ধর্মেন্দ্রকে কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি?
Published: 24th, November 2025 GMT
অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। আজই মুম্বাইয়ের পবন হংসে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।
১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে।
আরো পড়ুন:
বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন
থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে
‘ফুল আউর পাথর’ ধর্মেন্দ্রকে বক্স অফিস সফল তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সত্তরের দশকের শেষ অবধি, ধর্মেন্দ্র ধারাবাহিকভাবে বলিউডের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের একজন ছিলেন। ‘অনুপমা’, ‘আদমি আউর ইনসান’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘সীতা অর গীতা’, ‘শোলে’, ‘লোফার’, ‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘ধর্ম বীর’ এর মতো হিট সিনেমা উপহার দেন।
আশির দশকে অ্যাকশন ঘরানার চলচ্চিত্রে মন দেন ধর্মেন্দ্র। ‘বদলে কি আগ’, ‘গুলামি’, ‘লোহা’, ‘এয়লান’ এর মতো মতো স্বল্প-বাজেটের সিনেমা সাফল্য পায় তার কাঁধে ভর করে। ৬৪ বছরের ক্যারিয়ারে, ধর্মেন্দ্র ৭৫টি হিট সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন; যা কোনো হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতার প্রধান চরিত্রে সর্বাধিক। এ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছেন—অমিতাভ বচ্চন (৫৭টি), রাজেশ খান্না (৪২টি), শাহরুখ খান (৩৫টি), সালমান খান (৩৮টি)।
ধর্মেন্দ্র তার সমসাময়িক এবং জুনিয়রদের চেয়ে বেশি হিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। তারপরও কখনো ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা ছিলেন না। ধর্মেন্দ্র যখন তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, তখন এই ট্যাগটি দিলীপ কুমারের কাছে ছিল; পরে সত্তরের দশকে রাজেশ খান্না, পরবর্তীতে অমিতাভ বচ্চন খানিকটা লাইমলাইট কেড়েছিলেন। কিন্তু দর্শক মনে রাজত্ব করে গিয়েছেন গরম-ধরম।
‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘ধরম বীর’ দুজন নায়কের সিনেমা ছিল। অন্যান্য নায়কেরা তখন নিয়মিত একক হিট উপহার দিচ্ছিলেন। আশির দশকে যখন ধর্মেন্দ্র একক হিট সিনেমা দিয়েছিলেন, তখন চলচ্চিত্রগুলো অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না বা ঋষি কাপুর অভিনীত সিনেমার চেয়ে কম বাজেটের ছিল। ৬টি ব্লকবাস্টার ও ৭টি সুপার হিট সিনেমার মালিক ধর্মেন্দ্র।
বিস্ময়কর বিষয় হলো— এ নায়কের ১৫০টি সিনেমা ফ্লপ হয়েছিল, যা কোনো বলিউড তারকার জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ কারণেই হয়তো ধর্মেন্দ্র কখনো ‘সুপারস্টার’ তকমা পাননি। তারপরও ধর্মেন্দ্র তথাকথিত ‘বি-গ্রেড’ অ্যাকশন ঘরানার সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্তে অনুশোচনা করেননি।
আশির দশকের শেষের দিকে এইচটিকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমার বয়স পঞ্চাশের বেশি। আমি আজকাল হেলিকপ্টার থেকে লাফ দিচ্ছি। এটি অবশ্যই একটি কীর্তি (হাসি)। কিন্তু কেউ বেছে নেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। পুরোনো অভ্যাসগুলো মরে যায়। আমি সিনেমা খুব ভালোবাসি। আমি সুযোগ পেলেই সিনেমায় স্বাক্ষর করতে চাই; যদি জানিও যে, সিনেমাটি চলবে না, তবু আমি সেরাটি দেওয়ার চেষ্টা করি। এক বছরে এমন অনেক সিনেমা করি, যার গল্প একই; যার মধ্যে তিনটি খুব ভালো চলে।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র র দশক
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্মেন্দ্রকে কেন ‘সুপারস্টার’ বলা হয়নি?
অবশেষে গুঞ্জনই সত্যি হয়ে ধরা দিয়েছে। সোমবার (২৪ নভেম্বর) মুম্বাইয়ের বাসভবনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলিউডের বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র। তার বয়স হয়েছিল ৮৯ বছর। আজই মুম্বাইয়ের পবন হংসে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই, ইন্ডিয়া টুডে, এনডিটিভি এ খবর প্রকাশ করেছে।
১৯৩৫ সালের ৮ ডিসেম্বর পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার সাহনেওয়াল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন ধর্মেন্দ্র কেওয়াল কৃষণ দেওল। ছোটবেলায় সিনেমার পর্দা ছিল তার কাছে জাদুর জানালা। সেই গ্রাম থেকে, কাদামাখা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তিনিও একদিন বড় পর্দায় আলো ছড়াবেন। ফিল্মফেয়ার ম্যাগাজিনের ‘ট্যালেন্ট কনটেস্ট’-এ জয়ী হন। ১৯৬০ সালে ‘দিল ভি তেরা হাম ভি তেরে’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেন ধর্মেন্দ্র। প্রথম সিনেমা মুক্তির পরই নজর কাড়েন। তবে প্রকৃত সাফল্য আসে তারও কয়েক বছর পর। বিশেষ করে ‘শোলা আউর শবনম’ (১৯৬১), ‘বন্দিনী’ (১৯৬৩), ‘ফুল আউর পাথর’ (১৯৬৬) ও ‘সত্যকাম’ (১৯৬৯) সিনেমার মাধ্যমে।
আরো পড়ুন:
বরেণ্য অভিনেতা ধর্মেন্দ্র মারা গেছেন
থমকে গেছে ক্রিকেটার-গায়কের বিয়ে: বাবার পর স্মৃতির হবু বর হাসপাতালে
‘ফুল আউর পাথর’ ধর্মেন্দ্রকে বক্স অফিস সফল তারকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে। সত্তরের দশকের শেষ অবধি, ধর্মেন্দ্র ধারাবাহিকভাবে বলিউডের শীর্ষস্থানীয় তারকাদের একজন ছিলেন। ‘অনুপমা’, ‘আদমি আউর ইনসান’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘সীতা অর গীতা’, ‘শোলে’, ‘লোফার’, ‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘ধর্ম বীর’ এর মতো হিট সিনেমা উপহার দেন।
আশির দশকে অ্যাকশন ঘরানার চলচ্চিত্রে মন দেন ধর্মেন্দ্র। ‘বদলে কি আগ’, ‘গুলামি’, ‘লোহা’, ‘এয়লান’ এর মতো মতো স্বল্প-বাজেটের সিনেমা সাফল্য পায় তার কাঁধে ভর করে। ৬৪ বছরের ক্যারিয়ারে, ধর্মেন্দ্র ৭৫টি হিট সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন; যা কোনো হিন্দি চলচ্চিত্র অভিনেতার প্রধান চরিত্রে সর্বাধিক। এ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছেন—অমিতাভ বচ্চন (৫৭টি), রাজেশ খান্না (৪২টি), শাহরুখ খান (৩৫টি), সালমান খান (৩৮টি)।
ধর্মেন্দ্র তার সমসাময়িক এবং জুনিয়রদের চেয়ে বেশি হিট সিনেমা উপহার দিয়েছিলেন। তারপরও কখনো ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ তারকা ছিলেন না। ধর্মেন্দ্র যখন তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, তখন এই ট্যাগটি দিলীপ কুমারের কাছে ছিল; পরে সত্তরের দশকে রাজেশ খান্না, পরবর্তীতে অমিতাভ বচ্চন খানিকটা লাইমলাইট কেড়েছিলেন। কিন্তু দর্শক মনে রাজত্ব করে গিয়েছেন গরম-ধরম।
‘ইয়াদো কি বারাত’, ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘ধরম বীর’ দুজন নায়কের সিনেমা ছিল। অন্যান্য নায়কেরা তখন নিয়মিত একক হিট উপহার দিচ্ছিলেন। আশির দশকে যখন ধর্মেন্দ্র একক হিট সিনেমা দিয়েছিলেন, তখন চলচ্চিত্রগুলো অমিতাভ বচ্চন, বিনোদ খান্না বা ঋষি কাপুর অভিনীত সিনেমার চেয়ে কম বাজেটের ছিল। ৬টি ব্লকবাস্টার ও ৭টি সুপার হিট সিনেমার মালিক ধর্মেন্দ্র।
বিস্ময়কর বিষয় হলো— এ নায়কের ১৫০টি সিনেমা ফ্লপ হয়েছিল, যা কোনো বলিউড তারকার জন্য দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এ কারণেই হয়তো ধর্মেন্দ্র কখনো ‘সুপারস্টার’ তকমা পাননি। তারপরও ধর্মেন্দ্র তথাকথিত ‘বি-গ্রেড’ অ্যাকশন ঘরানার সিনেমায় অভিনয়ের সিদ্ধান্তে অনুশোচনা করেননি।
আশির দশকের শেষের দিকে এইচটিকে দেওয়া একটি সাক্ষাত্কারে ধর্মেন্দ্র বলেছিলেন, “আমার বয়স পঞ্চাশের বেশি। আমি আজকাল হেলিকপ্টার থেকে লাফ দিচ্ছি। এটি অবশ্যই একটি কীর্তি (হাসি)। কিন্তু কেউ বেছে নেওয়ার সামর্থ্য রাখে না। পুরোনো অভ্যাসগুলো মরে যায়। আমি সিনেমা খুব ভালোবাসি। আমি সুযোগ পেলেই সিনেমায় স্বাক্ষর করতে চাই; যদি জানিও যে, সিনেমাটি চলবে না, তবু আমি সেরাটি দেওয়ার চেষ্টা করি। এক বছরে এমন অনেক সিনেমা করি, যার গল্প একই; যার মধ্যে তিনটি খুব ভালো চলে।”
ঢাকা/শান্ত