জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাক্ষরিত হবে। ঐতিহাসিক এই স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে নেতৃত্ব দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করবেন।
আরো পড়ুন:
স্বনির্ভর হতে হবে, এর বাইরে কোনো কথা নাই: প্রধান উপদেষ্টা
নাহিদকে পরিষ্কার করতে হবে, কারা ‘সেফ এক্সিট’ চায়: রিজওয়ানা
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ ভবনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কার্যালয়ের সভাকক্ষে কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। সভায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের ৫টি বৈঠকে প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করা হয়।
বৈঠকে আশা প্রকাশ করা হয়, বিশেষজ্ঞরা এবং রাজনৈতিক দলসমূহ থেকে প্রাপ্ত অভিমতসমূহ বিশ্লেষণ করে খুব শিগগিরই বাস্তবায়নের উপায় সংক্রান্ত সুপারিশ এবং চূড়ান্তকৃত জুলাই সনদ সরকারের কাছে জমা দেওয়া হবে।
বৈঠকে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড.
এছাড়া ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার সভায় অংশ নেন।
ঢাকা/আসাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: দু-এক দিনের মধ্যে সরকারকে সুপারিশ দেবে কমিশ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দল এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতকে বিবেচনায় নিয়ে ঐকমত্য কমিশন যেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং সরকারকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট পরামর্শ দেয়—এ বিষয়ে আলোচনায় রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো মত দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞ মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পাঁচটি বৈঠকের আলোচনায় প্রাপ্ত মতামতকে সমন্বিত করে আগামী দু-এক দিনের মধ্যে সরকারকে পরামর্শ দেবে ঐকমত্য কমিশন এবং এ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী সকলকে তা অবহিত করবে।
বুধবার রাতে ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে আলোচনা শেষে সমাপনী বক্তব্যে অধ্যাপক আলী রীয়াজ এসব কথা বলেন। এ সময় কমিশনের সদস্যদের মধ্যে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদ: একমত গণভোটে, অনিশ্চয়তা বাস্তবায়নে
‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে আবার অভ্যুত্থান অনিবার্য’
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সাথে একই দিনে পৃথক ব্যালটে গণভোট নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি কয়েকটি রাজনৈতিক দল জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট করার পক্ষে মত দিয়েছে। কমিশন মনে করে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নের জন্য ত্রয়োদশ সংসদকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সংবিধানের মৌলিক কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা প্রদান করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কার্যত ঐকমত্য রয়েছে।
এছাড়া সনদ বাস্তবায়নের উপায় সম্পর্কিত বৈঠকে বিশেষজ্ঞগণ সর্বসম্মতভাবে পাঁচটি মতামত দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন কমিশনের সহ-সভাপতি। মতামতগুলো হলো-
* ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়নে একটি আদেশ জারি করতে হবে।
* এই আদেশের মাধ্যমে গণভোট আয়োজন করতে হবে।
* যেসব বিষয়ে ঐকমত্য বা বৃহত্তর ঐক্য রয়েছে এবং যেসব বিষয়ে ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) রয়েছে, গণভোটে সেই দুটি বিষয়ে আলাদা প্রশ্ন থাকবে।
* নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ গঠিত হবে।
* পরিষদ আদেশে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গণভোটের অনুমোদন সাপেক্ষে, ‘জুলাই জাতীয় সনদ’-এ বর্ণিত সংবিধান সংশ্লিষ্ট সংস্কারসমূহ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ স্বাক্ষর ছাড়াও কমিশনের পক্ষ থেকে আগামী ১৮-১৯ অক্টোবরের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পরাজয়কে সবচেয়ে বড় অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই ঐক্য অক্ষুণ্ণ রাখতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে গতকালের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ