জুলাই ফাউন্ডেশনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আহতদের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 10th, October 2025 GMT
সিদ্ধিরগঞ্জে জুলাই ফাউন্ডেশনে জিজ্ঞাসাবাদের নামে আহতদের উপর নির্যাতন বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধাদের উদ্যোগে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে আহত জুলাই যোদ্ধা এবং জুলাই ফাউন্ডেশনে নির্যাতনের শিকার জাহাঙ্গীর হোসেন এবং আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী জুলাই যোদ্ধা রাহাত হোসেন।
আহত জুলাই যোদ্ধা জাহাঙ্গীর হোসেন তার বক্তব্যে বলেন, আমি আর্থিক সহযোগিতার জন্য জুলাই ফাউন্ডেশনে আবেদন করি। তিন মাস পর আমাকে ডেকে নেয়। ডেকে নেওয়ার পর আমাকে বসিয়ে আমার সাথে অনেক খারাপ আচরণ করে।
এরপর আমাকে ভিতরে একটি নিয়ে যায় সেখানে অফিসের কোন কাজ চলে না পরিত্যক্ত। তিনটি রুম আছে টর্চার সেলের মত। এর ভিতরে ঢালাই বিছানা রয়েছে এবং জিআই পাইপ থাকে। এসময় জিআই পাইপ দিয়ে আমাকে বেধরক পিটায়।
তখন সইতে না পেরে আমার দুই ভাইকে ফোন দেই এবং তারা তাদেরকে বলে আপনারা তাকে মাইরেন না সে আসলেই জুলাই যোদ্ধা। আমাদের কাছে প্রমাণ আছে, মেডিকেলের কাগজপত্র রয়েছে। এরপরও আমার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি নেওয়ার জন্য ইচ্ছামত পিটায়। এরপর আমি সেখান থেকে চলে এসে হাসপাতালে ভর্তি হই। সে কাগজপত্রও আমার কাছে আছে।
আমার মনে একটাই কষ্ট স্বৈরাচার হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাইছে কিন্তু জুলাই ফাউন্ডেশন যে একটা স্বৈরাচারের ফাউন্ডেশন আমার আগে জানা ছিল না। ওইটার ভিতরে যাওয়ার পরই আমি বুঝছি যে এটা একটা টর্চার সেল। আমাকে এমন ভাবে মারধর করছে সেটা বলার মত না, একটা পশুকেও মানুষ এভাবে মারধর করে না।
ড.
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত হত্যা মামলার প্রধান স্বাক্ষী জুলাই যোদ্ধা রাহাত হোসেন বলেন, ৫ই আগষ্টের পরে নতুন পরবর্তী যে সাম্য, সামাজিক ন্যায় বিচারের বাংলাদেশের জন্য, এমনকি জুলাই আহত এবং শহীদ পরিবারের পূনর্বাসন এবং তাদেরকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য যে জুলাই শহীদ ও স্মৃতি ফাউন্ডেশন নামক ড. ইউনুছের একটা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছিল মানব কল্যাণের জন্য বা আহত কিংবা শহীদ পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য।
সেই প্রতিষ্ঠানের কিছু কিছু কর্মরত ব্যক্তিরা জিজ্ঞাসাবেদর নামে জুলাই যোদ্ধাদের ডেকে নিয়ে তাদেরকে যে অত্যাচার নির্যাতন করা হয়েছে এই এখতিয়ার কিন্তু জুলাই ফাউন্ডেশনের নাই। আমরা চাই এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার হউক। ড. ইউনুছের কাছে আবেদন এই বিষয়টি উদঘাটন করে যেন সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জুলাই যোদ্ধা সাবিনা ইয়াছমিন, সুমন খান, আল আমিন, সিরাজুল, বুলবুল সিকদার, যুবায়ের, মেদেহী, বাবু, রুবেল, মাসুম, রাকিবুল হোসেন, আলমগীর, নাদিম, ইয়াসিন, মুন্না, সাব্বির হোসেন, সৌরভ, রতন ও শ্রাবণসহ প্রমূখ।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ঠাকুরগাঁওয়ে বাউলদের মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে হামলা, আহত ২
মানিকগঞ্জে বাউলদের ওপর হামলার বিচার ও বাউলশিল্পী আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে ঠাকুরগাঁওয়ে মানববন্ধনের প্রস্তুতিকালে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে শহরের আদালত চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।
‘তৌহিদী জনতার’ ব্যানারে একদল যুবক এই হামলা চালান বলে অভিযোগ। হামলাকারীদের মারধরে দুজন বাউলশিল্পী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার দুপুরে ‘সম্প্রীতির ঐক্য, ঠাকুরগাঁও’ ব্যানারে শহরের চৌরাস্তা মোড়ে মানববন্ধন আহ্বান করেন বাউলশিল্পীরা। কিন্তু মানববন্ধন শুরুর আগে বেলা দেড়টার দিকে আদালত চত্বর এলাকায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি শামসুল চিশতি ও ঠাকুরগাঁও পৌরসভার হঠাৎপাড়ার মোকলেস পাগলা নামে দুজন বাউলশিল্পীকে পেয়ে তৌহিদী জনতার ব্যানারে ৪০ থেকে ৫০ জনের একদল যুবক তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করেন।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সারোয়ার আলম খান বলেন, বাউলশিল্পীদের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ কারণে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু মানববন্ধনের আগে কোর্ট চত্বর এলাকায় বাউলদের ওপর হামলা চালান একদল যুবক। বাউলশিল্পীদের লিখিতভাবে অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক রেজওয়ানুল হক বলেন, কর্মসূচি পালনের জন্য বাউলশিল্পীরা আদালত চত্বরে জড়ো হচ্ছিলেন। এ সময় একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ মিছিল নিয়ে এসে বাউলশিল্পীদের ওপর হামলা চালান। প্রত্যেক মানুষের মতপ্রকাশের অধিকার রয়েছে। কিন্তু বাউলশিল্পীদের মারপিটের ঘটনা দুঃখজনক।