ফ্যাশন হাউস মানাসের স্বত্বাধিকারী ফায়জা আহমেদ। বাংলা ভাষা, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর এদেশের তাঁতিদের বোনা পোশাক তার ভীষণ প্রিয়। তাঁতিদের বোনা কাপড়ের জমিনে বাংলা ভাষার বিখ্যাত কবি, লেখকদের কবিতা ও গান জুড়ে দিয়ে তৈরি করেন মানাসের শাড়ি, কামিজ, টপস, লং শার্ট ইত্যাদি। মানাস সাধারণত ঋতুভিত্তিক পোশাক তৈরি করে থাকে। বাংলার জমিনের রূপে মুগ্ধ এই ডিজাইনার মাটি রঙের অনের পোশাক তৈরি করে থাকেন। এবার উৎসবের পোশাকেও দেখা গেলো মাটি রং আর পতাকার মতো গাঢ় সবুজ রঙের উপস্থিতি।
শাড়ি কিংবা কামিজ যেন ফায়জার লেখার খাতা। পোশাকের জমিনে গান কবিতার পাশাপাশি এবার স্থান করে নিয়েছে প্রতিবাদের অক্ষরমালা। ঈদে মানাসের শাড়ি, লং শার্ট, কামিজের বুকের ওপর, পিঠের মাঝে স্থান পেয়েছে প্রতিবাদের ভাষা। ফায়জা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘‘এই অস্থিতিশীল সময়কে উৎসবমুখর করার পরিবর্তে উৎসবে প্রতিবাদকে প্রতিপাদ্য করেছে মানাস।’’
আরো পড়ুন:
লোপার ঈদ কালেকশনে যা থাকছে
ঈদে ফিউশনধর্মী পোশাক এনেছে ‘খাদি বাই নুভিয়া’
কটন ও সিল্ক ফেব্রিকে তৈরি হয়েছে মানাসের ঈদ পোশাক। কটন শাড়ির দরদাম শুরু ৩২০০ টাকা থেকে। একটি কটন শাড়ির দাম ৭০০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সিল্কের শাড়ির দাম একটু বেশি। সিল্কের শাড়িগুলোর দাম ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। কামিজ এবং টপস-এর দরদাম ২৮০০ থেকে ৩৫০০ টাকা।
ঈদের দিন কেমন পোশাক পরবেন এই ডিজাইনার?— এই প্রশ্নের জবাবে ফায়জা আহমেদ বলেন, ‘‘ঈদে মানাসের যে নতুন কালেকশন থাকছে সেখান থেকে যে কথাটাকে আমি আমার মনের কথা মনে করি, প্রতিবাদের ভাষা মনে করি সেই শব্দগুলো লেখা শাড়ি পরবো বলে ভেবেছি।’’
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।
কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।
এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।
অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।
একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।
এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।
যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’