শহীদ মিনারে অনশনরত এক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন
Published: 18th, October 2025 GMT
তিন দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে চলা এমপিওভুক্ত শিক্ষক–কর্মচারীদের অনশন কর্মসূচিতে এক নারী শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। আজ শনিবার বিকেলে এই শিক্ষক অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানান অন্য শিক্ষকেরা।
অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষকের নাম ঝর্ণা গাইন। তিনি বরিশালের উজিরপুর মেহেরনিগার বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম তিন হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক–কর্মচারীরা কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। অবস্থান কর্মসূচি, কর্মবিরতি, ‘মার্চ টু সচিবালয়’ ও শাহবাগ ‘ব্লকেডের’ পর অনশন করছেন তাঁরা।
অনশনরত অন্য শিক্ষকেরা জানান, আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে অনশনরত অবস্থায় ঝর্ণা গাইন অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে অন্য শিক্ষকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাঁকে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু ঝর্ণা গাইন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে রাজি হননি। তিনি শহীদ মিনারের অনশন কর্মসূচিতে আবার যোগ দেন।
ঝর্ণা গাইনকে দেখভাল করছেন মানিকগঞ্জের শিবালয়ের বরংগাইল গোপাল চন্দ্র উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ঝর্ণা বিশ্বাস। তিনি জানান, তাঁরা ১২ অক্টোবর আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। এত দিন একসঙ্গে ছিলেন। গতকাল শুক্রবার থেকে অনশনে রয়েছেন অসুস্থ হওয়া এই নারী শিক্ষক। তবে আজ প্রচণ্ড গরমে অনেক শিক্ষক এরই মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের মধ্যে ঝর্ণা গাইনের অবস্থা বেশি খারাপ।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জানান, অনশনরত আরেক কর্মচারীও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তিনিও আবার অনশনে যোগ দিয়েছেন। অসুস্থ হওয়া সেই কর্মচারীর নাম মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান। তিনি বরগুনার বেতাগী উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের কর্মচারী।
শিক্ষকদের অনশন কর্মসূচিতে সন্ধ্যা সাতটার দিকে উপস্থিত হয়ে সংহতি জানায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল।
প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন জাকসু সহসভাপতি (ভিপি) আবদুর রশীদ জিতু। তিনি বলেন, যৌক্তিক দাবি নিয়ে শিক্ষকদের কেন রাস্তায় নামতে হলো? তিনি বলেন, এমন আন্দোলন ফ্যাসিবাদের সময়ের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। শিক্ষকেরা দিনের পর দিন রাস্তায় কাটাচ্ছেন। সরকার যাতে দ্রুত সময়ে শিক্ষকদের দাবি মেনে নেয়, সেই আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে শিক্ষক–কর্মচারী আগামীকাল রোববার শিক্ষা ভবন অভিমুখে ‘খালি প্লেট নিয়ে ভুখা মিছিল’ করবে বলে জানিয়েছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য খুবই পরিষ্কার। তিন দফা দাবি মেনেই প্রজ্ঞাপন জারি করবেন; কোনো ছাড় নেই। তিনটাই মানতে হবে। যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, তা–ই দিতে হবে। অন্যথা উপদেষ্টাকে তাঁর মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রতিবেশীর গ্যারাজে পড়ে ছিল অলিম্পিকে জেতা সোনার পদক, এখন নিলামে
ধরুন, অলিম্পিকে সোনার পদক জিতলেন। এখন পদকটি যত্ন করে রাখতে জুতসই একটি জায়গা তো লাগবে। অলিম্পিকে জেতা সোনার পদক তো আর যেনতেন জায়গা ফেলে রাখা যায় না। বিশ্বের অনেক অ্যাথলেটেরই সে জন্য আয়োজনের কমতি থাকে না। কিন্তু জর্জ ফোরম্যান অন্য ধাতে গড়া মানুষ। বক্সিংয়ে প্রয়াত এই কিংবদন্তির মনে হয়েছিল, অলিম্পিকে জেতা সোনার পদক প্রতিবেশীর গ্যারেজে ফেলে রাখা যায়!
অবিশ্বাস্য এ ঘটনাই সামনে এনেছে ইউরোপের কিছু সংবাদমাধ্যম। ১৯৬৮ মেক্সিকো সিটি অলিম্পিকের বক্সিংয়ে হেভিওয়েট ইভেন্টে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের জোনাস সেপুলিসকে হারিয়ে সোনা জেতেন ফোরম্যান। এরপর দীর্ঘ কয়েক দশক এ পদকের কোনো হদিস ছিল না।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, কয়েক বছর আগে পদকটি আবিষ্কার করা হয় ফোরম্যানের প্রতিবেশীর বাসার গ্যারেজে। পদকটি সেখান থেকে গিয়ে পড়েছে নিলামকারী প্রতিষ্ঠান লেল্যান্ড অকশনসের কাছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিষ্ঠান পদকটি নিলামে তুলেছে। ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এ নিলাম।
তবে স্পেনের আরেক সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে গ্যারাজের মালিক গ্যারাজ পরিস্কার করতে গিয়ে ফোরম্যানের বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাশাপাশি অলিম্পিক পদকটিও দেখতে পান।
‘মার্কা’ জানিয়েছে, তিনজন ক্রেতা এরই মধ্যে পদকটি কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দাম উঠেছে ৩ হাজার ৩২৮ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ টাকার কিছু বেশি)। লেল্যান্ড অকশনসের আশা, এ দকের দাম আরও বাড়বে।
ফোরম্যান বক্সিং ইতিহাসের কিংবদন্তি। দুবারের হেভিওয়েট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ‘বিগ জর্জ’ নামে খ্যাতি পাওয়া সাবেক এই বক্সার ১৯৬৭ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত রিংয়ে নেমেছেন। ১৯৭৪ সালে কিনশাসায় বিখ্যাত ‘রাম্বল ইন দ্য জাঙ্গল’ ম্যাচে মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হারেন। ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল বক্সিং রিসার্চ’–এর বিবেচনায় ফোরম্যান সর্বকালের সেরা বক্সারদের তালিকায় অষ্টম। চলতি বছর মার্চে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্রীড়াবিদ। সত্তর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের হিউস্টনে বসবাস করতেন ফোরম্যান।
আরও পড়ুনজুনিয়র হকি বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কাছে ৩–২ গোলে হার বাংলাদেশের১৪ ঘণ্টা আগেনিলামকারী প্রতিষ্ঠানটির বরাত দিয়ে ‘মার্কা’ ও স্পেনের আরেক সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, সত্তর দশকের শেষ দিকে ফোরম্যান নিজের কিছু জিনিসপত্র প্রতিবেশীকে তাঁর বাসায় রাখার অনুরোধ করেছিলেন। সেই প্রতিবেশী আপত্তি করেননি। কয়েক বছর আগে সেই প্রতিবেশী নারীর মেয়ে বাসার গ্যারেজ থেকে ফোরম্যানের রেখে যাওয়া সেসব জিনিসপত্র আবিষ্কার করেন। এর মধ্যে ছিল তাঁর দুটি পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, কিছু ট্রফি ও সোনার সেই পদক।
চলতি বছর মার্চে মারা যান জর্জ ফোরম্যান