গোপালগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব
Published: 19th, November 2025 GMT
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে অনুষ্ঠিত হলো দিনব্যাপী গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার কৃষ্ণাদিয়া শেখ আব্দুর রাজ্জাক আলিম মাদরাসায় আয়োজিত এ উৎসবে অংশ নেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। অনুষ্ঠানে ৫০ জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় উপবৃত্তি।
মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ছয়টি স্টলে চিতই, ভাপা, পুলি, তক্তি, নকশি পিঠা, ডিমের পুডিং, পাটিসাপটা, ঝাল চন্দ্রকোনা, চন্দনকুলি, দুধ খেঁজুর, নারকেলের চিড়া, রসপান, হৃদয়হরণ, গোকুলসহ প্রায় ৫০ ধরনের পিঠা নিয়ে যোগ দেন শিক্ষার্থীরা। তাদের বানিয়ে আনা পিঠার স্বাদ নিতে ও কিনতে স্টলগুলোতে ভিড় করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। উৎসবে মেতে উঠে বিভিন্ন রকমের পিঠার স্বাদ নেন তারা।
আরো পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
উৎসবে বিভিন্ন ধরনের পিঠা নিয়ে অংশ নেন ছাত্রীরা
অনুষ্ঠানে মাদরাসার ৫০ জন শিক্ষার্থীর হাতে ৪০ হাজার টাকার উপবৃত্তি ও শেষে মেলায় অংশ নেওয়া ছয়টি স্টলের সবার হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন গোপালগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি উপ-সচিব ও পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন হবিগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা.
প্রধান অতিথি গোপালগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির উপসচিব ও পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, “শুধু পাঠ্যবই নয়, শিক্ষার্থীদের নৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় বিকাশের জন্য এ ধরনের আয়োজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন এবং ভার্চুয়াল জগতের আসক্তি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে সাংস্কৃতিক ও সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের কোনো বিকল্প নেই। এমন পিঠা উৎসব আয়োজনের মধ্যে দিয়ে হারানো ঐতিহ্য ফিরে আসবে বলে মনে
করছি।”
মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শেখ নাজিম উদ্দিন বলেন, “এই মাদরাসার উন্নয়ন কাজ ইতোমধ্যে অনেক এগিয়ে গেছে। পুরো মাদরাসা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে, উপবৃত্তি চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, স্মার্ট লাইব্রেরি ও প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীরা মোবাইলের ক্ষতিকর ব্যবহার থেকে দূরে থেকে ইসলামি আদর্শে গড়ে উঠুক। পিঠা উৎসব, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও উপবৃত্তি প্রদান-এসব শিক্ষার্থীদের মনন বিকাশের অংশ।”
ঢাকা/বাদল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উৎসব গ প লগঞ জ ম দর স র অন ষ ঠ ন উপব ত ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে অভয়ারণ্যের মেহেদি উৎসব
হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফেরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মেহেদি ও নবান্ন উৎসবের আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন অভয়ারণ্য।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় তারা এ আয়োজন করে।
আরো পড়ুন:
খাগড়াছড়িতে চলছে রাস উৎসব ও মেলা
পুণ্যস্নান মধ্য দিয়ে কুয়াকাটায় শেষ হলো রাস উৎসব, মেলা চলবে ৫ দিন
সরেজমিনে দেখা যায়, মেহেদি ও নবান্ন উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক উপস্থিতি। রঙিন কাগজের সাজে পুরো স্থানজুড়ে তৈরি হয়েছিল উৎসবের আমেজ। পরিবেশবান্ধব বার্তা বহনকারী ঝুলন্ত ডেকোরেশন, প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার স্টল এবং সাহিত্য–সংস্কৃতির বিভিন্ন উপস্থাপনা দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে।
শিক্ষার্থীরা জানান, অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নেয়। প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার হার কমে গেলেও এ আয়োজন সেই ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে।
ফাতিমা খাতুন নামে ইবির এক শিক্ষার্থী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠনগুলোর মধ্যে অভয়ারণ্য সবসময়ই ব্যতিক্রম। আজ মেহেদি উৎসবে এসে আমার অনেক ভালো লাগছে। আজকাল প্রাকৃতিক মেহেদি দেওয়ার সংস্কৃতি অনেকটাই কমে গেছে। তারা সেই সংস্কৃতিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তাছাড়া নবান্ন উৎসব যেখানে একদম বিলীনপ্রায়, সেখানে তারা এটারও আয়োজন করেছে। আশা করছি, এ রকম সুন্দর আয়োজন চলমান থাকবে।”
সংগঠনটির সভাপতি নাইমুল ফারাবী বলেন, “আমরা এবার দ্বিতীয়বারের মতো মেহেদি উৎসবের আয়োজন করছি। একসময় মেয়েদের হাত সর্বদা মেহেদীর রঙে রাঙা থাকত। কিন্তু প্রযুক্তির উন্নয়নের কারণে এ চর্চা এখন কমে গেছে। এটাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।”
তিনি বলেন, “আজ যে মেহেদি দেওয়া হচ্ছে, সেটা আমাদের সংগঠনের রোপণ করা গাছের পাতা থেকে তৈরি। এর মাধ্যমে আমরা শুদ্ধতা ছাড়িয়ে দিতে চাই।”
তিনি আরো বলেন, “মেহেদি উৎসবের পাশাপাশি আমরা এবার প্রথমবারের মতো নবান্ন উৎসব আয়োজন করেছি। এর মাধ্যমে আমার বাংলার সংস্কৃতিকে পূনর্জ্জীবিত করতে চাচ্ছি। বাংলার বহুল প্রচলিত সংস্কৃতিকে যাতে করে শিক্ষার্থীরা পুনরায় ধারণ করতে পারে, সেজন্য আমাদের এই আয়োজন।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী