রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ(রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট-এ ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ দলের সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। 

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

রাকসু: ‘এক ঘষাতেই’ মুছে গেছে অমোচনীয় কালির দাগ

রাকসু নির্বাচনে নানা অসঙ্গতির অভিযোগ বাম সমর্থিত প্যানেলের

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা নির্বাচনে ভোট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে কোনো অসঙ্গতি পাইনি। ভোটগ্রহণ অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। তবে কিছু কিছু ভোটকেন্দ্রে ভোটার বেশি হওয়ার কারণে অব্যবস্থাপনা লক্ষ্য করা গেছে।”

প্রার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের কাছে কোনো প্রার্থী অভিযোগ করেননি। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা কিছু অভিযোগ দেখেছি। কেউ সরাসরি আমাদের কাছে অভিযোগ করেননি।”

এর আগে, আজ সকাল ৯টায় শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে এই ভোট। ভোটগ্রহণের ৪ ঘণ্টার পর রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে শুরু হয় গণনা।

ঢাকা/কেয়া/ফাহিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নিজ দেশে ভ্রমণের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের আইন কী বলে

প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো মানুষ রাজনৈতিক নিপীড়ন ও নিরাপত্তাহীনতার কথা তুলে ধরে যুক্তরাজ্যে আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এই আবেদন মঞ্জুর হলে সরকার প্রথমে পাঁচ বছরের জন্য সুরক্ষাভিত্তিক থাকার অনুমতি দেয়। এই মেয়াদ পূর্ণ হলে দেওয়া হয় ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন (আইএলআর)’ বা স্থায়ী বসবাসের সুযোগ। এর অন্তত ১২ মাস পর যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করা যায়। এখানে উতরে গেলে পাওয়া যায় ব্রিটিশ পাসপোর্ট। তখন ইচ্ছেমতো বিদেশ ভ্রমণ ও যুক্তরাজ্যে ফেরার অধিকার পান আশ্রয়প্রার্থী ওই ব্যক্তি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক–এগারোর পটপরিবর্তনের পর গ্রেপ্তার হন এবং ২০০৮ সালে কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবার যুক্তরাজ্যে যান। এর পর থেকে তিনি লন্ডনে বসবাস করছেন। তারেক রহমান যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পর রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে। তবে বর্তমানে তিনি কোন মর্যাদায় আছেন, সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সম্প্রতি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়। তবে তিনি কোন প্রক্রিয়ায় ফিরবেন, সেটা জানা যায়নি।

যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তি তাঁর প্রয়োজন অনুযায়ী বা ইচ্ছেমতো নিজ দেশে ফিরতে পারেন কি না, সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল ইংল্যান্ডের অভিবাসন ও মানবাধিকার আইনে বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেনের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া মানে আশ্রয়দাতা দেশে নিরাপত্তাহীনতা থেকে সুরক্ষা পাওয়া। তাই আইএলআর তথা স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাওয়ার পরেও নিজ দেশে ফিরে গেলে যুক্তরাজ্য সরকার কর্তৃপক্ষ তথা হোম অফিস ধারণা করতে পারে যে নিজ দেশে ওই ব্যক্তির আর কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। এতে তার রিফিউজি স্ট্যাটাস ও আইএলআর দুটোই ঝুঁকিতে পড়ে।’

সাধারণ অভিবাসীদের জন্য যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি (আইএলআর) পাওয়ার পর অন্য দেশে যাওয়া এবং আবার ফিরে আসার আইনগত অধিকার থাকে। তবে যুক্তরাজ্যের বাইরে টানা দুই বছরের বেশি অবস্থান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আইএলআর বাতিল হতে পারে। তখন আবার আসতে চাইলে পুনরায় ভিসা (রিটার্নিং রেসিডেন্ট) লাগে।

তবে আশ্রয়প্রাপ্তদের ক্ষেত্রে এটা আরও বড় ঝুঁকি তৈরি করে বলে জানান লন্ডনে আইন পেশায় নিয়োজিত ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘নিজ দেশে ভ্রমণই আশ্রয়দাবির বিরোধী। কারণ, যে নিপীড়নের ভয় দেখিয়ে আশ্রয় নেওয়া হয়েছিল, সেই দেশে যেতে পারলে যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্তৃপক্ষ মনে করতে পারে আশ্রয়ের প্রকৃত কারণ আর নেই। এতে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি (আইএলআর) বাতিলের পথও খুলে যায়। যদি ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে থাকাকালে এটি বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়, তবে আপিলের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বাইরে অবস্থানকালে বাতিল হলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে। তখন যুক্তরাজ্যে ফিরে আসা সম্ভব না–ও হতে পারে।’

যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় পাওয়া ব্যক্তিদের জন্য হোম অফিস একটি বিশেষ ‘রিফিউজি ট্রাভেল ডকুমেন্ট’ দেয়। এই নথি ব্যবহার করে আশ্রয়প্রাপ্তরা নিজ দেশ ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশে ভ্রমণ করতে পারেন। তবে যে দেশে নির্যাতনের আশঙ্কার কথা বলে আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, সেই দেশে এই ভ্রমণ নথি ব্যবহার করা যায় না।

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রাপ্ত কোনো বাংলাদেশি যদি স্বদেশে যেতে চান, তাহলে তাঁকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট বা বাংলাদেশ সরকারের ইস্যু করা ভ্রমণ পারমিট ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু এতে গুরুতর আইনি ঝুঁকি তৈরি হয়। যুক্তরাজ্যের হোম অফিস এটি ধরে নিতে পারে যে আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা আর নেই এবং সেই দেশে আর কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই। এর ফল হিসেবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির রিফিউজি স্ট্যাটাস বা মানবিক সুরক্ষার মর্যাদা বাতিল হতে পারে। একই সঙ্গে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি হারানোর ঝুঁকিও দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি যুক্তরাজ্যে ফিরে আসতে না–ও পারেন এবং ফিরতে চাইলে নতুন ভিসা বা অন্যান্য আইনগত প্রক্রিয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

নাগরিকত্ব ত্যাগের বিধান কী

যদি কোনো ব্যক্তি যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্ব ত্যাগ করতে চান, তাহলে হোম অফিস বরাবর একটি আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হয়। এই প্রক্রিয়া শেষ হতে সাধারণত দুই থেকে তিন মাস (৮–১২ সপ্তাহ) সময় লাগে। আবেদন মঞ্জুর হলে হোম অফিস একটি প্রমাণপত্র জারি করবে এবং ওই তারিখ থেকেই এটি কার্যকর হবে। নাগরিকত্ব ত্যাগের পর যুক্তরাজ্যে থাকতে চাইলেও বসবাসের অধিকার আর থাকবে না। এ ক্ষেত্রে নতুন ভিসা বা অনুমোদনের প্রয়োজন হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ