লা লিগার একটি ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন লিগটির খেলোয়াড়েরা। তবে শুক্রবার রাতে প্রথমবারের মতো করা প্রতিবাদটি সরাসরি টেলিভিশনে দেখানো হয়নি। রিয়াল ওভিয়েদো ও এস্পানিওলের মধ্যকার ম্যাচ সম্প্রচারের সময় খেলার প্রথম ২৫ সেকেন্ডে মাঠের পরিবর্তে স্টেডিয়ামের বাইরের দৃশ্য দেখানো হয়। কারণ, সে সময় খেলোয়াড়েরা খেলা থামিয়ে ১৫ সেকেন্ডের নীরব প্রতিবাদ জানান।

ম্যাচটি মাঠে গড়ানোর কয়েক ঘণ্টা আগে স্প্যানিশ ফুটবলারদের সংগঠন (এএফই) ঘোষণা দেয়, শুক্র থেকে সোমবার পর্যন্ত নবম রাউন্ডের প্রতিটি ম্যাচের শুরুতেই খেলোয়াড়েরা একইভাবে প্রতিবাদ জানাবেন। লিগের ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেই তাদের এই প্রতিবাদ।

খেলোয়াড়দের সংগঠন এএফই এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘খেলোয়াড়েরা প্রতীকীভাবে প্রতিবাদ জানাবে, যেন লা লিগার যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাচ আয়োজনের সম্ভাবনা নিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতার অভাব, সংলাপের ঘাটতি এবং নীতিগত অসংগতির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান তুলে ধরা যায়।’

আরও পড়ুনঅনিচ্ছা সত্ত্বেও বার্সেলোনাকে মায়ামিতে খেলার অনুমতি দিল উয়েফা ০৭ অক্টোবর ২০২৫

গত সপ্তাহে লা লিগা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, আগামী ২০ ডিসেম্বর বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের মধ্যকার ম্যাচটি মায়ামিতে অনুষ্ঠিত হবে। এই ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় এএফই জানিয়েছে, শীর্ষ লিগে ২০ দলের অধিনায়করা সবাই এ প্রতিবাদের সিদ্ধান্তে একমত। সংগঠনটি আরও জানিয়েছে, বার্সেলোনা ও ভিয়ারিয়ালের খেলোয়াড়দের তারা এই প্রতিবাদে অংশ নিতে বলেনি; যদিও তারা ‘প্রতিবাদের মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে একমত’।

আজ রাতে লা লিগার ম্যাচে বার্সেলোনা মুখোমুখি হবে জিরোনার আর ভিয়ারিয়াল খেলবে রিয়াল বেতিসের বিপক্ষে। গত শুক্রবার বার্সেলোনা কোচ হান্সি ফ্লিক যুক্তরাস্ট্রে ম্যাচ খেলা নিয়ে তাঁর এবং এবং খেলোয়াড়দের অসন্তোষের কথা জানান। ৭ হাজার ২০০ কিলোমিটার (৪,৫০০ মাইল) দূরে গিয়ে মৌসুমের একটি নিয়মিত ম্যাচ খেলা নিয়ে কেউ খুশি নন বলে জানিয়েছেন ফ্লিক, ‘আমার খেলোয়াড়েরা খুশি নয়, আমিও খুশি নই। কিন্তু লা লিগা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাদের এই ম্যাচ খেলতেই হবে।’

বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন যে আমেরিকান ক্রীড়া বাজারে লা লিগার আরও প্রসার ঘটানোর একটি বড় সুযোগ। তবে ফ্লিক এবং তাঁর খেলোয়াড়দের কাছে ব্যাপারটি মূলত অতিরিক্ত ভ্রমণের চাপ, বিশেষ করে শীতকালীন বিরতির ঠিক আগে। পাশাপাশি আগামী ৭ জানুয়ারি স্প্যানিশ সুপার কাপে খেলতে বার্সেলোনাকে আবারও সৌদি আরবে যেতে হবে।

আরও পড়ুনমেসির শহরে বার্সেলোনার ম্যাচ, আপত্তি রিয়াল মাদ্রিদের১৩ আগস্ট ২০২৫

বার্সেলোনা–ভিয়ারিয়ালের লা লিগা ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজন করা হতে পারে—এ গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল অনেক দিন ধরেই। নানামুখী আপত্তিতে প্রচেষ্টাটি আলোর মুখ দেখে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা ছিল।

তবে ৬ অক্টোবর উয়েফার বিবৃতিতে বলা হয়, অনিচ্ছা সত্ত্বেও দুটি দলের লিগ ম্যাচ যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে আয়োজনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে তারা। এর পর থেকে বিষয়টি নিয়ে আবার নতুন করে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম য চ য ক তর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্মিদের মরদেহ ফেরতে বিলম্বকে চুক্তি লঙ্ঘন বলছেন নেতানিয়াহু, একমত নয় যুক্তরাষ্ট্র

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর মাত্র ছয় দিনের মাথায় উপত্যকাটিতে আবার হামলা শুরুর হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তি না মানলে ইসরায়েল এ হামলা চালাবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। যদিও যুদ্ধবিরতির পর গাজায় ২৪ জনকে হত্যা করে ইসরায়েলই চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ হামাসের।

আজ বৃহস্পতিবার ছিল ট্রাম্পের ২০ দফা ‘শান্তি’ পরিকল্পনা অনুযায়ী গাজায় যুদ্ধবিরতির সপ্তম দিন। আগের দিন বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে টেলিফোনে সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়, তাঁর প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী হামাস যদি ভবিষ্যতে অস্ত্রসমর্পণ করতে রাজি না হয়, তাহলে তিনি কী পদক্ষেপ নেবেন?

জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি এটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। তিনি বলার সঙ্গে সঙ্গে ইসরায়েল গাজার রাস্তাগুলোয় ফিরে যাবে। আর ইসরায়েল যদি আবার গাজায় প্রবেশ করে, তখন হামাসের কাছ থেকে অস্ত্র কেড়ে নেবে। ফলে হামাস অস্ত্রসমর্পণ করতে বাধ্য হবে। গাজায় নতুন হামলা থেকে তিনিই এখন ইসরায়েলকে বিরত রেখেছেন।

ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ষষ্ঠ দফায় রয়েছে হামাসের অস্ত্রসমর্পণের বিষয়টি। পরিকল্পনার প্রথম ধাপ অনুযায়ী বর্তমান যুদ্ধবিরতি চলছে। যুদ্ধবিরতির এই ধাপে ইসরায়েলি জিম্মিদের ফেরত দেওয়া হবে। পরবর্তী ধাপে অস্ত্রসমর্পণ করবেন হামাস সদস্যরা। এর বিনিময়ে তাঁদের ‘ক্ষমা’ করা হবে। যদিও পরের ধাপের অস্ত্রসমপর্ণসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে এখনো সমঝোতা হয়নি।

এমন পরিস্থিতিতে গাজায় ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করা এলাকাগুলোয় হামাস সদস্যদের অস্ত্র হাতে টহল দিতে দেখা গেছে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন তাঁরা। এ বিষয়ে সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘সহিংস গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করছে হামাস।’ গত সপ্তাহেও তিনি বলেছিলেন, গাজায় শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য হামাসকে সাময়িক সময়ের জন্য অস্ত্র ধরার অনুমতি দিয়েছেন তিনি।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে একমত নয় যুক্তরাষ্ট্র

যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুযায়ী গাজায় বন্দী থাকা জীবিত ২০ ইসরায়েলি জিম্মিকে ফেরত দিয়েছে হামাস। মৃত ২৮ জিম্মির মধ্যে ১০ জনের মরদেহও ইসরায়েলকে ফেরত দিয়েছে তারা। এই মরদেহগুলোই শুধু তাদের কাছে ছিল বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠনটি। তাদের ভাষ্য, দুই বছর ধরে ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ায় বাকি মরদেহ খুঁজে বের করতে সময় লাগবে।

তবে এ কথা মানতে নারাজ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তাঁর মতে, যুদ্ধবিরতি শুরুর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জীবিত ও মৃত—সব জিম্মিকে ফেরত না দিয়ে চুক্তি লঙ্ঘন করেছে হামাস। গতকাল জেরুজালেমে নেতানিয়াহু বলেন, সব জিম্মি ফেরত আনতে বদ্ধপরিকর তাঁরা। ইসরায়েলের লড়াই এখনো শেষ হয়নি। ইসরায়েলে হস্তক্ষেপ করলে চড়া মূল্য দিতে হবে।

ফিলিস্তিনি নারী হায়াম মেকদাদ (৪৯)। দাঁড়িয়ে আছেন নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপের ওপর। যুদ্ধবিরতির পর এখন বাস করছেন তাঁবুতে। বুধবার গাজা নগরীতে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ পৃথিবীর জন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে: প্রধান উপদেষ্টা
  • জিম্মিদের মরদেহ ফেরতে বিলম্বকে চুক্তি লঙ্ঘন বলছেন নেতানিয়াহু, একমত নয় যুক্তরাষ্ট্র