ইলিশ মাছ উৎপাদনে পোনা ছাড়তে হয় না, খাবার দিতে হয় না, তা–ও এত বেশি দাম কেন—সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে কোনো ‘ভালো উত্তর’ এখনো পাননি বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেছেন, ‘দায়িত্ব নেওয়ার আগে থেকেই আমার মনে প্রশ্ন ছিল—ইলিশের এত দাম কেন।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে বিশ্ব খাদ্য দিবসের এক অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন তিনি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

মাসুদুল হাসান। কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা এই সেমিনারে আয়োজন করে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, ইলিশের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বলা হয় মাছ ধরতে খরচ বেশি। আবার মধ্যস্বত্বভোগীদের জন্য দাম বেড়ে যায়। ঢাকা এলে দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়। গবেষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব বিষয় জেনেছি। এসব নিয়ে আরও কাজ করার আছে।

আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের বলেন, এখন ধানের জমিতে অতিরিক্ত সার ও কীটনাশক ব্যবহারের কারণে কোনো মাছ হয় না। এগুলোর ব্যবহার কমানো নিয়ে গবেষণা করা দরকার। প্রাণী খাদ্যের দামের কারণে মাছ ও দুধ ডিমের দাম বেড়ে যায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রথম আলোর সংবাদ উদ্ধৃত করে সচিব বলেন, পত্রিকায় দেখলাম এখন বিড়ালের জন্যও বছরে ৪০০ কোটি টাকার বিদেশি খাদ্য আমদানি করতে হয়। কিন্তু আমাদের সময়ে বিড়ালের জন্যে বাজার থেকে খাবার আনতে হতো না। এসব খাবার এখন দেশেই তৈরি করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্যসচিব মো. মাসুদুল হাসান বলেন, দেশের কৃষি উৎপাদনের সাফল্যের পেছনে প্রধান ভূমিকা কৃষক ও কৃষিবিদদের। উৎপাদনকারীদের সঙ্গে বাজারের সংযোগ খুবই সামান্য। তাই কৃষকদের অবস্থা এখন এখন হাসন রাজার ‘পরের জায়গা পরের জমি’ গানের মতো।

আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী খন্দকার মো. ইফতেখারুদ্দৌলা বলেন, ‘আমাদের দেশের প্রায় ৭৬ শতাংশ জমি মোটামুটি অনুর্বর ধরনের, যার পরিমাণ বাড়ছে। বছরে মাথাপিছু খাদ্যের অপচয় আবার গড়ে ৮২ কেজি। তাই দুর্যোগপ্রবণ এই দেশে খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য সব সময় প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। কোনো একক প্রতিষ্ঠান বা কারও একার পক্ষে এটা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এ জন্য শিক্ষক, গবেষক, সরকার, কৃষক সবাই মিলে কাজ করতে হবে।

এর আগে সেমিনারের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এইচ এম সাইফুল ইসলাম। বক্তব্য দেন জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দিয়া সানো। অনুষ্ঠান শেষে চিত্রাংকন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

সাত কলেজ নিয়ে গুজব ছড়ানোর বিষয়টি উদ্বেগজনক: শিক্ষা উপদেষ্টা

শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেছেন, “সাত কলেজকে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ও ভ্রান্ত তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় দ্বিধা তৈরি করছে।”

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় শিক্ষা সচিব রেহেনা পারভীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

কুবিতে নিম্নমানের খোয়া ব্যবহারের অভিযোগে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিলেন ছাত্রদল নেতা

‘সাজিদ হত্যার ৯০তম দিন, এরপর কি আমি?’

তিনি বলেন, “বিভিন্ন গ্রুপে গুজব ছড়ানো মোটেও কল্যাণকর নয়।”

তিনি আরও জানান, “উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে এবং সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া বিবেচনায়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নেতৃত্বে সিরিজ সভা ও মন্ত্রণালয়ের নিবিড় উদ্যোগের মাধ্যমে পরিকল্পনাটি এগোয়। ইতিমধ্যে অনলাইনে প্রায় ৪,৫০০ মতামত সংগৃহীত হয়েছে এবং বিভিন্ন লিখিত মন্তব্যও পাওয়া গেছে। এগুলো মন্ত্রণালয়ের ১২ সদস্য যাচাই করছেন।”

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় আমরা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপে আছি। আশা করছি, আগামী ২০, ২১ ও ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সভায় এই বিষয়গুলো উপস্থাপন ও আলোচনার মাধ্যমে ড্রাফট তৈরি করে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।”

ড. আবরার বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং কাজ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “যতটা সম্ভব নিয়ম, নীতি এবং উৎসাহের মধ্য দিয়ে আমরা এগোচ্ছি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করাই মূল লক্ষ্য।”

ঢাকা/এএএম/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ