‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে/ রুখে দাঁড়াও একসাথে’, ‘মাঠে ঘাটে বাসে ট্রেন/ নারীর স্থান সবখানে’, ‘পথেঘাটে দিনেরাতে/ চলতে চাই নিরাপদে’, ‘রাজপথে নারীর সাড়া/ জাগরণের নতুনধারা’ এমন সব স্লোগানে রাজপথ মুখর করে সন্ধ্যায় মশালমিছিল করলেন নারীরা।

আজ মঙ্গলবার ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ উপলক্ষে বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সন্ধ্যায় মশালমিছিলের আয়োজন করে ৬১টি নারী সংগঠন। বিকেল চারটায় জাতীয় সংসদের সামনে ড্রাম বাজিয়ে এই আয়োজনের সূচনা হয়েছিল। অংশগ্রহণকারী সংগঠনগুলোর পরিচিতি তুলে ধরেন সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশনের মাহমুদা বেগম। এরপর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনা দিয়ে মূল কার্যক্রম শুরু হয়।

এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য ছিল ‘নারীর জন্য রাজনীতি করি, সহিংসতা রোধে একসাথে লড়ি’।

১৯৯৭ সাল থেকে দেশে প্রতিবছর ২৫ নভেম্বর ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিরোধ দিবস’ উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডমিনিকান রিপাবলিকের স্বৈরাচারী সরকারবিরোধী মিরাবেল ভগ্নিত্রয়কে সেনাসদস্যরা ধর্ষণ ও হত্যা করেন। এ ঘটনার স্মরণ ও নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ১৯৮১ সালে লাতিন আমেরিকার ও ক্যারিবীয় নারী সম্মেলনে ২৫ নভেম্বরকে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়।

অনুষ্ঠানে দিবসটির ইতিহাস তুলে ধরে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন নারীপক্ষের রেহানা সামদানী। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নারীর কিছু কিছু বিচরণ থাকলেও স্বাধীন ও সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ পর্যায়ে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ খুবই নগণ্য। রাজনীতিতে নারীদের কেবল অলংকার বা প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে নারীর যোগ্যতা ও অধিকারকে সম্মান জানিয়ে একটি সুষ্ঠু ও নিরাপদ রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তাহলেই নারীর সপক্ষে সরকার গঠন এবং আইনকানুন তৈরি হবে।

ঘোষণাপত্রে নারী নির্যাতন বন্ধ ও রাজনীতিতে সম–অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আট দাবি উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে সহিংসতা, হয়রানি ও ধর্মকে হাতিয়ার করে ভোটের রাজনীতিতে নারীর কর্মঘণ্টা কমানোর প্রলোভন দেখিয়ে নারীকে গৃহবন্দী করার কূটকৌশল বন্ধ করতে হবে; প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে লিঙ্গসমতা, নারীকে সব সহিংসতা থেকে সুরক্ষার স্পষ্ট নীতিমালা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অঙ্গীকার করতে হবে এবং জাতীয়, স্থানীয় ও দলীয় কাঠামোর প্রতি স্তরে নারীর অর্থবহ নেতৃত্ব নিশ্চিত করতে হবে।

নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আয়োজনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আজ মঙ্গলবার সংসদ ভবনের সামনে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ত গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

যশোর প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া, মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

আহত পাঁচ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে সাড়ে আটটা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ (অপরাধ) সুপার আবুল বাশার, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসনাত খানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছে।

শিক্ষার্থী, স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়–সংলগ্ন আম বটতলা বাজারে মুঠোফোন মেরামত করতে এক দোকানে যান। এ সময় ওই দোকানদারের সঙ্গে ওই নারী শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ওই নারী শিক্ষার্থীকে অশ্লীল কথা বলেন। এরপর ওই শিক্ষার্থীর বন্ধুরা সমবেত হয়ে ওই দোকানে গিয়ে দোকানদারকে মারপিট করেন। এরপর গ্রামবাসী একত্র হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়।

সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত করতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের চার-পাঁচজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ