অবিলম্বে বন্দর ইজারার চুক্তি বাতিলের দাবি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের
Published: 25th, November 2025 GMT
বিদেশিদের সঙ্গে করা বন্দর ইজারার চুক্তিগুলো অবিলম্বে বাতিল করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তাঁরা চট্টগ্রাম বন্দরকে লাভজনক উল্লেখ করে এ বন্দরের টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী বলে দাবি করেছেন।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়ো করে কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি সম্পর্কে জাতীয় রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণে মতবিনিময় ও পরামর্শ সভায়’ এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। এ সভার আয়োজন করে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
মতবিনিময় সভায় বিদেশি কোম্পানির কাছে চট্টগ্রাম বন্দর লিজ না দেওয়া এবং জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী টার্মিনাল চুক্তির উদ্যোগ বাতিল করার দাবি জানানো হয়। সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে অবস্থান পরিবর্তন না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা।
মূল কাজগুলো বাদ দিয়ে যে কাজগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না, সে কাজগুলো কেন করছেন, এমন প্রশ্ন রাখেন গণফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত রুটিন ওয়ার্কের বাইরে কোনো কাজ করবেন না। অন্তর্বর্তী সরকারের যে আকার, সেটি আপনারা নষ্ট করে দিয়ে যাবেন না। কারণ, বাংলাদেশের জনগণ অত্যন্ত দুঃখ–কষ্টের মাধ্যমে ৫৪ বছর অতিক্রম করেছে। আমাদের সামনে যে একটা সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, সে সম্ভাবনাকে আপনার (অধ্যাপক ইউনূস) হাত দিয়ে আমরা নষ্ট হতে দেব না।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এভাবে চুক্তি করতে পারে না বলে মন্তব্য করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকার ক্ষমতায় আসবে, তাদেরকে বর্তমান সরকারের আমলে করা চুক্তিগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব চুক্তি চাইলেও সহজে বাতিল করা যায় না। সুতরাং চারদিকে যে জনদাবি উঠেছে, সরকারকে অবিলম্বে এসব চুক্তি থেকে ফিরে আসতে হবে।
আগামী ৩ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার ইতিমধ্যে স্বাক্ষরিত দুই চুক্তি বাতিল ও চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনাল নিয়ে চুক্তি করার অবস্থান থেকে ফিরে না এলে বাম গণতান্ত্রিক জোটসহ অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলো ৪ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা ঘেরাওয়ের যে কর্মসূচি দিয়েছে, তাতে সমর্থন জানান বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি, আপনি এখন বিপজ্জনক পথে হাঁটছেন। এই পথে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে যেতে পারবে কি না, সে সংশয় তৈরি হয়েছে। যাকে ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়া দেওয়া বলে। আপনারা এমন সব ইস্যু হাজির করছেন, যাতে বিভিন্ন সুপারপাওয়ারের বাংলাদেশে হস্তক্ষেপের জায়গাটা তৈরি হচ্ছে।’
চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীকে চ্যালেঞ্জ জানান লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম। তিনি বলেন, বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে যে চুক্তি করা হচ্ছে, তা না করে যদি ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা দিয়ে যদি নিজস্ব অর্থায়নে চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং টার্মিনালের উন্নয়ন করা যায়, তাহলে পাঁচ বছরের মধ্যে এ বিনিয়োগটা উঠে আসবে।
৬ হাজার ৭০০ কোটি বিনিয়োগ করার জন্য বাংলাদেশি বহু কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান রয়েছে উল্লেখ করে শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘বিদেশি কোম্পানিটি চট্টগ্রাম বন্দরকে ২১ ডলার করে দেওয়া হবে বলেছে। এরপর প্রায় ৮০ ডলারের মতো বৈদেশিক মুদ্রা তারা এখান থেকে নিয়ে যাবে। কেন আমরা বিদেশিদের সেই সুযোগটা দেব। দেশের অনেক ব্যবসায়ী আমাকে বলেছে, চট্টগ্রাম বন্দরকে ২১ ডলারের পরিবর্তে ৩০ ডলার দেবে। ৩০ বছরের চুক্তির জায়গায় তারা ১৫ বছরের চুক্তি করবে। ২৫০ কোটি টাকায় সাইনিং (স্বাক্ষর) মানির পরিবর্তে ৫০০ কোটি টাকায় সাইনিং করবে।’
অন্তর্বর্তী সরকার বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনের মতো ফরজ (গুরুত্বপূর্ণ) কাজের দিকে নজর না দিয়ে অন্য নফল (কম গুরুত্বপূর্ণ) কাজের দিকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ। তিনি বলেন, ‘ইউনূস সরকার আইনের কোনো তোয়াক্কাই করে না। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালসহ চট্টগ্রাম বন্দর ইজারা দেওয়ার ব্যাপারে হাইকোর্টে একটা রিট চলছে। সেই রিট চলাকালে বন্দর ইজারা দেওয়ার যে কার্যক্রম, সেগুলো সরকার পরিচালনা করছে, আইন–আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে।’
এসব চুক্তি বাতিল না করলে বড় ধরনের কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ।
কোনো দিবস পালন করবে কি করবে না, সেটি নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে পারলে বন্দরের মতো এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কেন আলোচনা করেনি, সে প্রশ্ন তোলেন গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল। তিনি বলেন, ‘দেশের স্বার্থ রক্ষা করতে চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে আমরা অতীতেও আন্দোলন করেছি, ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের সব বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের অবস্থান থাকবে।’
সভায় আরও বক্তব্য দেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক কবির হাসান, গণ অধিকার পরিষদের মুখপাত্র ফারুক হাসান, ভাসানী জনশক্তি পার্টির আবু ইউসুফ সেলিম প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাস্থ্য সেবায় ওষুধ শিল্পের লাইসেন্স প্রক্রিয়া সহজ করার তাগিদ
দেশে স্বাস্থ্য সেবা, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং ওষুধ শিল্পের টেকসই উন্নয়নে যুগোপযোগী নীতিমালা বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন এ খাতের উদ্যোক্তা এবং বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতাল, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও ওষুধ শিল্পের জন্য লাইসেন্স প্রাপ্তি এবং নবায়ন প্রক্রিয়া সহজ করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) আয়োজিত ‘স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা উঠে আসে। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান।
আরো পড়ুন:
অতিরিক্ত হাঁচি হলে শরীরে যেসব পরিবর্তন দেখা দিতে পারে
রাতে হাসপাতালে ভর্তি হলেন খালেদা জিয়া
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সাইদুর রহমান। সেমিনারে এফবিসিসিআইয়ের সাবেক পরিচালক, ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব হেলথ ইকোনমিকস বিভাগের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ। ওষুধের কাঁচামাল বা এপিআই (অ্যাক্টিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্টস) শিল্পে পিছিয়ে থাকাকে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্পের জন্য বড় হুমকি হিসেবে দেখছেন তিনি। পাশাপাশি, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং ওষুধ শিল্পের লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন সংক্রান্ত জটিলতাকে শিল্পের বিকাশে প্রতিবন্ধকতা বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মেডিকেল যন্ত্রপাতি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেএমআই গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, যুগোপযোগী একটি নীতিমালা বাস্তবায়ন না করা গেলে দেশে মেডিকেল যন্ত্রপাতি শিল্পের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই খাতের স্থানীয় উদ্যোক্তাদের সুরক্ষা এবং ইকো-সিস্টেম উন্নয়নে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এপিআই শিল্প প্রতিষ্ঠার জন্য একজন উদ্যোক্তাকে ৪৭টি সংস্থা থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয়ে। যা বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করে। এই শিল্পের লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া সহজ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে একটি ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালুর আহ্বান জানান তিনি।
লাইসেন্সিং প্রক্রিয় সহজ করা না গেলে বেসরকারি খাত স্বাস্থ্য সেবা, মেডিকেল ইকুয়িপমেন্টস এবং ঔষধ শিল্পে বিনিয়োগে আকৃষ্ট করা যাবে না বলে মনে করেন ব্র্যাক হেলথ প্রোগ্রামের ঊর্ধ্বতন পরিচালক মো. আকরামুল ইসলাম।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আসরাফ হোসেন জানান, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর তার দায়িত্ব দ্রুত এবং যথাযথ বাস্তবায়নে সর্বদা সচেষ্ট রয়েছে। কোন প্রতিষ্ঠান লাইসেন্সের জন্য আবেদন করলে তার সম্ভাব্যতা যাচাই সংক্রান্ত কাজে কিছু সময় লেগে যায়, ইচ্ছকৃত বিলম্ব করা হয় না।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান বলেন,ওষুধ শিল্পের লাইসেন্সিং প্রক্রিয়া আরো সহজ করতে সরকার ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চেষ্টা রয়েছে অন্তত ৩ বছর মেয়াদের জন্য লাইসেন্স প্রদানের।
পাশাপাশি, ওষুধ শিল্প এবং স্বাস্থ্য সেবা খাতের কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণে সরকারের কঠোর নজরদারির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এলডিসি পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের স্থানীয় শিল্প স্থাপন এবং আমদানি নির্ভরতা হ্রাসসহ গবেষণা ও উন্নয়নে জোর দেন স্বাস্থ্য সচিব।
দেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের গুরুত্ব তুলে ধরে মো. সাইদুর রহমান বলেন, সরকারের একার পক্ষে সব নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এজন্য সরকার, বেসরকারি খাত এবং একাডেমিয়ার মধ্যে সমন্বয় জরুরি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)–এর মহাপরিচালক গাজী এ কে এম ফজলুল হক জানান, মেডিকেল যন্ত্রপাতি শিল্পের জন্য স্বতন্ত্র একটি খসড়া নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে বিডা। যা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মূল্যায়ন, বিশ্লেষণ এবং পরামর্শের প্রেক্ষিতে বাস্তবায়ন হতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক মো. আবদুর রহিম খান। তিনি বলেন, “আয় সীমা অনুযায়ী সব নাগরিকের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।”
মানসম্মত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যয় যেন রোগীদের সাধ্যের মধ্যে থাকে সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এফবিসিসিআই’র প্রশাসক।
এর আগে এফবিসিসিআই’র মহাসচিব মো. আলমগীর বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতেরও অবদান ছিল অনেক। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্য সেবা খাতে সরকারের বরাদ্দ নগণ্য। স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়াতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। দক্ষ চিকিৎসক ও নার্সসহ হাসপাতালের সংখ্যাও বাড়াতে হবে।”
ঢাকা/নাজমুল/এসবি