রাকসুতে শিবিরের প্যানেলে সনাতন ধর্মালম্বী সুজন জয়ী
Published: 17th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল থেকে কার্যনির্বাহী সদস্য পদে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন সনাতন ধর্মালম্বী শিক্ষার্থী সুজন চন্দ্র।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিক ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
রাকসু: ছাত্রীদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ ছাত্রদল
এইচএসসির ফলের আড়ালে চোখের জল, শিক্ষায় কীসের সংকেত
সুজন চন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার বাড়ি দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায়।
সনাতন ধর্মালম্বী হয়ে শিবিরের সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট থেকে নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সুজন চন্দ্র বলেন, ‘‘শিবিরের প্যানেলে আসার অন্যতম প্রধান কারণ ছিল তাদের আদর্শ ও নীতিবোধ আমাকে সবসময় আকর্ষণ করে। ছাত্রশিবির সবসময় মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী এবং শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষাবান্ধব কার্যক্রমের মাধ্যমে এগিয়ে আছে। সেখান থেকে দাঁড়িয়ে আমি নির্বাচিত হয়েছি। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’
ঢাকা/ফাহিম/বকুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে…’
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিলো দুইটি ফর্মে। একটি হরো সম্মুখ যুদ্ধ আরেকটি হলো সাংস্কৃতিক যুদ্ধ। আপেল মাহমুদ শুরুতে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন একাত্তরের জুনে সাংস্কৃতিক যুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীন বাংলাদেশে তাকে যখন ডাকা হয় যুদ্ধক্ষেত্র ছেড়ে আসার সময় আপেল মাহমুদ ভাবছিলেন, ‘আমি আসলে কতটুকু কী করতে পারবো!’ কিন্তু তিনি ধীরে ধীরে বুঝতে পারেন- এটার প্রভাবও কম নয়।
আপেল মাহমুদ একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ডভাবে লড়াকু করে তোলার জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অসাধারণ ভূমিকা ছিলো। বিশেষ করে তার সুরকরা ও গাওয়া ‘‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি/ মোরা একটি মুখের হাসির জন্য অস্ত্র ধরি’’—গানটি মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলো।
আরো পড়ুন:
আজ খোকসা মুক্ত দিবস
আজ ঠাকুরগাঁও মুক্ত দিবস
গানের স্রষ্টা হিসেবে আপেল মাহমুদ যতখানি কৃতিত্বের দাবিদার ঠিক ততখানিই গোবিন্দ হালদারও। পশ্চিমবঙ্গের গীতিকার গোবিন্দ হালদার এই গানের কথাগুলো লিখেছিলেন একাত্তরের এপ্রিলে। জুন মাস নাগাদ গানের খাতাটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে পৌঁছায়। গোবিন্দ হালদার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘আপেল মাহমুদ তো অতি অল্প সময়ের মধ্যে ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাব বলে যুদ্ধ করি’ গানটির সুর করে ফেললেন। সুর করে তিনি লোহানী সাহেব ও অন্যদের শোনালেন। একদিন কামাল ভাইকে ডেকে নিয়ে গিয়েও গানটি তাঁকে শোনানো হলো। সবাই মোটামুটি তার সুর পছন্দ করলেন’’।
এরপর আপেল মাহমুদ গানটি রেকর্ড করেন এবং স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে তার কণ্ঠেই গানটির প্রচার শুরু হয়। ১৯৭১-এর জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ থেকে প্রচার করা হয়।
স্বাধীন বাংলা বেতারের দেশাত্মবোধক সংগীতের অনুষ্ঠানে নিয়মিত গানটি প্রচারিত হতো। গানটি প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে বিরাট সাড়া পড়ে গেল। বাংলাদেশের মাঠ-ঘাট-প্রান্তর, প্রতিটি ঘর, মুক্তিযোদ্ধাদের শিবিরে পৌঁছে গিয়েছিলো এর সুর ও আহ্বান। আপেল মাহমুদ রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে গেলেন।
আপেল মাহমুদ এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেন, ‘‘১৯৭১ সালের জুন মাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রই ছিল তাদের ঠিকানা। সেখানে থাকা-খাওয়া, গান বাঁধা ও গাওয়াই ছিল রুটিন’’।
এই গানটি ২০০৬ সালে বিবিসি কর্তৃক সর্বশ্রেষ্ঠ গানের একটি হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
ঢাকা/লিপি