পিএসজি ১-২ বায়ার্ন মিউনিখ

মৌসুমের শুরু থেকে প্রথম ১৪ ম্যাচ জিতে ইউরোপিয়ান রেকর্ড গড়েছিল আগেই। পার্ক দে প্রিন্সেসে স্বাগতিক পিএসজিকে ২-১ গোলে হারিয়ে রেকর্ডটি ১৬ ম্যাচে উন্নীত করল বায়ার্ন মিউনিখ। সেটাও দ্বিতীয়ার্ধের পুরো সময়ে ১০ জন নিয়ে! গতবারের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন পিএসজি এই সুযোগ তো কাজে লাগাতে পারেই-নি, উল্টো দেখতে হয়েছে চ্যাম্পিনস লিগে এবারের মৌসুমে প্রথম হার।

বায়ার্নের কলম্বিয়ান লেফট উইঙ্গার লুইজ দিয়াজ পিএসজির এই হারের কারণ। ৪ ও ৩২ মিনিটে দুটি গোল করেন। পিএসজির আশার কারণও আবার এই দিয়াজই। প্রথমার্ধে যোগ করা সময়ের ৭ মিনিটে লাল কার্ড দেখেন  এই কলম্বিয়ান তারকা। তাতে দ্বিতীয়ার্ধের পুরো সময় একজন খেলোয়াড় বেশি নিয়ে খেলার ‘সুবিধা’ পেয়েছে লুইস এনরিকের দল।

কিন্তু ৭৪ মিনিটে হোয়াও নেভেসের লক্ষ্যভেদ ছাড়া আর কোনো গোল পায়নি পিএসজি। পর্তুগিজ এই মিডফিল্ডার বাইসাইকেল কিকে গোলটি করেন।  তার আগে ম্যাচের ৪ মিনিটে ফিরতি বলে নেওয়া শটে বায়ার্নকে প্রথম গোলটি এনে দেন দিয়াজ। তাঁর পরের গোলে পিএসজি সেন্টারব্যাক মারকিনিওসেরও দুর্বলতা ছিল। ব্রাজিল ডিফেন্ডারের কাছ থেকে বল কেড়ে গোল করেন দিয়াজ। এরপর লাল কার্ড দেখেন পিএসজি তারকা আশরাফ হাকিমিকে মারাত্মক ফাউল করে। হাঁটুতে চোট নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়েন মরক্কো তারকা হাকিমি। প্রথমে হলুদ কার্ড দেখালেও পরে ভিএআর দেখে দিয়াজকে লাল কার্ড দেন রেফারি মউরিসিও মারিয়ানি।

অফসাইডের কারণে প্রথমার্ধে পিএসজির ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা ওসমান দেম্বেলের গোলটি বাতিল হয়। চোটের কারণে ২৫ মিনিটেই মাঠ ছাড়েন ফরাসি তারকা।৪ ম্যাচের সবগুলো জিতে মোট ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ পর্বে শীর্ষে বায়ার্ন। সমান ম্যাচে ৯ পয়েন্ট নিয়ে তিনে পিএসজি।

আরও পড়ুনলিভারপুলের আর্জেন্টাইন হেডে ‘ভাঙল’ রিয়ালের কোর্তোয়া-দেয়াল২ ঘণ্টা আগে১২২ বছর আগের স্মৃতি ফেরাল আর্সেনাল:  

স্লাভিয়া প্রাহার মাঠে ৩-০ গোলে জিতেছে আর্সেনাল। প্রথমার্ধের ৩২ মিনিটে বুকায়ো সাকা পেনাল্টি থেকে গোল করেন। বিরতির পর দুটি গোল করেন উইঙ্গার মিকেল মেরিনো। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে এ নিয়ে টানা ১০ ম্যাচ জিতল আর্সেনাল। টানা আট ম্যাচে ক্লিন শিটও ধরে রাখল তারা। সর্বশেষ এমন কিছু দেখা গেছে ১৯০৩ সালে। ৪ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আর্সেনাল।

রাতের অন্যান্য ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদ ৩-০ গোলে হারিয়েছে ইউনিয়নকে। জুভেন্টাস ও স্পোর্টিং লিসবনের মধ্যে ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়। কোপেনহেগেনকে ৪-০ গোলে হারিয়েছে টটেনহাম হটস্পার। পিএসভি-অলিম্পিয়াকোস ম্যাচ ১-১ গোল ড্র হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আর স ন ল গ ল কর ন প এসজ র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায় ঢাবিতে মানবেন্দ্র লারমাকে স্মরণ

সাবেক আইনপ্রণেতা ও বিপ্লবী নেতা মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় এক স্মরণসভায় তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।

স্মরণসভার শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন এম এন লারমার ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক রেজওয়ানা করিম স্নিগ্ধা।

মানবেন্দ্র লারমা গরিব মেহনতি মানুষের নেতা উল্লেখ করে স্মরণসভায় সাংবাদিক সোহরাব হাসান বলেন, ‘তিনি কেবল পাহাড়ি মানুষের নেতা ছিলেন না। বিপ্লবী মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা সমগ্র নিপীড়িত মানুষের কথা বলেছেন। তিনি বাহাত্তরের সংবিধানে আদিবাসী, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের কথা তুলে ধরেছেন। তিনি সে সময় সংসদে দাড়িয়ে দৃঢ় কণ্ঠে প্রতিবাদ করেছিলেন যে তিনি একজন চাকমা, একজন চাকমা কোনো দিন বাঙালি হতে পারেন না।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সদস্য দীপায়ন খীসা বলেন, ‘জুলাই সনদে আজকে আদিবাসী মানুষের কথা বলা নেই। অথচ কেবল মুখে বহুত্ববাদী, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলা হচ্ছে। বিগত সময়ের দলীয় সরকার নাহয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করেনি। কিন্তু গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পাহাড়ি আদিবাসীরা কমপক্ষে দুটি সাম্প্রদায়িক হামলার শিকার হয়েছেন। অন্যদিকে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যাকে রাজনৈতিভাবে সমাধানের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের কথা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো উচ্চারণ করেনি।’

ঐক্য ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ তারেক বলেন, ‘চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থান যে চেতনা নিয়ে শুরু হয়েছিল, আজ সেই চেতনা মৌলবাদী শক্তির কাছে লুট হয়ে গেছে। সত্তরের দশকে নতুন বাংলাদেশে মহান নেতা মানবেন্দ্র লারমা সেই স্বপ্ন দেখছিলেন, যে স্বপ্ন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার, গরিব মেহনতি তথা নিপীড়িত পাহাড়ি আদিবাসীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বুনেছিলেন।’

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, বাহাত্তরের সংবিধানে নিপীড়িত মানুষের অধিকারের কথা বলা হয়নি, নারী-পুরুষের বৈষম্য বিলোপ এবং মেহনতি মানুষের মৌলিক অধিকারের কথা তুলে ধরা হয়নি। সে সময় শোষিত মানুষের বন্ধু মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা তাঁদের হয়ে কথা বলেছেন। তিনি সংবিধান প্রণয়নের সময় শ্রমিক, গরিব ও আদিবাসী নিপীড়িত মানুষের কথা বলেছিলেন।

সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে এ দেশের যত রাজনৈতিক দল আছে, তারা অন্য জনগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করার মতো মানসিকতা এখনো তৈরি করতে পারেনি। ভোটের আগে মুখে বললেও তা বাস্তবে বাস্তবায়ন করে না।’

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল কাফি রতন বলেন, ‘মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা জুম্ম জাতির জন্য ছাত্রজীবন থেকে অধিকারের কথা বলেছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের সংবিধান যখন বাঙালি বলে আদিবাসী মানুষের পরিচয় করে দিতে চেয়েছিল, সেই সময় গণপরিষদে এম এন লারমা প্রতিবাদ করেছিলেন।’

স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন লেখক ও সাংবাদিক এহসান মাহমুদ, সাংবাদিক সাইফুর রহমান, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা ও নারীনেত্রী শিরিন হক। স্মরণসভা শেষে গান, কবিতা পাঠ ও প্রদীপ প্রজ্বালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ