পাকিস্তানের পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা
Published: 7th, May 2025 GMT
ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর পাকিস্তানের জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হাসপাতালসহ জরুরি সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ শরিফ আজ বুধবার জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে মরিয়ম বলেন, ‘সব চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হচ্ছে এবং বেসামরিক প্রতিরক্ষাকর্মীদের নিজ নিজ দায়িত্বে ফেরত আসতে বলা হচ্ছে।’
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। ইসলামাবাদ বলছে, এসব হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত ও অর্ধশত আহত হয়েছেন। এর জবাবে রাতেই নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।
ভারতের হামলার নিন্দা জানিয়ে মরিয়ম নওয়াজ বলেন, ‘জনগণ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত হয়তো এটা (হামলা) শুরু করেছে, কিন্তু আমরা এটা শেষ করব।’
আরও পড়ুনপাকিস্তানের ৬ স্থানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আকাশ ও স্থলে জবাব ইসলামাবাদের১ ঘণ্টা আগেচলমান পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী জনগণকে ঘরের ভেতর অবস্থান করার ও অকারণে ভ্রমণ না করতে বলেছেন। সেই সঙ্গে তিনি জনগণকে তথ্যের জন্য শুধু আনুষ্ঠানিক ও নির্ভরযোগ্য উৎসের ওপর ভরসা করার অনুরোধ জানিয়েছেন। হতাহতের কোনো খবর পেলে কাছের হাসপাতাল অথবা উদ্ধার পরিষেবা সংস্থায় জানাতে বলেছেন তিনি।
পাকিস্তান শান্তি চায় জানিয়ে মরিয়ম বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, তবে সেটা সম্মানের সঙ্গে। যদি যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়, তবে পুরো দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে একটি শক্তিতে পরিণত হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্মীয় অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে: নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে কেন্দ্র করে নারী বিদ্বেষী প্রচারণা ও বক্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)। জেএনএনপিএফ মনে করে, ধর্মীয় অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সোমবার ফোরামের সভাপতি মমতাজ আরা বেগম এবং সাধারণ সম্পাদক জামিলা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং তাদের প্রস্তাবনা বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নারীর প্রতি অসম্মানজনক, মানহানিকর এবং নারীবিদ্বেষী বক্তব্য ও আচরণে নারী জাতি স্তম্ভিত। এছাড়া, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নারী প্রতিকৃতিতে জুতা দিয়ে পেটানো হচ্ছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম মনে করে, হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা সংঘটিত এ ধরনের ঘটনা নারীর অধিকার আদায়ের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করার বিষয়টি আশ্চর্যজনক। ধর্মীয় অজুহাতে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এছাড়া, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল এবং ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তা অযৌক্তিক। এ বিষয়ে সরকারের নীতি ও অবস্থান স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এর মধ্যে ১০টি কমিশন ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর কতিপয় গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করে আসছে। কমিশনটি নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদসহ সার্বজনীন মানবাধিকারকে বিবেচনায় এনে সরকারের জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু ধর্মীয় অজুহাতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে, যা অযৌক্তিক এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবের প্রকাশ বলে মনে করে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে এবং বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হেফাজতে ইসলামের সকল অসাংবিধানিক দাবি-দাওয়া প্রত্যাখ্যান করে সমতার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম হলো জেলা পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা একটি নেটওয়ার্ক। মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, গ্রীন হিল, ভূমিজ ফাউন্ডেশনসহ ২৬টি সংস্থা এই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত।