ভাইয়ের জমি কিনে অর্থ আত্মসাৎ, ন্যাশনাল লাইফের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 4th, May 2025 GMT
বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ভাইয়ের জমি কেনার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির চেয়ারম্যান মোরশেদ আলমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত বুধবার দুদকের উপপরিচালক শেখ গোলাম মাওলা রাজধানীর সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অন্য দুই আসামি হলেন মোরশেদ আলমের ছেলে বেঙ্গল কনসেপ্ট অ্যান্ড হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল আলম এবং ভাই বেঙ্গল কনসেপ্টের পরিচালক মো.
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৬ সালে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার গণিপুর মৌজায় শূন্য দশমিক ৮৯৬ একর জমি ও একটি নির্মাণাধীন ১৫ তলা ভবনের চতুর্থ তলার একটি বাণিজ্যিক স্পেস কেনে।
ওই জমির মালিক ছিলেন জসিম উদ্দিন। পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নিয়ে জমি বিক্রির দায়িত্বে ছিলেন সাইফুল আলম। আত্মীয় হওয়া সত্ত্বেও এটি গোপন রাখা হয় এবং ইনস্যুরেন্স উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে জমি কিনতে অনুমোদন দেওয়ার সময় মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়।
এজাহারে বলা হয়, জমিটির প্রকৃত বাজারমূল্য ছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫৫ টাকা। তবে জাল মূল্যায়ন প্রতিবেদনে তা ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকা দেখানো হয় এবং সেই ভিত্তিতে পুরো অর্থ পরিশোধ করা হয়। এতে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৬ হাজার ১৪৪ টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ হয়, যা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইডিআরএ-কে মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য সরবরাহ, সরকারি মূল্যায়ন প্রতিবেদন উপেক্ষা এবং প্রতারণার অভিযোগও আনা হয়েছে।
শিল্পগোষ্ঠী বেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম আওয়ামী লীগের টিকিটে নোয়াখালী-২ আসন থেকে তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গত ৯ এপ্রিল তাঁকে ঢাকার গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনবেঙ্গল গ্রুপের চেয়ারম্যান মোরশেদ আলম গ্রেপ্তার ০৮ এপ্রিল ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে পানি বৃদ্ধি: ১৮ ইঞ্চি খুলে দেওয়া হয়েছে গেট
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল এবং কাপ্তাই হ্রদ এলাকায় বৃষ্টিপাতের কারণে হ্রদের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কাপ্তাই বাঁধের ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে ১৮ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৩০ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে। এছাড়া বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাধ্যমে আরো ৩২ হাজার কিউসেক পানি নদীতে নিষ্কাশন হচ্ছে।
কাপ্তাই পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান বলেন, “হ্রদের পানি ১০৮ এমএসএল (মিনস সি লেভেল) অতিক্রম করার পর বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ায় সোমবার মধ্যরাত থেকে বাঁধের ১৬টি গেট ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়। এসময় পানির স্তর ছিল ১০৮.০৫ এমএসএল। গেট ৬ ইঞ্চি খোলা রাখার পরও ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার রাত ১১টায় হ্রদে পানির স্তর বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০৮.৫৫ এমএসএল। পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ এমএসএলের একেবারেই কাছাকাছি চলে আসায় ঝুঁকি এড়াতে গেট ৬ ইঞ্চি থেকে বাড়িয়ে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত খুলে দেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “যে পরিমাণ পানি ছাড়া হচ্ছে তাতে জনসাধারণের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে আমরা বলতে পারি, ৩ ফুট পর্যন্ত গেট খুললে বন্যার আশঙ্কা নেই। তবে এর বেশি হলে বন্যার আশঙ্কা থাকে। আমাদের লক্ষ্য থাকবে, যেন তিন ফুটের বেশি খুলতে না হয়।”
ব্যবস্থাপক জানান, বর্তমানে হ্রদের ইনফ্লো ও বৃষ্টিপাত পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। ইনফ্লো বেশি হলে অর্থাৎ পানির লেভেল অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেলে স্পিলওয়ের (জলকপাট) গেট খোলার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে।
ঢাকা/শংকর/এস