।

গণভোট ও সংসদ নির্বাচন একসঙ্গে হলে তা জটিলতা তৈরি করবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘দুটি ইলেকশন একসঙ্গে হওয়ার একটা ভালো দিক আছে, কিন্তু মন্দ দিক আছে অনেক বেশি...আপার হাউসের মতো কিছু ইস্যু আছে, যা আগামী নির্বাচনের অংশ হবে। যদি একই দিন করেন, তাহলে জনগণ গ্রহণ করবে কি করবে না—এটা আনডিসাইডেড রয়ে গেল।’

ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের উদাহরণ টেনে সৈয়দ আবদুল্লাহ তাহের বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাত তিনটা–চারটা পর্যন্ত আমাদের টেনশনে ঘুম আসে নাই... জাহাঙ্গীরনগর নির্বাচনে ৪৮ ঘণ্টা পরে রায় দিয়েছে...তাহলে দুটি নির্বাচন আমাদেরকে এ রকম একটি আশঙ্কা দেয়।’

‘ইলেকশন (নির্বাচন) যদি প্রশ্নবোধক হয়, তাহলে আপনার গণভোটের চার্টারও প্রশ্নবোধক হয়ে যাবে,’ সতর্ক করেন তিনি।

নির্বাচন কমিশনের কি আলাদাভাবে দুটি নির্বাচন করার আর্থিক সক্ষমতা আছে কি না—এ প্রশ্নে জামায়াতের এ নেতা বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি আমাদের নিতে হবে...এটা আমি মনে করি মোটেই খুব বড় খরচ নয়, বরং জাতিকে স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।’

বিএনপির ভিন্ন অবস্থান নিয়ে সৈয়দ তাহের বলেন, ‘মূলত একটি দলই কিছুটা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে—বিএনপি। তারা মানুষকে বলছে সংস্কার মানে কিন্তু আবার অফিশিয়ালি নোট অব ডিসেন্ট দিচ্ছে। তাহলে জাতিকে পরিষ্কার করার জন্য তাদের বলতে হবে, মানে কি না।’

নোট অব ডিসেন্টকে অতটা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন না তিনি। তাহের বলেন, ‘নোট অব ডিসেন্ট ইজ নট আ পার্ট অব ডিসিশন—ইউ মাস্ট মেক শিউর। কনসাস কমিটির পক্ষ থেকে যদি কোনো নোট অব ডিসেন্ট থাকত, তাহলে সেটা আমরা গণভোটে সাবজেক্ট করে মানুষের কাছে নিয়ে যেতাম...কিন্তু একটা দলের নোট অব ডিসেন্ট তো জাতির ভোটের ম্যান্ডেটের জন্য কোনো সাবজেক্ট হতে পারে না।’

উদাহরণ টেনে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘যেমন হাইকোর্টে তিনজনের বেঞ্চে দুজন যদি রায় দেন, সেটাই রায়। আরেকজন নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারেন, সেটা ইতিহাসে রেকর্ড থাকবে। সুতরাং নোট অব ডিসেন্ট মানে সিদ্ধান্ত নয়।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ট অব ড স ন ট ত হ র বল ন আম দ র গণভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদের উৎপত্তি নিয়ে নতুন তত্ত্ব কতটা বিশ্বাসযোগ্য

জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর সোলার সিস্টেম রিসার্চের বিজ্ঞানীরা চাঁদের উৎপত্তি নিয়ে চাঞ্চল্যকর নতুন তত্ত্ব প্রস্তাব করেছেন। তাঁদের মতে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে থেইয়া নামের মঙ্গল গ্রহ আকৃতির একটি গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষের পর চাঁদের জন্ম হয়েছে। সেই সংঘর্ষে থেইয়া সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে কেবল পৃথিবীর ভূত্বক ও চাঁদের মধ্যে খনিজের চিহ্ন হিসেবেই থেইয়ার প্রমাণ দেখা যায়।

পৃথিবী ও চাঁদের খনিজের অনুপাত সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করে থেইয়ার রহস্যময় উৎস উন্মোচনের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী টিমো হপ জানান, গ্রহ গঠনের জন্য সংঘর্ষ হওয়া শত শত গ্রহাণুর ভ্রূণগুলোর মধ্যে থেইয়া সম্ভবত অন্যতম ছিল। থেইয়া একসময় অভ্যন্তরীণ সৌরজগতের মধ্যে একটি স্থিতিশীল কক্ষপথে ছিল। সৌরজগতের বিকাশের প্রথম ১০ কোটি বছর ধরে পৃথিবীর একটি লুকানো প্রতিবেশী ছিল, যা এখন সম্পূর্ণভাবে বিলীন হয়ে গেছে। যখন থেইয়ার সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়, তখন সেই আঘাতে টিকে থাকা সব উপাদান হয় পৃথিবীর মধ্যে মিশে গেছে বা চাঁদের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।

বিজ্ঞানীদের মতে, সৌরজগৎ যখন গঠিত হয়, তখন বিভিন্ন উপাদানের আইসোটোপ সমানভাবে ছড়িয়ে পড়েনি। তখন থেইয়া গ্রহাণু পৃথিবীকে আঘাত করেছিল। সংঘর্ষের সময় থেইয়া ও আদি-পৃথিবী একসঙ্গে মিশে গিয়ে আমাদের গ্রহ ও চাঁদের জন্ম হয়। এই তথ্য সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা পৃথিবী থেকে পাওয়া শিলা ও অ্যাপোলো মিশনের মাধ্যমে চাঁদ থেকে আনা শিলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রহাণু থেকে লোহার আইসোটোপ পরিমাপ করেছেন। দেখা গেছে, চাঁদ ও পৃথিবীর লোহার আইসোটোপের অনুপাত একই রকম আছে। থেইয়া ও আদি-পৃথিবী এত ভালোভাবে একসঙ্গে মিশে গিয়েছিল, তাদের আর আলাদা করা সম্ভব না। তবে থেইয়ার ঠিক কতটা অংশ চাঁদে ও কতটা অংশ পৃথিবীতে মিশেছিল, তা বের করা অসম্ভব। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী হপ বলেন, আইসোটোপিক গঠনের এই সাদৃশ্য থেইয়ার প্রাথমিক গঠন সরাসরি পরিমাপ করাও অসম্ভব করে তুলছে।

যদি থেইয়া সৌরজগতের শীতল বাইরের প্রান্তে গঠিত উল্কাপিণ্ডের মতো হতো, তবে আদি-পৃথিবী সম্পূর্ণ ভিন্ন আইসোটোপের মিশ্রণ ধারণ করত। থেইয়া ও আদি-পৃথিবী উভয়ই সম্ভবত সৌরজগতের অভ্যন্তরীণ অঞ্চল থেকে আসা শিলাময় অ-কার্বনেশিয়াস উল্কাপিণ্ড দিয়ে তৈরি হতে পারে। ধারণা করা হয়, থেইয়া প্রায় ১০ কোটি বছর ধরে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করেছিল। এরপরে বৃহস্পতির মহাকর্ষীয় আকর্ষণ কক্ষপথ থেকে বিচ্যুত করে পৃথিবীর দিকে ঠেলে দেয়। এটি সূর্যের চারপাশে একটি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল কক্ষপথে ছিল।

সূত্র: ডেইলি মেইল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একসঙ্গে হাজির দুই জলি, এরপর...
  • বরিশালে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি একসঙ্গে জন্মানো পাঁচ নবজাতক
  • হঠাৎ শুভ-ঐশীর একসঙ্গে রোমান্টিক ছবি পোস্ট
  • মহাকাশে কি প্রাণী আছে, প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে তৈরি হচ্ছে বিশাল টেলিস্কোপ
  • চাঁদের উৎপত্তি নিয়ে নতুন তত্ত্ব কতটা বিশ্বাসযোগ্য