জলবায়ু পরিবর্তন বর্তমানে বৈশ্বিকভাবে আলোচিত ও উদ্বেগজনক একটি বিষয়। তবে এর সবচেয়ে ভয়াবহ প্রভাবগুলো পড়ছে উন্নয়নশীল ও ভূ-রাজনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর ওপর, যার অন্যতম উদাহরণ বাংলাদেশ। ভৌগোলিক অবস্থান, ঘনবসতি, দারিদ্র্যতা, দুর্বল অবকাঠামো ও নদীনির্ভর জীবনধারার কারণে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের অন্যতম ভুক্তভোগী।

যদিও বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস (পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইডসহ বিভিন্ন গ্যাসের নিঃসরণ) নির্গমনে বাংলাদেশের অবদান অত্যন্ত সামান্য, তবুও এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে দেশের কোটি কোটি মানুষকে।

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তনের বাস্তবতা
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যা পৃথিবীর বৃহত্তম নদী ব্যবস্থার (গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা) মুখে অবস্থিত। এর পাশাপাশি বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় এলাকা, নিচু ভূ-প্রকৃতি ও ঘনবসতি বাংলাদেশের জলবায়ু সংবেদনশীলতাকে বাড়িয়ে তোলে।

আরো পড়ুন:

যানজটমুক্ত ঢাকার স্বপ্ন: জুলাই থেকে নামছে ইলেকট্রিক বাস

তথ্য এখন জাতীয় নিরাপত্তার কৌশলগত অস্ত্র: পরিবেশ উপদেষ্টা

বিগত কয়েক দশকে দেশের গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, বর্ষার আচরণ বদলেছে, এবং ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়েছে। একদিকে যেমন খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে উত্তরাঞ্চলে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, অন্যদিকে উপকূলে লবণাক্ততা ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে জমি চাষের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

উজান থেকে নেমে আসা ঢলের সাথে পাথর ও কয়লা নদী থেকে আহরণে ব্যস্ত স্থানীয়রা

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশে
১.

উপকূলীয় অঞ্চল হুমকির মুখে
বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী, ভোলা প্রভৃতি উপকূলীয় জেলা জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি শিকার। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি ও ঘন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব এলাকায় লবণাক্ততা ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। মাটির উর্বরতা হ্রাস পাওয়ায় কৃষিজ উৎপাদন কমে যাচ্ছে। অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে স্থানচ্যুত হচ্ছে, যা একটি নতুন সংকট ‘জলবায়ু উদ্বাস্তু’।

২. চাষাবাদ ও খাদ্য নিরাপত্তা
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে কৃষির মৌসুমি স্বাভাবিকতা নষ্ট হচ্ছে। আগে নির্দিষ্ট সময়ে যে বৃষ্টি হতো, এখন তা কখনো অতিরিক্ত, কখনো একেবারেই অনুপস্থিত। আমন ধান, পাট, গম, আলুসহ বহু কৃষিপণ্য উৎপাদনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে, যা দারিদ্র্য ও অপুষ্টি বাড়াতে পারে।

৩. স্বাস্থ্যঝুঁকি বৃদ্ধি
উচ্চ তাপমাত্রা, পানির অভাব এবং দূষণের কারণে বাংলাদেশে ডায়রিয়া, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া ও হিটস্ট্রোকের মতো রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাপদাহ শহরাঞ্চলে ক্রমাগত বাড়ছে, যার প্রভাব বেশি পড়ছে শিশু ও বয়স্কদের ওপর।

৪. প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বৃদ্ধি
ঘূর্ণিঝড় ‘সিডর’ (২০০৭), ‘আইলা’ (২০০৯), ‘আম্পান’ (২০২০) ইত্যাদি ঝড়গুলো প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এখন আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠছে। এই ধরনের দুর্যোগে জীবনহানির পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবহন ও কৃষি ব্যবস্থাও চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

৫. খাদ্যাভ্যাস ও গৃহপালিত গবাদি পশুর ওপর প্রভাব
জলবায়ু পরিবর্তন খাদ্যাভ্যাস ও গবাদি পশুর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বৃষ্টিপাতের পরিবর্তন, এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্য সংকট তৈরি করে। এর ফলে, গবাদি পশুদের স্বাস্থ্য, প্রজনন ক্ষমতা, এবং দুধ উৎপাদনও কমে যায়। একই সাথে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রোগ-বালাই ও পরজীবী সংক্রমণও বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা গবাদি পশুর জীবনযাত্রাকে আরো কঠিন করে তুলেছে।

বাংলাদেশের মূল খাদ্যশস্য ধান আহরণ করছেন কৃষক

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সরকারের উদ্যোগ
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন, জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করা। এছাড়া, উপকূলীয় অঞ্চলে অভিযোজন প্রকল্প গ্রহণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমেও সরকার এই সংকট মোকাবিলায় কাজ করছে। ২০০৯ সালে ‘Bangladesh Climate Change Strategy and Action Plan (BCCSAP)’ তৈরি করা হয়। এর আওতায় বিভিন্ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে যেমন: উপকূলীয় বাঁধ পুনর্নির্মাণ ও উন্নয়ন, সাইক্লোন শেল্টার স্থাপন ও সম্প্রসারণ, লবণাক্ততা সহনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন, পরিবেশবান্ধব সৌরবিদ্যুৎ চালিত সেচ ব্যবস্থা।

‘ক্লাইমেট প্রোসপারিটি প্ল্যান’–এর মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জলবায়ু সহনশীল উন্নয়ন লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের প্রথম দেশ, যারা “Climate Vulnerable Forum” (CVF)-এর সভাপতিত্ব করে বৈশ্বিক জলবায়ু ন্যায়বিচার দাবি করে আসছে।

জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় করণীয়
১. নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রসার
সৌর শক্তি, বায়ু শক্তি, বায়োগ্যাস ইত্যাদির ব্যবহার বাড়িয়ে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। এতে পরিবেশ দূষণ কমবে এবং দীর্ঘমেয়াদে জ্বালানি খাতে স্বনির্ভরতা আসবে।

২. বনায়ন ও পরিবেশ সংরক্ষণ
বনের পরিমাণ বাড়াতে হবে। নদী, খাল, বিল ও জলাশয় সংরক্ষণ করতে হবে। পাহাড় কাটা বন্ধ করতে হবে এবং শহরে সবুজ এলাকা বৃদ্ধির জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।

৩. জনসচেতনতা বৃদ্ধি
স্কুল-কলেজে পরিবেশ শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করতে হবে।

৪. জলবায়ু অভিযোজন প্রযুক্তি প্রসার
লবণসহিষ্ণু ও খরারোধী ফসল উদ্ভাবন, বন্যা সহনশীল গৃহনির্মাণ, এবং পানি সংরক্ষণের আধুনিক ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
৫. আন্তর্জাতিক সহায়তা ও ন্যায়বিচার দাবি
বাংলাদেশের মতো দেশের প্রয়োজনে জলবায়ু তহবিল নিশ্চিত করতে হবে। উন্নত দেশগুলোর উচিত পরিবেশ দূষণের জন্য দায় স্বীকার করে অর্থ ও প্রযুক্তি সহায়তা বৃদ্ধি করা।

তীব্র দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে পদ্মানদীর চরে গা ভাসিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে মহিষের পাল

জলবায়ু পরিবর্তন শুধু একটি পরিবেশগত সংকট নয়, এটি একটি মানবিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটও বটে। বাংলাদেশের মতো জলবায়ু-সংবেদনশীল দেশে এই সংকট মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ও দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। উন্নয়নের নামে প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংস না করে, পরিবেশবান্ধব নীতিমালা গ্রহণ করে এবং আন্তর্জাতিকভাবে জলবায়ু ন্যায়বিচার দাবি করেই টেকসই ভবিষ্যতের পথ তৈরি করা সম্ভব।

পাশাপাশি প্রান্তিক পর্যায়ে দেশের কিছু অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে বেশকিছু আশানুরূপ প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর মধ্যে ভাসমান পদ্ধতিতে চাষাবাদ উল্লেখযোগ্য। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব-নিজ নিজ অবস্থান থেকে পরিবেশ রক্ষা করা এবং জলবায়ু সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া। কারণ এই পৃথিবী কেবল আমাদের নয়, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মেরও।

ঢাকা/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব শ জলব য উপক ল ব যবস থ উপক ল য পর ব শ র ওপর জলব য় জলব য

এছাড়াও পড়ুন:

উড়োজাহাজ খাতে প্রতিযোগিতায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য বিলোপের তাগিদ ইইউ রাষ্ট্রদূতের

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহরে নতুন উড়োজাহাজ যুক্ত করতে যুক্তরাষ্ট্রের উড়োজাহাজ নির্মাতা বোয়িং এবং ইউরোপের এয়ারবাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শেষ দিকে হঠাৎ এয়ারবাসের সঙ্গে আলোচনায় অগ্রগতি হচ্ছিল। আর চলতি বছর পাল্টা শুল্কের দর–কষাকষির ইস্যুতে বোয়িং অন্যতম শর্ত হিসেবে সামনে এসেছে।

এমন এক প্রেক্ষাপটে ঢাকায় এক আলোচনায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার উড়োজাহাজ খাতে ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি সব পক্ষের জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিতের তাগিদ দিয়েছেন। এই খাতে ‘অন্য অংশীদারদের’ তুলনায় ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যাতে কম গুরুত্ব দেওয়া না হয়, সে বিষয়টি বাংলাদেশকে নিশ্চিত করতে বলেছেন।

মঙ্গলবার ঢাকায় ফ্রান্স-জার্মান দূতাবাসে ‘বাংলাদেশের এভিয়েশন গ্রোথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় তিনি এ অভিমত দেন। আলোচনায় মাইকেল মিলার ছাড়াও যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে, জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ এবং এয়ারবাসের কমার্শিয়াল সেলস ডিরেক্টর (চিফ রিপ্রেজেনটেটিভ, বাংলাদেশ) রাফায়েল গোমেজ নয়া অংশ নেন।

ইইউ রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমি এ দেশে এয়ারবাসের উপস্থিতির বিষয়টিকে বিবেচনায় নিতে জোর দিচ্ছি। আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, স্বচ্ছতা এবং বৈষম্যহীনতার দীর্ঘদিনের আশ্বাস পূরণ করে এটিকে যেন বিমানের বহরকে আধুনিকীকরণ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ দেশের উড়োজাহাজ খাতে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিত।’

ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূত জ্যঁ-মার্ক সেরে-শার্লে বলেন, ফ্রান্স ও ইউরোপের উড়োজাহাজ শিল্পের কেন্দ্রে অবস্থান করছে এয়ারবাস। প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও উদ্ভাবনের অনন্য সমন্বয়ই এটিকে বিশ্বজুড়ে উড়োজাহাজ সংস্থাগুলোর এক বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই খাতে বাংলাদেশের বিকাশ পর্বে এয়ারবাস হতে পারে এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। তাঁর মতে, বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধনশীল সংযোগ ও ভৌগোলিক অবস্থান এই দেশকে আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারে। বিমান বাংলাদেশের বহরে এয়ারবাস যুক্ত হলে এর স্থিতিশীলতা ও প্রতিযোগিতার সক্ষমতা আরও বাড়বে।

জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লটজ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বাড়ছে, মধ্যবিত্ত শ্রেণি সম্প্রসারিত হচ্ছে। বিমানের এখন প্রয়োজন আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উড়োজাহাজ, যেখানে এয়ারবাস শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আকাশপথে যোগাযোগের আঞ্চলিক কেন্দ্র হওয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাজ্য সব সময় পাশে থাকবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বাণিজ্যিক যোগ্যতার ভিত্তিতে ইইউর অর্থনৈতিক উদ্যোক্তাদের প্রতিযোগিতার সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার জন্য সমান সুযোগ প্রত্যাশা করি। এর অর্থ হলো বাংলাদেশকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অপারেটরদের অন্যান্য বাণিজ্যিক অংশীদারদের তুলনায় কম সুবিধা দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, বোয়িং ইতিমধ্যে বাংলাদেশে ২৫টি উড়োজাহাজ বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে, আর এয়ারবাস দিয়েছে ১৪টির। এর মধ্যে রয়েছে ১০টি এ৩৫০ ও ৪টি এ৩২০ নিও।

সম্পর্কিত নিবন্ধ