যারা আওয়ামী লীগের লিফলেট বিতরণ করবে তাদের গ্রেপ্তার করা বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। 

সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপ প্রেসসচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মেদ।

প্রেস সচিব বলেন, ‘‘পতিত স্বৈরাচারের দোসর ও সাঙ্গপাঙ্গরা অনেক কিছু করতে চাইছে। তারা লিফলেট বিতরণ করতে চাইছে। যারা লিফলেট বিতরণ করবে তাদের জন্য কড়া বার্তা হলো, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। লিফলেটে যেসব কথা আছে, তা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে হুমকিতে ফেলার কথা। এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ 

আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকেরা অনলাইনে মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘‘পতিত স্বৈরাচারকে বলছেন এখনো প্রধানমন্ত্রী। পুরোটা আমরা মনিটরিং করছি। আমাদের কড়া বার্তা হচ্ছে, যারা লিফলেট বিতরণ করবে, এ ধরনের কর্মসূচিতে যাবে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। আইনের আওতায় আনা হবে।’’

জাতীয় প্রেস ক্লাবে আওয়ামী লীগের পক্ষে একজন শিক্ষা ক্যাডার (মুকিব খান) লিফলেট বিতরণ করেছেন। এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নে শফিকুল আলম বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু গ্রেপ্তার করেছি। আমরা শুনেছিলাম তারা ঢাকায় ৭০টি জায়গায় লিফলেট বিতরণ করবে। কিন্তু আমরা জেনেছি তিনটা জায়গায় তারা তা করতে চেষ্টা করেছিল, সেখান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা অনলাইনে অনেক কিছু বিতরণ করছে। চুরির টাকা তো তাদের ব্যয় করতে হবে।’’

শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ওনার ফেসবুক স্ট্যাটাসগুলো খতিয়ে দেখছি। প্রত্যেকটা বিষয় খতিয়ে দেখছি।’’ 

গুজব প্রতিরোধে সরকার সাইবার সেল করবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘‘গুজব নিয়ে ফেসবুকের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। গুজব নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো আমাদের বিরুদ্ধে প্রোপাগান্ডা যুদ্ধে নেমেছে। প্রতিদিন তারা মিথ্যা মিথ্যা তথ্য দিচ্ছে। আমাদের ধারণা হচ্ছে, পতিত স্বৈরাচারের যারা বিলিয়ন ডলার বাইরে নিয়ে গেছে, তারা এ কাজগুলো করাচ্ছে। এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে বিষয়টি ভারত সরকারকেও জানানো হয়েছে।’’

৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ মিথ্যা তথ্য ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রেস সচিব বলেন, ‘‘পরিষদ জানিয়েছে ৫ আগস্ট পর বিভিন্ন ঘটনায় ২৩ জন‌ মারা গেছেন, যা মিথ্যা তথ্য। এ ছাড়াও ১৭৪টি ঘটনার তথ্য জানানো হয়েছে, সেটিও সঠিক নয়। পুলিশ তদন্ত করে ওইসব ঘটনার তথ্য পায়নি।’’

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর

এছাড়াও পড়ুন:

কোন সঞ্চয়পত্রে কত মুনাফা

সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা সবচেয়ে নিরাপদ। সুদের হারও বেশ ভালো। মধ্যবিত্তের সবচেয়ে নিরাপদ সঞ্চয় মাধ্যম হলো সঞ্চয়পত্র। এমন চিন্তা থেকে অনেকেই সঞ্চয়পত্র কেনেন।

অন্যদিকে ব্যাংক খাতের পরিস্থিতি ভালো নয়। ব্যাংক খাতের এমন দুরবস্থার মধ্যে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা অনেক বেশি নিরাপদ। আসল তো পাবেনই, মুনাফার নিশ্চয়তাও আছে। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায়।

বর্তমানে জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের চার ধরনের সঞ্চয় আছে। এগুলো হলো পরিবার সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র। পরিবার সঞ্চয়পত্র ছাড়া বাকি সব সঞ্চয়পত্রে ব্যক্তির পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানও বিনিয়োগ করতে পারে।

প্রতিবছর জুলাই ও জানুয়ারি মাসে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার পর্যালোচনা করা হয়। প্রয়োজন অনুসারে, মুনাফার হার কম বেশি করা হয়। আগামী জানুয়ারি মাসেও মুনাফার হার পর্যালোচনা করা হবে। তাই জানুয়ারির আগে সঞ্চয়পত্র কিনলে বর্তমান মুনাফার হারেই টাকা পাবেন।

এবার দেখা যাক, একজন ব্যক্তি কোন সঞ্চয়পত্রে মুনাফার হার কত।

মুনাফা কত

সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায় পেনশনার সঞ্চয়পত্রে। পেনশনার সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ৫ম বছর শেষে (অর্থাৎ মেয়াদ পূর্তির পর) মুনাফা ১১ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এই সঞ্চয়পত্রে যদি সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করেন, তাহলে মেয়াদপূর্তির পর মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

অবসরপ্রাপ্ত সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, সশস্ত্র বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ও মৃত চাকরিজীবীর পারিবারিক পেনশন সুবিধাভোগী স্বামী বা স্ত্রী বা সন্তান কিনতে পারবেন।

পেনশনার সঞ্চয়পত্রের পর সবচেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যায় পরিবার সঞ্চয়পত্রে। এই সঞ্চয়পত্রে সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ করা হলে মেয়াদ পূর্তিতে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ করলে এই হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ। শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নারীরাই কিনতে পারবেন।

৫ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগে ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ হলে মুনাফার হার ১১ দশমিক ৮০ শতাংশ।

এ ছাড়া ১১ দশমিক ৮২ শতাংশ শতাংশ হারে মুনাফা পাওয়া যাবে ৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে। মনে রাখবেন, এই হার সাড়ে ৭ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ হলে আর সাড়ে ৭ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এ মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৭ শতাংশ।

মেয়াদ পূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র ভাঙলে মুনাফা কমে যায়। তাই জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মেয়াদ পূর্তির আগে সঞ্চয়পত্র না ভাঙাই ভালো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ