‘‘আমাকে আঘাত করলে আমি সারা ভারত হেলিয়ে দেব।’’ এসআইআর ইস্যুতে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঠাকুরনগরে ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-বিরোধী জনসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তার দাবি, বাংলা দখলের পরিকল্পনা করতে গিয়ে গুজরাটের শক্ত ঘাঁটি হারাবেন মোদী। 

সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। ঠিক এমন সময় আবারও বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। 

তিনি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘‘আমার বাংলায় আঘাত করলে, মানুষকে আঘাত করলে, আমি মনে করি আমায় আঘাত করা হয়েছে। আমাকে আঘাত করলে আমি সারা ভারত হেলিয়ে দেব। এটা মাথায় রেখো। ভোটের পরে আমিও একটু দেশটা চষে বেড়াব।’’

‘‘কী ভাবছ নিজেদের, কেউকেটা হয়ে গেছ? চিরকাল কেউ সরকারে থাকে না। ২০২৯ বড় ভয়ঙ্কর! তোমাদের সরকার থাকবে না। সেদিন কোথায় পালাবে? এখন থেকে জায়গা ঠিক করে রেখে দাও।’’ যোগ করেন মমতা। 

এ সময় তিনি বিজেপি গুজরাটে পরাজিত হতে চলেছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের রাজ্য গুজরাটে ১৯৯০ সাল থেকে বিজেপি নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এ প্রসঙ্গে মমতা তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন।

বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার আক্রমণের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, আসাম এবং কেরালায় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা সংশোধনের এই প্রক্রিয়া। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন এত তাড়াহুড়ো করে এসআইআর করা হচ্ছে? নির্বাচনের ঠিক আগে কেন এসআইআর করার প্রয়োজন পড়ল?’’

তৃণমূলের পাশাপাশি অন্যান্য বিরোধী দলগুলোরও অভিযোগ- এই প্রক্রিয়ার আড়ালে বিজেপি বিরোধী-সমর্থক প্রান্তিক এবং নিপীড়িত সম্প্রদায়ের ভোটারদের অনুপ্রবেশকারী অজুহাতে তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে।

মমতা বলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার বলতে এসেছি, আপনারা যারা এখানকার প্রকৃত ভোটার, আগে ভোট দিয়েছেন, এমনকি ২০২৪-এও, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন কোন লিস্টে? ২০২৪-এর লিস্টে। তাহলে সেই লিস্ট যদি বাতিল হয়ে যায়, তাহলে তো সরকারও বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত। তুমি এতদিন এসআইআর করার সময় পেলে না? ভোটের দুই মাস আগে তোমার মাথায় সুড়সুড়ি! নাকি, কাকে বাদ দেবে আর কাকে বাদ দেবে না! আর এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে ফর্ম বিক্রি করতে হচ্ছে। এতদিন কী করছিলে? ভোট এলে তোমার এসব মনে পড়ে?’’   

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘যদি সত্যিই সীমান্ত এলাকায় এত কাল অবৈধ অভিবাসীরা থেকে থাকেন, তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব কার ছিল? বিমানবন্দর এবং কাস্টমস সবই তো কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। যতদিন আমি আছি, ততদিন আমি তাদের আপনাদের ছুঁড়ে ফেলতে দেব না।’’

ভোটার তালিকা এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। গত সপ্তাহে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিতের অনুরোধও জানান তিনি। তার অভিযোগ, পরিকল্পনাহীন এই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের তিনজন বুথ লেভেল অফিসারের মৃত্যুর খবর মিলেছে এবং অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানা গেছে। 

মমতার দাবি, এসআইআরের কাজের চাপেই এ ঘটনা ঘটছে। 

ঢাকা/তারা//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রক র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমাকে আঘাত করলে ভারত হেলিয়ে দেব’ চরম হুঁশিয়ারি মমতার

‘‘আমাকে আঘাত করলে আমি সারা ভারত হেলিয়ে দেব।’’ এসআইআর ইস্যুতে বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনকে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  

মঙ্গলবার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ঠাকুরনগরে ভোটার তালিকা নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-বিরোধী জনসভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। তার দাবি, বাংলা দখলের পরিকল্পনা করতে গিয়ে গুজরাটের শক্ত ঘাঁটি হারাবেন মোদী। 

সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন বা ‘স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন’ ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি। ঠিক এমন সময় আবারও বিজেপি ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। 

তিনি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, ‘‘আমার বাংলায় আঘাত করলে, মানুষকে আঘাত করলে, আমি মনে করি আমায় আঘাত করা হয়েছে। আমাকে আঘাত করলে আমি সারা ভারত হেলিয়ে দেব। এটা মাথায় রেখো। ভোটের পরে আমিও একটু দেশটা চষে বেড়াব।’’

‘‘কী ভাবছ নিজেদের, কেউকেটা হয়ে গেছ? চিরকাল কেউ সরকারে থাকে না। ২০২৯ বড় ভয়ঙ্কর! তোমাদের সরকার থাকবে না। সেদিন কোথায় পালাবে? এখন থেকে জায়গা ঠিক করে রেখে দাও।’’ যোগ করেন মমতা। 

এ সময় তিনি বিজেপি গুজরাটে পরাজিত হতে চলেছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করেন। 

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের রাজ্য গুজরাটে ১৯৯০ সাল থেকে বিজেপি নিরঙ্কুশ ক্ষমতা ধরে রেখেছে। এ প্রসঙ্গে মমতা তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জালিয়াতির অভিযোগ তোলেন।

বিজেপির বিরুদ্ধে মমতার আক্রমণের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, আসাম এবং কেরালায় নির্বাচনের আগে তড়িঘড়ি স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশনের মাধ্যমে ভোটার তালিকা সংশোধনের এই প্রক্রিয়া। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘‘কেন এত তাড়াহুড়ো করে এসআইআর করা হচ্ছে? নির্বাচনের ঠিক আগে কেন এসআইআর করার প্রয়োজন পড়ল?’’

তৃণমূলের পাশাপাশি অন্যান্য বিরোধী দলগুলোরও অভিযোগ- এই প্রক্রিয়ার আড়ালে বিজেপি বিরোধী-সমর্থক প্রান্তিক এবং নিপীড়িত সম্প্রদায়ের ভোটারদের অনুপ্রবেশকারী অজুহাতে তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে।

মমতা বলেন, ‘‘আমি পরিষ্কার বলতে এসেছি, আপনারা যারা এখানকার প্রকৃত ভোটার, আগে ভোট দিয়েছেন, এমনকি ২০২৪-এও, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নির্বাচিত হয়েছেন কোন লিস্টে? ২০২৪-এর লিস্টে। তাহলে সেই লিস্ট যদি বাতিল হয়ে যায়, তাহলে তো সরকারও বাতিল হয়ে যাওয়া উচিত। তুমি এতদিন এসআইআর করার সময় পেলে না? ভোটের দুই মাস আগে তোমার মাথায় সুড়সুড়ি! নাকি, কাকে বাদ দেবে আর কাকে বাদ দেবে না! আর এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে ফর্ম বিক্রি করতে হচ্ছে। এতদিন কী করছিলে? ভোট এলে তোমার এসব মনে পড়ে?’’   

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘যদি সত্যিই সীমান্ত এলাকায় এত কাল অবৈধ অভিবাসীরা থেকে থাকেন, তবে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পাহারার দায়িত্ব কার ছিল? বিমানবন্দর এবং কাস্টমস সবই তো কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। যতদিন আমি আছি, ততদিন আমি তাদের আপনাদের ছুঁড়ে ফেলতে দেব না।’’

ভোটার তালিকা এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে বারবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মমতা। গত সপ্তাহে এসআইআর প্রক্রিয়া স্থগিতের অনুরোধও জানান তিনি। তার অভিযোগ, পরিকল্পনাহীন এই প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে রাজ্যের তিনজন বুথ লেভেল অফিসারের মৃত্যুর খবর মিলেছে এবং অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলেও জানা গেছে। 

মমতার দাবি, এসআইআরের কাজের চাপেই এ ঘটনা ঘটছে। 

ঢাকা/তারা//

সম্পর্কিত নিবন্ধ