শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার তাহের মল্লিককান্দি গ্রামে পুকুরের পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে স্বজনেরা বাড়ির পেছনের পুকুর থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করেন।

মারা যাওয়া দুই শিশুর নাম সাদমান ইসলাম (৩) ও আবদুল্লাহ (৩)। সাদমান তাহের মল্লিককান্দি গ্রামের দুলাল মল্লিকের ছেলে। আবদুল্লাহ ময়মনসিংহের আবু নাঈমের ছেলে। তাহের মল্লিককান্দি গ্রামে আবদুল্লাহর নানাবাড়ি।

জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, জাজিরা উপজেলার নাওডোবা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুলাল মল্লিক ঢাকায় ফার্নিচারের ব্যবসা করেন। তাঁর স্ত্রী সাবিনা আক্তার শিশু সাদমানকে নিয়ে গ্রামে বসবাস করেন। ময়মনসিংহের আবু নাঈম স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। তাঁর স্ত্রী আয়েশা আক্তার শিশু আবদুল্লাহকে নিয়ে বাবার বাড়ি তাহের মল্লিককান্দি গ্রামে বেড়াতে আসেন। সোমবার সকালে শিশু দুটি বাড়ির উঠানে খেলছিল। খেলতে খেলতে তারা বাড়ির পেছনের পুকুরে পড়ে যায়। তাদের দেখতে না পেয়ে স্বজনেরা খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে শিশু দুটির লাশ পানিতে ভাসতে দেখেন পরিবারের সদস্যরা। পরে স্বজনেরা পানি থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করেন।

সাদমান ইসলামের চাচা রেজাউল মল্লিক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ভাইয়ের ছোট ছেলে সাদমান পানিতে ডুবে মারা গেল। আর আবদুল্লাহ সম্পর্কে আমার নাতি। সকালে তারা খেলা করছিল। ঘটনার সময় তাদের মায়েরা রান্নার কাজে ব্যস্ত থাকায় কেউ তাদের পুকুরে যেতে দেখেনি। এ দুঃখজনক ঘটনা আমাদের পরিবারের মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে।’

নাওডোবা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য জুলফিকার আলী মুন্সি প্রথম আলোকে বলেন, পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। গ্রামের কবরস্থানে দুই শিশুকে দাফন করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ স দম ন

এছাড়াও পড়ুন:

কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক আফিফুরের গফরগাঁওয়ে প্রযুক্তি শিক্ষার উদ্যোগ

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে বাংলাদেশি তরুণেরা যেখানে বিদেশে পাড়ি জমান ভালো চাকরির আশায়, সেখানে ময়মনসিংহের আফিফুর রহমান বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পাস করে দেশের বাইরে নয়, ফিরে গেছেন নিজ উপজেলায়, ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের ষোলহাসিয়া গ্রামে। প্রযুক্তির জ্ঞানকে ছড়িয়ে দিয়ে গড়ে তুলছেন ভবিষ্যতের ডিজিটাল নাগরিকদের।

মানবসম্পদ গড়ার কারিগর

আফিফুর রহমান, বর্তমানে একজন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। ২০১৭ সালে প্রথম ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে তাঁর বন্ধুর কোচিং সেন্টারের একটি কক্ষে শুরু করেন টিউশনি। দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লে তিনি আলাদা একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে পড়ানো শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রাম ও কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট। কোরডেফট আইসিটি প্রাইভেট প্রোগ্রামের আওতায় পড়ানো হয় উচ্চমাধ্যমিক স্তরের আইসিটি বিষয় এবং কোরডেফট কম্পিউটার ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে শেখানো হয় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ৩ মাস ও ৬ মাস মেয়াদি সার্টিফিকেট ইন কম্পিউটার অফিস অ্যাপ্লিকেশন কোর্স এবং সেই সঙ্গে ৩ মাস মেয়াদি গ্রাফিক ডিজাইন কোর্স।

আফিফুরের চাকরিজীবন

ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে স্নাতক (সম্মান) হয়ে আফিফুরের লক্ষ্য ছিল উচ্চতর ডিগ্রির জন্য বিদেশে যাওয়া। পরিবারে একমাত্র ছেলে হওয়ায় বাবা-মায়ের আপত্তিতে সেই স্বপ্ন স্থগিত রাখেন। সিদ্ধান্ত নেন, দেশেই পেশাজীবন গড়বেন। পরবর্তী সময়ে একটি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামে চাকরির সুযোগ পেয়েও সেখানে না গিয়ে নিজ জেলা ময়মনসিংহের ক্যাপিটাল কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।

চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন

পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় দুটি কোম্পানিতে ওয়েব ডেভেলপার হিসেবে কাজ করেন। একটিতে ৬ মাস ও অন্যটিতে ৩ মাসের মতো চাকরি করেন। সে জায়গায় কাজটি ছিল সম্পূর্ণ কম্পিউটার–নির্ভর। কয়েক মাস পরই তাঁর জন্য চাকরিটি করা কঠিন হয়ে পরে। দীর্ঘ সময় কম্পিউটার পর্দায় তাকিয়ে থাকার কারণে, আফিফুরের চোখে দেখা দেয়, ‘ড্রাই আই সিনড্রোম’। চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে তাঁরা জানান, দীর্ঘ সময় কম্পিউটারে কাজ করা আফিফুরের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। অনতিবিলম্বে তাঁকে পেশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। চোখ বাঁচাতে চাকরি ছাড়েন আফিফুর। এরপর ভিন্ন ভিন্ন পেশায় কয়েকটি চাকরি সন্ধান করেন। কিন্তু আশানুরূপ না হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেন নিজ গ্রামে ফিরে যাওয়ার।

নিজ এলাকায় ফিরে যাওয়া

নিজ উপজেলা ময়মনসিংহের গফরগাঁও ফিরে গিয়ে পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ান। ধীরে ধীরে দেখলেন, তিনি ছাড়া বন্ধুরা সবাই ব্যস্ত, বারবার আড্ডা দিতে ডাকলে তাঁরাও কিছুটা বিরক্তই হন। খোঁজ নিয়ে জানলেন, বেশির ভাগ বন্ধুই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের ইংরেজি, পদার্থ, গণিত ইত্যাদি বিষয়ে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। পরবর্তী সময়ে বন্ধুদের উৎসাহে তিনি অবসর সময় কাটানোর জন্য মাত্র ৩ জন শিক্ষার্থী নিয়ে প্রাইভেট পড়ানো শুরু করেন।

ক্লাস নিচ্ছেন  আফিফুর রহমান

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিনটি ৭০ ছাড়ানো ইনিংস ছাড়া আর কিছু নেই
  • ময়মনসিংহ নগরীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল
  • কোনো এক ঝুমকোলতার কথা 
  • ময়মনসিংহে বাস চাপায় স্বামী-স্ত্রীর মৃত্যু
  • বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, গৌরীপুর বিএনপির আহ্বায়কসহ ৫ জন বহিষ্কার
  • বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় অসুস্থ হয়ে ছাত্রদল কর্মীর মৃত্যু
  • কম্পিউটারবিজ্ঞানে স্নাতক আফিফুরের গফরগাঁওয়ে প্রযুক্তি শিক্ষার উদ্যোগ