ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজ দ্রুত শেষ করা, সিলেটের বিভিন্ন এলাকার সড়ক সংস্কার ও সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গে বৈঠক করেছে জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এ বৈঠক হয়।

বৈঠকে জামায়াতের চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল অংশ নেয়। তাঁরা হলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, বিশিষ্ট আইনজীবী শিশির মনির ও ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের শুরা সদস্য শেখ জিল্লুর রহমান আজমী। জুবায়ের ছাড়া অন্য তিন নেতা সিলেট বিভাগের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে জামায়াত ঘোষিত প্রার্থী। বৈঠক শেষে তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে গতকাল রাত নয়টার দিকে সিলেট জামায়াতের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৈঠকের বিষয়টি জানানো হয়।

সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট হাইওয়ের কাজ দীর্ঘদিন থেকে চলছে। কাজের গতি খুবই ধীর। বৃষ্টিপাতের কারণে সেখানে অনেক গর্ত হয়ে গেছে। খুবই সমস্যা হচ্ছে। যারা এ কাজ করছে, তাদের যথেষ্ট মনোযোগের অভাবে মহাসড়কে যাঁরা চলাফেরা করেন, তাঁরা খুবই দুর্ভোগ পোহান। ৮ ঘণ্টার রাস্তা ১৪ ঘণ্টা, ১৬ ঘণ্টা, ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত লেগে যায়।’

জামায়াতের এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছি। আমরা সিলেটবাসীর পক্ষ থেকে তাঁকে অনুরোধ করেছি, যত দ্রুত সম্ভব ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কাজটি সম্পন্ন করা। এই হাইওয়েতে দীর্ঘ যানজট নিরসনের জন্য কার্যকর কৌশল বের করতে হবে। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, তিনি সেখানে সরেজমিনে গিয়েছিলেন। কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা আশা করছি, তাঁর এই নির্দেশনায় সবার সহযোগিতায় সিলেটবাসী, বিশেষ করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যাঁরা চলাফেরা করেন, ভয়ংকর যে কষ্ট হয়, সেই কষ্টটা লাঘব হবে।’

মহাসড়কের কাজ চলাকালে সিলেটে ট্রেনের সংখ্যা বা বগি বাড়ানোর দাবি উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জামায়াতের এই নেতা। তিনি বলেন, ‘তিনি (উপদেষ্টা) আমাদের আশ্বস্ত করেছেন, বিদ্যমান যে সময় আছে, এ সময়ের মধ্যে তাঁরা যথেষ্ট চেষ্টা করবেন। সেই পদক্ষেপগুলো তাঁরা গ্রহণ করছেন।’

ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আপনারা জানেন জামায়াত সব সময় জনকল্যাণে সক্রিয় থাকে। সে জন্য আমরা চারজন এসেছিলাম। আমার সিলেট-৬ নির্বাচনী এলাকা গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা নিয়ে, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী এলাকা। এ এলাকার অধিকাংশ মানুষ প্রবাসে থাকেন। এটি প্রাকৃতিক গ্যাসসমৃদ্ধ এলাকা। আমাদের এখান থেকে গ্যাস সারা দেশে সরবরাহ করা হয়। কিন্তু আমরা এখনো সেখানে গ্যাস পাচ্ছি না।’

বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ উপজেলার যোগাযোগব্যবস্থা বিধ্বস্ত বলে মন্তব্য করে সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, ‘আজ আমি দুটি ব্রিজের কথা বলে আসছি। একটি হলো শরীফগঞ্জ-বীরগঞ্জ কুশিয়ারা নদীর ওপর, ৫০ বছর ধরে এখানে ব্রিজ দেওয়া হবে বলে সময় পার করা হচ্ছে। আজ আমরা এটি উপদেষ্টাকে জোরালোভাবে বলেছি। তিনি বলেছেন, এটি জরুরি ভিত্তিতে দেখবেন। আরেকটি ব্রিজ সুরমা নদীর ওপর। এর পেছনে আমি লেগেই থাকব চূড়ান্ত সফলতা না আসা পর্যন্ত।’

আইনজীবী শিশির মনির সাংবাদিকদের বলেন, ‘দিরাই ও শাল্লা নিয়ে সুনামগঞ্জ-২ আসন। সেখানে একটি বড় ধরনের সেতুর কাজ আছে। সেটি হলো চণ্ডীগড় ব্রিজ। এটি সুনামগঞ্জের দিরাই, শান্তিগঞ্জ এবং জগন্নাথপুর থানার সংযোগস্থল। সেতুটি হলে প্রায় ১৫ লাখ লোকের যাতায়াতের ব্যবস্থা হয়। আগেও এটি নিয়ে উদ্যোগ নিয়েছি। প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে দেখা করেছি। আশা করছি, এ বিষয়ে সরকার কার্যকর উদ্যোগ নেবে।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্ব রোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটার মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করার কাজ আট বছর ধরে চলছে। এতে সম্প্রতি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট তীব্র রূপ নিয়েছে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পালাবদলের পর ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা দেশে ফিরে যান। তিন মাস পর তাঁরা বাংলাদেশে ফিরে কাজ শুরু করেন। এর মধ্যে তাঁদের অনেক মালামাল খোয়া যায়। এতে কাজের গতি কমে যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

৮ দাবিতে গাংনীতে নার্সদের কর্মবিরতি পালন

আট দাবিতে অবস্থান ধর্মঘট ও দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করেছেন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র স্টাফ নার্স ও মিডওয়াইফারি কর্মকর্তারা।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। বাংলাদেশ নার্সেস এসোসিয়েশন (বিএনএ) গাংনী উপজেলা শাখার উদ্যোগে কর্মসূচি পালিত হয়।

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির প্রার্থী বদলের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে বিক্ষোভ

বাকৃবি শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ

নার্স-মিডওয়াইফদের দাবির মধ্যে রয়েছে- স্বতন্ত্র নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে ভিন্ন অধিদপ্তরের সঙ্গে একীভূত করার অপচেষ্টা বন্ধ এবং জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠন। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর কর্তৃক প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি, অর্গানোগ্রাম, স্ট্যান্ডার্ড সেট-আপ এবং ক্যারিয়ার প্যাথ অনুমোদন ও বাস্তবায়ন। নার্সদের পরবর্তী উচ্চতর পদগুলোতে (৯ম হতে ৪র্থ গ্রেড) পদোন্নতি। দ্রুত সময়ের মধ্যে নার্সিং সুপারভাইজার এবং নার্সিং ইন্সট্রাক্টর পদগুলো ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা। ডিপ্লোমা নার্স-মিডওয়াইফদের সনদকে স্নাতক (পাশ) সমমান দেওয়ার পাশাপাশি সব গ্রাজুয়েট নার্স-মিডওয়াইফদের জন্য প্রফেশনাল বিসিএস চালু করা।

বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নার্স নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট নিয়োগ-বিধি ও মানসম্মত বেতন কাঠামো এবং অপ্রশিক্ষিত ও নিবন্ধনবিহীন ভুয়া নার্স-মিডওয়াইফদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ ও নার্স-মিডওয়াইফদের ঝুঁকিভাতা প্রদানসহ নার্সিং ইউনিফরম পরিবর্তন করতে হবে। শয্যা, রোগী ও চিকিৎসক অনুপাতে নার্স-মিডওয়াইফদের পদ সৃজন ও নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানান।

নার্সিং সুপারভাইজার নুরুন্নাহার খাতুন ও নার্সিং সুপারভাইজার আমেনা খাতুনের নেতৃত্বে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সিনিয়র স্টাফ নার্স মোছা. রোকেয়া খানম, মোছা. রাফিজা খাতুন, শাহিনা খাতুন, সাহারা খাতুন, আসমা আক্তার,মিম্মা খাতুন, রেখসোনা খাতুন, মিডওয়াইফ মোছা. জান্নাতুল ফেরদাউস ও নার্গিস পারভিন।

ঢাতা/ফারুক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ