প্রায় আট একর এলাকাজুড়ে অবস্থান পাহাড়টির। উচ্চতা ৩০ ফুটের মতো। বসতঘর নির্মাণের জন্য রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে পাহাড়টি। ‘বাক্করগিয়া কাটা’ নামের এ পাহাড়ের অবস্থান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকায়।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে তিন কিলোমিটার উত্তরে বার আউলিয়া গেট। সেখান থেকে বার আউলিয়া সড়ক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছয় কিলোমিটার—এগুলোই চরম্বা দিঘির কোণ। ওই এলাকা থেকে দিঘিরপাড়া সড়ক নামে একটি গ্রামীণ সড়ক ধরে দুই কিলোমিটার উত্তরে গেলেই কালোয়ারপাড়া এলাকায় বাক্করগিয়া কাটা পাহাড়টির দেখা মেলে।

মো.

শফির তিন ছেলের মধ্যে দুজন প্রবাসী। তাঁদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তিনি। তাই নতুন করে পাহাড় কেটে সমতল করছেন। ছয় দিন ধরে নতুন করে পাহাড় কাটা চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার ছাপ স্পষ্ট। পাহাড়ের কিছু মাটি কেটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে একটি স্থানে। কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, পাহাড়টি ব্যক্তিমালিকানাধীন। এর মালিকানা সাতজনের। পাঁচ বছর আগে পাহাড়টি কেটে বসতঘর নির্মাণ শুরু হয়। এরপর একটি একটি করে বসতঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে পাহাড়ের পূর্ব অংশে আটটি বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়টির দক্ষিণ অংশে প্রায় ১৫ শতক এরই মধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে বসতঘর নির্মাণের জন্য।

বর্তমানে পাহাড়টির দক্ষিণের যে অংশ কাটা হচ্ছে, সেটির মালিকানা মো. শফি নামের স্থানীয় এক বাসিন্দার। পাহাড় কেটে তিনি একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন এক বছর আগে। সেটির নির্মাণকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। মো. শফির তিন ছেলের মধ্যে দুজন প্রবাসী। তাঁদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তিনি। তাই নতুন করে পাহাড় কেটে সমতল করছেন। ছয় দিন ধরে নতুন করে পাহাড় কাটা চলছে।

সরেজমিনে মো. শফির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। শফি বলেন, ‘পাহাড় কাটলে প্রশাসন সমস্যা করে, সেটি জানি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন স্কুলের মাঠের জন্য মাটি কাটলে কোনো সমস্যা হবে না। তাই চেয়ারম্যান কথায় মাটি কাটতে দিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু মাটি স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, আরও ১০০ ট্রাক মাটি লাগবে।’

জানতে চাইলে চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পাহাড় কাটার কথা কাউকে বলিনি। মো. শফি নামে কাউকে চিনিও না।’

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুযায়ী, পাহাড় ও টিলা কাটা যায় না। তবে জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে।

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনোভাবেই পাহাড় কাটা যাবে না। আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বসতঘর ন র ম ণ ন র ম ণ কর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

লোহাগাড়ায় পাহাড় কেটে চলছে বসতঘর নির্মাণ

প্রায় আট একর এলাকাজুড়ে অবস্থান পাহাড়টির। উচ্চতা ৩০ ফুটের মতো। বসতঘর নির্মাণের জন্য রাতের আঁধারে কাটা হচ্ছে পাহাড়টি। ‘বাক্করগিয়া কাটা’ নামের এ পাহাড়ের অবস্থান চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা এলাকায়।

লোহাগাড়া উপজেলা সদর থেকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ধরে তিন কিলোমিটার উত্তরে বার আউলিয়া গেট। সেখান থেকে বার আউলিয়া সড়ক ধরে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ছয় কিলোমিটার—এগুলোই চরম্বা দিঘির কোণ। ওই এলাকা থেকে দিঘিরপাড়া সড়ক নামে একটি গ্রামীণ সড়ক ধরে দুই কিলোমিটার উত্তরে গেলেই কালোয়ারপাড়া এলাকায় বাক্করগিয়া কাটা পাহাড়টির দেখা মেলে।

মো. শফির তিন ছেলের মধ্যে দুজন প্রবাসী। তাঁদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তিনি। তাই নতুন করে পাহাড় কেটে সমতল করছেন। ছয় দিন ধরে নতুন করে পাহাড় কাটা চলছে।

গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, পাহাড়ের দক্ষিণ পাশে খননযন্ত্র দিয়ে মাটি কাটার ছাপ স্পষ্ট। পাহাড়ের কিছু মাটি কেটে স্তূপ করে রাখা হয়েছে একটি স্থানে। কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা জানান, পাহাড়টি ব্যক্তিমালিকানাধীন। এর মালিকানা সাতজনের। পাঁচ বছর আগে পাহাড়টি কেটে বসতঘর নির্মাণ শুরু হয়। এরপর একটি একটি করে বসতঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরের মধ্যে পাহাড়ের পূর্ব অংশে আটটি বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। পাহাড়টির দক্ষিণ অংশে প্রায় ১৫ শতক এরই মধ্যে কেটে ফেলা হয়েছে বসতঘর নির্মাণের জন্য।

বর্তমানে পাহাড়টির দক্ষিণের যে অংশ কাটা হচ্ছে, সেটির মালিকানা মো. শফি নামের স্থানীয় এক বাসিন্দার। পাহাড় কেটে তিনি একটি পাকা বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন এক বছর আগে। সেটির নির্মাণকাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। মো. শফির তিন ছেলের মধ্যে দুজন প্রবাসী। তাঁদের জন্য আরও দুটি পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে চান তিনি। তাই নতুন করে পাহাড় কেটে সমতল করছেন। ছয় দিন ধরে নতুন করে পাহাড় কাটা চলছে।

সরেজমিনে মো. শফির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বসতঘর নির্মাণের জন্য পাহাড় কাটার বিষয়টি স্বীকার করেন। শফি বলেন, ‘পাহাড় কাটলে প্রশাসন সমস্যা করে, সেটি জানি। তবে ইউপি চেয়ারম্যান বলেছেন স্কুলের মাঠের জন্য মাটি কাটলে কোনো সমস্যা হবে না। তাই চেয়ারম্যান কথায় মাটি কাটতে দিয়েছি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু মাটি স্কুলের মাঠ ভরাটের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তারা বলেছে, আরও ১০০ ট্রাক মাটি লাগবে।’

জানতে চাইলে চরম্বা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পাহাড় কাটার কথা কাউকে বলিনি। মো. শফি নামে কাউকে চিনিও না।’

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৬(খ) ধারা অনুযায়ী, পাহাড় ও টিলা কাটা যায় না। তবে জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নিয়ে পাহাড় বা টিলা কাটা যেতে পারে।

লোহাগাড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মং এছেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনোভাবেই পাহাড় কাটা যাবে না। আমরা দ্রুত অভিযান চালিয়ে এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ