যশোরের শার্শায় বাগানের পরিপক্ব আম বাজারজাত করা শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বাগুড়ী বেলতলা বাজারে শুরু হয়েছে বেচাকেনা। চাষিরা তাদের বাগানের ফল এনে বিক্রি করছেন। এবার শতাধিক আড়তদার পাইকারদের কাছে আম বিক্রি করবেন।
জানা গেছে, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় চাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার মাধ্যমে মঙ্গলবার থেকে এ কার্যক্রম শুরু হলো। প্রথমদিকে বাজারে গোবিন্দভোগ, গোপালভোগ, বোম্বায়সহ কয়েকটি আগাম জাতের আম এসেছে। আড়তদাররা প্রতিদিন বিভিন্ন জেলার পাইকারদের কাছে এসব আম সরবরাহ করছেন। 
সরেজমিনে দেখা গেছে, বাগুড়ী বেলতলা বাজারে জমজমাট বেচাকেনা চলছে। বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা এসেছেন আড়তে। শুরুতে দাম একটু কম হলেও পরে বাড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আড়তদার আক্তারুল কবির জুয়েল বলেন, এবার আমের ভালো ফলন হয়েছে। কোনো দুর্যোগ না হলে চাষি লাভবান হবেন। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বড় আমের বাজার বাগুড়ী বেলতলা। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ফল বেচাকেনা হয়। 
বাজারের সভাপতি মাহামুদ আলী ও সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মুন্না জানান, এবার শুরুতেই পর্যাপ্ত আম বাজারে এসেছে। পর্যায়ক্রমে আরও ফল বাজারজাত হবে। এ বাজারে পরিবহন ব্যবস্থা সহজ ও সুলভ হওয়ায় ব্যবসায়ীরা বাড়তি সুবিধা পান। 
বাজারে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী বা আড়তদার আমে কেমিক্যাল ব্যবহার করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম রবিউল ইসলাম বলেন, বাজারে চাঁদাবাজদের কোনো ছাড় নেই। চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাগুড়ি বেলতলা বাজারে ব্যবসায়ীর কাছে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগে একজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী নাজিব হাসান বলেন, গত ৪ মে উপজেলার চাষি, আড়তদার ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করা হয়। এর মাধ্যমে বাগুড়ী বেলতলা বাজারে এ মৌসুমের আম বাজারজাত শুরু হয়েছে। কোনো প্রকার অপরিপক্ব আমে কেমিক্যাল ব্যবহার করলে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম ব জ র ব যবস য় ব যবস থ আড়তদ র উপজ ল ব লতল

এছাড়াও পড়ুন:

সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন

স্তূপ করে রাখা ইলিশে ভরে গেছে ঘাট। চারদিকে মাছের গন্ধ, বরফের ঠান্ডা ধোঁয়া, ক্রেতার হাঁকডাক। কেউ দর কষছেন, কেউ আবার টাটকা ইলিশ দেখে ব্যাগভর্তি করে নিচ্ছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরের কর্ণফুলী নদীর তীরে ফিশারিঘাটের নতুন মাছবাজারে গিয়ে দেখা গেল এই ব্যস্ত চিত্র।

নিষেধাজ্ঞার পর বাজার যেন নিজের ছন্দে ফিরেছে। গত ২৫ অক্টোবর সাগরে মাছ ধরার ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। এর পর থেকেই একের পর এক ট্রলার ভিড়ছে ঘাটে—কোনো ট্রলারভর্তি লইট্টা, কোনোটা ছুরি, চিংড়ি, ফাইস্যা বা ইলিশে ভরপুর। ভোর থেকেই আড়তগুলোয় শুরু হয় নিলাম, পরে সেই মাছ চলে যায় শহরের বাজারে। এমনকি জেলার গ্রামীণ হাটবাজারেও পৌঁছে যাচ্ছে ট্রাকভর্তি মাছ।

গতকাল দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, নদীর ঘাট ঘেঁষে ট্রলার। ঘাটে নামছে বরফঠান্ডা মাছের বাক্স। আড়তের সামনে ইলিশের স্তূপ ঘিরে ক্রেতাদের ভিড়। বিক্রেতারা তখন বরফ ছুড়ে দিচ্ছেন মাছের ওপর। ছোট আকারের ইলিশের দাম ক্রেতাদের কেউ হাঁকছেন ১০ হাজার, কেউ ১২ হাজার টাকা—শেষমেশ দর থামছে ১৬ হাজার টাকায়। ওই দরে বিক্রি হলো ১ মণ ছোট আকারের ইলিশ। এক কেজিতে পড়ছে পাঁচ থেকে ছয়টি করে মাছ।

নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম।নুর মোহাম্মদ, আড়তদার

মেসার্স হাজি আবদুল গণি ফিশিংয়ের স্বত্বাধিকারী নুর মোহাম্মদ প্রথম আলোকে জানান, নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর থেকেই জেলেরা সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু বড় আকারের ইলিশ এখনো তেমন ধরা পড়ছে না। ছোট ও মাঝারি ইলিশই বাজারে বেশি আসছে।

ব্যস্ত ঘাট, ব্যস্ত আড়ত

ফিশারিঘাটে এখন সকাল থেকেই যেন উৎসবের আমেজ। ট্রলার ঘাটে ভিড়লেই শুরু হয় কর্মচাঞ্চল্য। আড়তগুলোর সামনেই চলছে বাক্সে মাছ ভরানোর কাজ। আড়তদারেরা জানান, চট্টগ্রামের এই ঘাটে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। নিষেধাজ্ঞার সময় বাজার একটু স্তিমিত থাকে। অন্য সময় লেগে থাকে ব্যস্ততা।

ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া; প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

আড়তদার নুর মোহাম্মদের মতে, নিষেধাজ্ঞার সময় মাছ ধরা বন্ধ থাকায় বাজারে সরবরাহে ঘাটতি ছিল। এখন ধীরে ধীরে সব ঠিক হচ্ছে। তবে গত কয়েক দিন সাগরের নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় অনেক জেলে গভীর সমুদ্রে যেতে পারেননি। ফলে বড় ইলিশ আসছে কম। একই আক্ষেপ করলেন মেসার্স মা মরিয়ম ফিশিংয়ের কর্ণধার ছৈয়দ নুর। তিনি বলেন, বড় আকারের ইলিশ কম আসছে। তবে অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রচুর ধরা পড়ছে। বিক্রিও ভালো।

দরদাম যেমন

ফিশারিঘাটের পাইকার ও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ছোট ইলিশ কেজিতে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার কোনো ইলিশ সাড়ে ৩০০ টাকায়ও পাওয়া যাচ্ছে। বড় আকারের যেগুলো, সেগুলোর দাম একটু চড়া—প্রতি কেজি ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

মাছের ওপর বরফ ছিটানো হচ্ছে। গতকাল দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের ফিশারিঘাট নতুন মাছ বাজারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সামুদ্রিক মাছে ভরপুর আড়ত, দাম কেমন