কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা করার পাশাপাশি তথ্য বিশ্লেষণ ও দৈনন্দিন কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করার সুযোগ দিতে ‘জেমিনি এন্টারপ্রাইজ’ নামের নতুন এআই প্ল্যাটফর্ম চালু করছে গুগল। গুগলের উন্নত জেমিনি ২.৫ ফ্ল্যাশ ইমেজ (নানো বানানা), ইমাজেন ও ভিও জেনারেটিভ এআই মডেল কাজে লাগিয়ে দ্রুত বিভিন্ন কাজ করতে পারে জেমিনি এন্টারপ্রাইজ। জেমিনি এন্টারপ্রাইজ প্ল্যাটফর্মটিতে বিশেষায়িত এআই এজেন্ট যুক্ত থাকায় বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণা, বিশ্লেষণ ও কাজ এক জায়গাতেই করা যাবে বলে দাবি করেছে গুগল।

গুগলের তথ্যমতে, জেমিনি এন্টারপ্রাইজে রয়েছে নো কোড ওয়ার্ক বেঞ্চ, যা ব্যবহারকারীদের কোনো প্রোগ্রামিং জ্ঞান ছাড়াই নিজস্ব কাজের প্রবাহ তৈরি করতে সাহায্য করবে। ফলে প্রযুক্তিগত দক্ষতা ছাড়াই জেমিনি এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে বিপণন, বিক্রয়, প্রকৌশল, মানবসম্পদ ও অর্থ বিভাগের কাজ দ্রুত নির্ভুলভাবে করা যাবে। এর মাধ্যমে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে দলগত কাজ সহজে ও নিরাপদে করার সুযোগ মিলবে।

বর্তমানে বিশ্বের অনেক বড় প্রতিষ্ঠান এআই ব্যবহারে প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। কেপিএমজির এক জরিপে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এক শোর বেশি বড় প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই পরীক্ষামূলক ধাপেই আছে। এমআইটির এক গবেষণায় বলা হয়েছে, ৩০০টির বেশি প্রতিষ্ঠান জেনারেটিভ এআইতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেও কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি। প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের ধারণা, বিশাল এই বাজার নিজেদের দখলে নিতেই জেমিনি এন্টারপ্রাইজ উন্মুক্ত করছে গুগল।

গুগল জানিয়েছে, জেমিনি এন্টারপ্রাইজ গুগল ওয়ার্কস্পেস, মাইক্রোসফট ৩৬৫, শেয়ারপয়েন্ট, সেলসফোর্স ও এসএপির মতো জনপ্রিয় ব্যবসায়িক সফটওয়্যারের সঙ্গে সহজেই যুক্ত করা যাবে। জেমিনি এন্টারপ্রাইজের স্ট্যান্ডার্ড ও প্লাস সংস্করণ ব্যবহারের জন্য প্রতি মাসে গুনতে হবে ২১ থেকে ৩০ ডলার।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা

জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।

দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপট

হাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’

এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫

অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)

আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।

দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকত

এই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯

আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।

আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।

দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ