কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কমিটি গঠনের নির্দেশ
Published: 5th, May 2025 GMT
আসন্ন ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, পশু আনা-নেওয়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশ দেন।
প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
বৈঠকে ড.
কোরবানির পশু পরিবহন ও হাটে বিক্রির সময় যাতে পশুর প্রতি নির্দয় আচরণ করা না হয়, সেদিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। এ ছাড়া চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে ইটিপির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেন ড. ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হবে। কমিটিতে আরও থাকবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, সড়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী, বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, শিল্প সচিব ওবায়দুর রহমান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং চামড়া ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
রাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনে ইসলামী ছাত্রশিবির–সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে। এতে নারীর নিরাপত্তা, আবাসন, গবেষণা, আধুনিকায়ন, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকারসহ নানা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে লিচুতলায় এ ইশতেহার ঘোষণা করেন প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী মোস্তাকুর রহমান (জাহিদ)। ইশতেহারে সাতটি বিষয়কে ‘হ্যাঁ’ ও সাতটি বিষয়কে ‘না’ হিসেবে উল্লেখ করেছে প্যানেলটি। এ ছাড়া তারা ছাত্র সংসদের মেয়াদের ১২ মাসে ২৪টি সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ইশতেহারে শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ, আবাসনসংকট নিরসন, মানসম্মত খাবার নিশ্চিতকরণ, নিরাপদ ক্যাম্পাস, তথ্যসেবা ও আধুনিকায়ন, সব অংশীজনের মধ্যে সুসম্পর্ক বৃদ্ধি ও সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণকে ‘হ্যাঁ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে ৫০ টাকা হল ফি; হল দখল ও আসন–বাণিজ্য; ট্যাগিং ও ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি; স্লাটশেমিং, সাইবার বুলিং ও শারীরিক নির্যাতন; ধর্মবিদ্বেষ; মাদক ও ছিনতাই এবং সন্ত্রাস ও সহিংসতাকে ইশতেহারে ‘না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেলের দেওয়া ২৪টি সংস্কারের প্রতিশ্রুতি হলো জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করতে রাকসু নির্বাচনকে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্তকরণ, জুলাইয়ের হামলাকারীদের বিচার, জাদুঘর স্থাপন ও ১৬ জুলাইকে ‘সন্ত্রাস প্রতিরোধ দিবস’ ঘোষণা করা; ক্যাম্পাসে মানসম্মত খাবারের নিশ্চয়তা প্রদানে ডাইনিং, ক্যানটিনসহ অন্যান্য জায়গায় স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করা ও মূল্য নির্ধারণ করা।
অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের অধিকার সংরক্ষণে শতভাগ আবাসিকতার রোডম্যাপ ঘোষণা এবং এর আগপর্যন্ত আবাসন ভর্তুকি দেওয়া; শিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বারোপ করতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে গবেষণা বৃত্তি দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধা বাড়ানো; লাইব্রেরি ও রিডিং রুম সম্প্রসারণ ও কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার শীতাতপনিয়ন্ত্রণে আনা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ অন্যান্য আধুনিক সুবিধা নিশ্চিত করা; শিক্ষা কারিকুলাম আন্তর্জাতিকীকরণে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এমওইউ চুক্তি করা ও শিক্ষক বিনিময় প্রথা চালু করা।
প্রশাসনিক কার্যক্রম আধুনিকায়নে একটি অ্যাপের মাধ্যমে সব সুবিধা নিশ্চিত করা এবং টিএসসিসি ও মিলনায়তনের ভাড়া শিক্ষার্থীদের সাধ্যের মধ্যে আনা; চিকিৎসাকেন্দ্রের আধুনিকায়নে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারকে ২০ শয্যাবিশিষ্ট করা এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া; নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–সেবা দেওয়া; ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ও আলোকবাতির ব্যবস্থা করা।
পরিবহনব্যবস্থা উন্নত করতে ক্যাম্পাসের ভেতরে চলাচলকারী গাড়ির নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা এবং বাসের ট্রিপ বাড়ানো; নারী শিক্ষার্থীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে সার্বক্ষণিক হেল্পলাইনের আওতায় আনা, ক্লাস-পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশনে হিজাব-নিকাব ব্যবহারের অধিকার নিশ্চিত করা এবং ‘চাইল্ড ডে–কেয়ার’ স্থাপনসহ বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা; শিক্ষক মূল্যায়নব্যবস্থা চালু করা; তথ্যসেবা নিশ্চিতকরণে একটি অ্যাপ চালু করা এবং শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়ন কোর্স চালু করা; শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন অন ক্যম্পাস জব নিশ্চিত করা; পূর্ণাঙ্গ টিএসসিসি বাস্তবায়ন করা।
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় লিফট, ব্রেইল পদ্ধতি, অডিও বুক, বিশেষ বাথরুম–সুবিধা ও নানা প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা; ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষায় উপাসনালয় ও ধর্মীয় উৎসবে নিরাপত্তা বাড়ানো; সংস্কৃতির বৈচিত্র্য বাড়াতে হামদ, নাত, কাওয়ালি ইসলামি দর্শনভিত্তিক নানা আয়োজন করা এবং এর সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা; স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে উদ্যোগ নেওয়া; ক্রীড়া উন্নয়নে বাজেট বাড়ানো ও ক্রীড়াসংশ্লিষ্ট সুবিধার বৃহৎ সংস্কার করা। সাহিত্য, প্রকাশনা ও সামাজিক সংগঠনের উন্নয়নে বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করা; পরিচ্ছন্ন ও সবুজ ক্যাম্পাসের জন্য প্রকৃতি রক্ষা কমিটির মাধ্যমে উদ্যোগ নেওয়া; অপরাধ দমনে অনলাইন-অফলাইনে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া এবং দলীয় শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা।
ইশতেহার ঘোষণা শেষে প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘এটি আকাশকুসুম কোনো প্রস্তাব নয়। আমরা এ সংস্কার বাস্তবায়ন করব। এ ছাড়া জবাবদিহির জন্য আমরা চার্ট টাঙানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব। সেখানে কোন কাজ কতটুকু হলো, তা উল্লেখ করা থাকবে।’