ফ্রি–কিকের সময় কী ভাবেন মেসি? গোল হয় কোন কৌশলে
Published: 21st, June 2025 GMT
লিওনেল মেসির বয়স তখন ১৮ বছর। বার্সেলোনা ফ্রি–কিক পেলে ব্যস্ত হয়ে উঠতেন ডেকো, রোনালদিনিও ও জাভি হার্নান্দেজ। পাশে দাঁড়িয়ে সবই দেখতেন মেসি। বার্সেলোনা ফ্রি–কিক পেলে সেখান থেকে শট নেওয়ার ছাড়পত্র পাননি তখনো।
একটু পরিণত হয়ে ওঠার পর অবশ্য বেশি দেরি হয়নি। তত দিনে অনুশীলনে ফ্রি–কিক নেওয়াও রপ্ত করেছেন। ড্রিবলিং ও গোল করা মেসির স্বভাবজাত হলেও ফ্রি–কিক সহজাত ছিল না। এ জন্য অনুশীলন করে বিদ্যাটি রপ্ত করতে হয়েছে। আর্জেন্টিনা জাতীয় দলে মেসির প্রথম কোচ আলফিও বাসিল ২০০৭ কোপা আমেরিকায় তাঁকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ফ্রি–কিকে বলে আঘাত করার সময় বাঁ পা আরও সামনে এগিয়ে আনা উচিত। তাতে নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বলের গতি আরও বাড়ানো সম্ভব।
আরও পড়ুনরিয়াল মাদ্রিদের অনুশীলনে কেন ড্রোন ব্যবহার করছেন আলোনসো ৬ ঘণ্টা আগেফ্রি–কিক নিয়ে শুরুতে মেসির কৌতূহল ছিল। সে কৌতূহল মেটাতে অনুশীলনে নেমে ফ্রি–কিকের প্রেমে পড়ে যান। এ নিয়ে মেসি নিজে একবার বলেছিলেন, ‘ফ্রি–কিকের জন্য কখনো অনুশীলন করতে অভ্যস্ত ছিলাম না। একদিন একটু চেষ্টা করে দেখার পর বুঝতে পারলাম, এই জায়গায় অনেক উন্নতি করা সম্ভব, যেটা আমি করেছি।’
বার্সার সে সময়ের ফিটনেস কোচ হুয়াঞ্জো ব্রাউ ফ্রি–কিক শিখতে মেসির অনুশীলন প্রসঙ্গে একবার বলেছিলেন, ‘শেষ ফ্রি–কিকটি জালে না পৌঁছানো পর্যন্ত সে অনুশীলন ছেড়ে যেত না।’ এই চেষ্টার ফলেই ধীরে ধীরে মেসি এখন ফ্রি–কিক থেকে শট নেওয়ায় বিশ্বসেরাদের একজন। ২০০৮ সালে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ফ্রি–কিকে প্রথম গোল পাওয়ার পর এখন সেই সংখ্যাটা ৬৮, যার মধ্যে শেষ গোলটি দেখা গেছে পরশু ক্লাব বিশ্বকাপে পোর্তোর বিপক্ষে। চোখধাঁধানো এক গোল!
পোর্তোর বিপক্ষে তখন ১-১ গোলের সমতায় মায়ামি। ৫৪ মিনিটে পাওয়া ফ্রি–কিক থেকে গোল করেন মেসি, আর সে গোলেই ২-১ ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছে মায়ামি। পোর্তো গোলকিপারের থেকে পোস্টের দূরত্ব যেদিকে একটু কম, সেদিক দিয়েই বল জালে পাঠান আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। বলটা বেশ বাঁক নিয়ে বাতাসে ভাসতে ভাসতে আশ্রয় নেয় জালে। শটটি দেখে মনে হতেই পারে, মেসি বুঝি জোরে কিক নেওয়ার চেয়ে বলের গতিপথ নিয়ন্ত্রণেই বেশি জোর দেন। কারণ, বাঁ পায়ের ভেতরের অংশ দিয়ে নেওয়া কিকে বল একদম কম্পাসের মাপে বাঁক নিয়ে জালে ঢুকেছে।
আরও পড়ুনঝড় ও গোলবন্যার রাতে দি মারিয়া যেখানে শীর্ষে৯ ঘণ্টা আগেজয়ের পর সরাসরি ফ্রি–কিক থেকে করা গোল নিয়ে ডিস্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলেন মেসি। জানান, কিক নেওয়ার আগে কল্পনায় বলটির গতিপথ ঠিক করে নিয়েছিলেন। তখন মেসির কাছে জানতে চাওয়া হয়, প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের তৈরি মানবদেয়ালের ওপর দিয়ে না মেরে গোলকিপার যেদিকে দাঁড়িয়ে, সেদিকে মারলেন কেন? মেসির উত্তর, ‘দেয়াল একটু লম্বাদের (খেলোয়াড়) নিয়ে বানানো হয়েছিল।’
বিষয়টি ব্যাখ্যা করে মেসি বলেন, ‘খেয়াল করলাম, গোলকিপার মাঝে একটু দাঁড়িয়েছিল। তার কাছের পোস্টে জায়গা ফাঁকা। সে একটু কাছাকাছি দাঁড়িয়েছিল। মানবদেয়ালের ওপর দিয়ে বল পাঠানো কঠিন ছিল, কারণ, লম্বা খেলোয়াড়েরা দাঁড়িয়েছিল। (গোলকিপারের পাশ দিয়ে) বলটা গেছেও জোরে, একদম ঠিক জায়গা দিয়ে যাওয়ায় আমি ভাগ্যবান।’
ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মেসি ফ্রি–কিক নিতেন না। ক্লারিন জানিয়েছে, ফ্রি–কিকে ভালো করতে ডিয়েগো ম্যারাডোনাসহ অন্যান্যদের পরামর্শ নিয়েছিলেন মেসি। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পোর্তোর বিপক্ষে ফ্রি–কিকে গোল করে ফুটবলের আরেক কিংবদন্তির পাশে বসেছেন মেসি। ব্রাজিলের ‘সাদা পেলে’–খ্যাত জিকো, তাঁরও ফ্রি-কিক থেকে গোলসংখ্যা ৬৮।
বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রি-কিক থেকে সরাসরি গোলে মেসির চেয়ে এগিয়ে আছেন শুধু ব্রাজিলের দুজন—জুনিনিও (৭৭) ও পেলে (৭০)। তবে ক্লারিন আরও একজনের নাম জানিয়েছে, তিনিও ব্রাজিলিয়ান। করিন্থিয়ানস কিংবদন্তি মার্সেলিনিও ক্যারিওকা। উইকিপিডিয়া অনুযায়ী, ব্রাজিল জাতীয় দলে (১৯৯৪-২০০১) চার ম্যাচ খেলা সাবেক এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে ৮০ গোল করেছেন। যদিও ক্লারিনের দাবি, তাঁর গোলসংখ্যা ৭৮।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ টিভিতে যা দেখবেন (৬ আগস্ট ২০২৫)
জিম্বাবুয়েতে ত্রিদেশীয় যুব ওয়ানডে সিরিজে আজ দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
ত্রিদেশীয় যুব ওয়ানডেবাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা
বেলা ১-১৫ মি., ইউটিউব/জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট
ম্যানচেস্টার-সাউদার্ন ব্রেভ
রাত ১১-৩০ মি., সনি স্পোর্টস ৫