বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে যুক্ত হলো ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি খাতের শীর্ষ ব্র্যান্ড ওয়ালটন। আর্জেন্টিনা দলের অফিশিয়াল রিজিওনাল স্পন্সর হলো ওয়ালটন। 

এর ফলে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সব ধরনের ব্র্যান্ডিং স্বত্ত্ব লাভ করলো ওয়ালটন। এখন থেকে ওয়ালটন পণ্যের নানান ধরনের ব্র্যান্ডিং কার্যক্রমে দেখা যাবে মেসি-মার্টিনেজদের, যা প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম শীর্ষ গ্লোবাল ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

আরো পড়ুন:

আলবার বিদায়ী রাতে মেসির রেকর্ড

মেসির তিন অ্যাসিস্টে আর আলবার জোড়া গোলে মায়ামির দাপুটে জয়

সম্প্রতি আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এএফএ) এবং ওয়ালটনের মধ্যে এ উপলক্ষ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আগামি এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ওয়ালটন এবং এএফএ। বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে ওয়ালটনের সঙ্গে এই পার্টনারশিপের ঘোষণা দিয়ে পোস্ট করেছে এএফএ। 

যেখানে ওয়ালটনের অত্যাধুনিক সুবিশাল কারখানা ও বিভিন্ন পণ্যের সঙ্গে দেখা গেছে আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলারদের। এর আগে অফিশিয়াল ওয়েসবাইটেও অন্যান্য স্পন্সরদের সঙ্গে ওয়ালটনের নাম ও লোগো প্রকাশ করেছে এএফএ।

উল্লেখ্য, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনাকে নিয়ে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মাঝে অন্যরকম এক আবেগ কাজ করে। ফলে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ডের সম্পৃক্ততা দেশের ক্রীড়াপ্রেমীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের সৃষ্টি করেছে। আগামী ফুটবল বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার সঙ্গে থাকছে ওয়ালটন যা ফুটবলভক্তদের কাছে অত্যন্ত গৌরব ও আবেগের। ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপে মাঠ মাতাবে আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়েরা। আর ঘরে ঘরে বিশ্বজুড়ে ওয়ালটন মাতাবে কোটি কোটি ক্রেতার মন।

এ প্রসঙ্গে ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার জোহেব আহমেদ বলেন, ‘‘বাংলাদেশে ফুটবল বিশ্বকাপ এক উন্মাদনার নাম। বিশ্বকাপ ঘিরে সমর্থকদের মধ্যে দেখা যায় বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা। বিশেষ করে বাংলাদেশে লাতিন আমেরিকার ফুটবলের অগণিত ভক্ত-সমর্থক রয়েছেন। আর্জেন্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে ওয়ালটনের এই পার্টনারশিপের মাধ্যমে বাংলাদেশের ফুটবলভক্তদের কাছে আরো সহজে পৌঁছানো সহজ হবে। এর মাধ্যমে আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সঙ্গে বাংলাদেশের ভক্ত-সমর্থকদের মাঝে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করবে ওয়ালটন।’’

তিনি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হলো- বিশ্ববাসীর কাছে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশকে ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তি পণ্যের হাব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি ওয়ালটন ব্র্যান্ডকে বিশ্বের অন্যতম সেরা গ্লোবাল ব্র্যান্ডে পরিণত করা। সেজন্য বিশ্বের শতাধিক দেশে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের টার্গেট নিয়ে বৈশ্বিক বাজারে কাজ করছি আমরা। ইতোমধ্যে ৫০টিরও বেশি দেশে পরিচালিত হচ্ছে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে শতাধিক দেশে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের লক্ষ্য অর্জনের পথ আরো সুগম হবে। কেননা বিশ্বব্যাপী আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের অগণিত ভক্ত রয়েছে।’’

সংশ্লিষ্টদের মতে, বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা দলের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি ব্র্যান্ডের যুক্ত হওয়া অত্যন্ত গৌরবের। মেসিভক্তরা মনে করছেন, আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের সঙ্গে ওয়ালটনের সম্পৃক্ততা শুধু ব্র্যান্ডিংয়েই নয়, বরং বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের অবস্থানকে আরও দৃঢ়ভাবে তুলে ধরবে।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আর জ ন ট ন জ ত য় ফ টবল দল র ন আর জ ন ট ন ব শ বক প

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে রোহিঙ্গা যুবক আটক

নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট করতে এসে আটক হয়েছেন আজিজ খান নামের এক রোহিঙ্গা যুবক। সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের সময় তার পরিচয় গরমিল ধরা পড়লে অফিসের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন।

পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, প্রথমে সবকিছুই স্বাভাবিক মনে হচ্ছিল। তিনি নিজেকে হাফেজ পরিচয় দিয়ে “আব্দুল আজিজ” নাম ব্যবহার করেন। বয়স দেখানো হয় ২৫ বছর, জন্ম তারিখ ২০০০ সালের ১০ জানুয়ারি। বাবার নাম হাজী নজিবুল্লাহ এবং মায়ের নাম শুকরা বেগম উল্লেখ করেন তিনি।

কিন্তু বায়োমেট্রিক স্ক্যানেই বদলে যায় পুরো চিত্র। মিলানোর সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যায় তার আসল পরিচয়—তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন; তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী আজিজ খান।

রোহিঙ্গা তথ্য অনুযায়ী তার প্রকৃত জন্ম তারিখ ২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি, পিতার নাম সালামত খান। তিনি বাংলাদেশে প্রবেশ করেন ২০১৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। তার রোহিঙ্গা রেফারেন্স নম্বর—১০৮২০১৮০৪১০০৮১৯৩৫।

জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া তথ্যে দেখা যায়, বর্তমান ঠিকানা দেখানো হয়েছিল মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা গ্রাম। এখান থেকেই তিনি চলতি বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করেন। স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের দক্ষিণ হাশিমপুরে। আর পাসপোর্টের আবেদনে বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করেন সোনারগাঁওয়ের কাঁচপুর এলাকা।

নজিবুল্লাহ ও শুকরা বেগম নামে যাদের বাবা–মায়ের তথ্য দেওয়া হয়েছিল, তাদের ঠিকানা দেখানো হয় চট্টগ্রামের চন্দনাইশের খাজীরপাড়া ও হাশিমপুর এলাকায়। দুজনই চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর এনআইডি সংগ্রহ করেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তারা জানান, আজিজ খান বেশ কিছুদিন ধরে ভুয়া পরিচয় ব্যবহার করে পাসপোর্ট নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যও অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বানানো হয়েছিল। তাদের সন্দেহ—এ ঘটনায় সংগঠিত কোনো দালালচক্র জড়িত।

নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের উপপরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন তিনি রোহিঙ্গা। তিনি ১৮ হাজার টাকার বিনিময়ে মুন্সীগঞ্জ থেকে এনআইডি সংগ্রহ করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা নিয়মিতভাবেই আবেদনকারীদের সব নথি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করি। আজ যে ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে, তিনি ভুয়া এনআইডি ও ভুয়া তথ্য ব্যবহার করে পাসপোর্ট নিতে এসেছিলেন।

বায়োমেট্রিক যাচাইয়ে তাঁর প্রকৃত পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পরই আমরা তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে সোপর্দ করি। পাসপোর্ট একটি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ নথি—এখানে কোনোভাবেই ভুয়া তথ্য গ্রহণযোগ্য নয়।”

তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা বা অন্য কোনো বিদেশি নাগরিক ভুয়া পরিচয়ে পাসপোর্ট নিতে এলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি আবেদন শতভাগ যাচাই নিশ্চিত করতে আমাদের কার্যালয় আরও সতর্কভাবে কাজ করছে। আমরা চাই, শুধুমাত্র সঠিক নাগরিকই যেন বাংলাদেশের পাসপোর্ট পান।”

আটক আজিজ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন দালালচক্র ও সংশ্লিষ্টদের খুঁজে দেখছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।

উপপরিচালক শামীম আহমেদ আরও বলেন, “বাংলাদেশি পরিচয়ে বিদেশে যাওয়ার জন্য রোহিঙ্গাদের একটি বড় অংশ দালালচক্রের খপ্পরে পড়ছে।

ভুয়া জন্মনিবন্ধন, ভুয়া এনআইডি—সবই তৈরি করা হচ্ছে মোটা টাকার বিনিময়ে। এ ধরনের জালিয়াতি রোধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় আরও জোরদার করা হবে।” 

সম্পর্কিত নিবন্ধ